‘ব্যতিক্রম মাসডো’ আয়োজিত ‘মিউজিক ফোর সোল’ এর অন্তর্গত বাউল উৎসব সমাপ্ত হল গতকাল। এই উৎসবে জাপান ও ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের ২৫ জন বাউল অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে অসমের প্রখ্যাত বাউল শিল্পী শর্বাণী বাউল, মহামায়া বাউল, তর্পণ বাউল ও মাধুর্যময়ী বাউল সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
এই অনুষ্ঠানে বাউল গান পরিবেশন করে শ্রোতাদের মন জয় করে নেন সুদূর জাপান থেকে আসা ৫ জন বাউল। তাঁরা হচ্ছেন শোকো নিশিমুরা, কনাকো শিমিজো, মাকি কাজুমি গুরুমা, কাজুমি ফুকাজয়া, ইয়াওই ইয়ামদা বাউল। অনুষ্ঠানে পশ্চিমবংগসহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বাউল গানের শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ভোলা দাস বাউল, রাধেশ্যাম বাউল, সাধন বৈরাগি গুরুজি প্রমুখ ।
২৯, ৩০ , ৩১ মার্চ তিনদিনের বাউল উৎসব সমাপ্ত হল রবিবার।
বাউল গানের আসরে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল কুমার মহন্ত। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অসম সাহিত্যসভা’র সভাপতি ড পরমানন্দ রাজবংশী, জনপ্রিয় গায়ক জুবিন গার্গ, ইণ্ডিয়া ট্যুরিজমের আঞ্চলিক প্রধান শংখশুভ্র দেববর্মণ, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে’র উত্তর পূর্বের প্রধান স্বামী সাধনানন্দজি মহারাজ। তাছাড়া উপস্থিত ছিলেন সুশীল তামুলি, গণেশ তামুলি, রমেন চক্রবর্তি প্রমুখ সম্মানীয় ব্যাক্তিগণ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাউল দর্শন সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন মহামায়া বাউল। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে বাউল সম্প্রদায়ের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ তথ্য। তিনি বলেন, বাউলরা গানের মধ্য দিয়েই ‘মনের মানুষ’ কে খুঁজে বেড়ান। প্রাণের মানুষের মাঝেই ঈশ্বরকে খোঁজেন। তিনি বলেন বাউল গান হচ্ছে প্রেমের গান।
উল্লেখ্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাউল গানের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বহু গান রচনা করেছেন। ‘আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণ; তাই হেরি তায় সকল খানে’ রবীন্দ্র রচিত বাউল প্রভাবিত গান। বাউল শিরোমণি লালন ফকিরের গানের মধ্য দিয়ে বাউল গান বিশ্বে পরিচিতি লাভ করে।
‘ব্যতিক্রম মাসডো’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তাঁরা এই ধরনের কাজ করে যাবেন আগামিতেও । তাঁরা জানান, গত দশ বছরে বাউল রাজা পুর্ণদাস বাউল, কার্তিকদাস বাউলের সঙ্গে অন্যান্য বিখ্যাত সব বাউল শিল্পীদের আমন্ত্রণ করে অসমে সঙ্গিত পরিবেশনের ব্যবস্থা করেছিলেন।