প্রকৃতিকে ভালোবেসে কতই না কবিতা উপহার দিয়েছেন কবি জীবনানন্দ দাশ। প্রকৃতির নানান বৈচিত্রময় দৃশ্যই তুলে ধরতেন কবি জীবনানন্দ। এর মধ্যে তাঁর বিখ্যাত কবিতা হচ্ছে ধানসিঁড়ি নদী নিয়ে লেখা ‘আবার আসিব ফিরে’। সেই নদীটি একসময় সঠিক সংরক্ষণের অভাবে অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়ে। কিন্তু অবশেষে প্রাণ ফিরে পেতে শুরু করেছে নদীটি। ইতিমধ্যে, ধানসিঁড়ির খননকাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বাঘরি ও ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ছত্রকান্দা এলাকায় একসঙ্গে খননের কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ জলসম্পদ উন্নয়ন বোর্ড। ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন থেকে রাজাপুর সদরের বাঘরি পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার এলাকা খনন করা হচ্ছে।
সুদীর্ঘ বছর প্রাণহীন থাকার পর বহুল প্রতীক্ষিত ধানসিঁড়ির খননকাজ শুরু হওয়ায় নদীপাড়ের মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা দিয়েছে। বলতে গেলে, অক্সিজেন ফিরে পেতে চলেছে তারা। ধানসিঁড়ির খননকাজ সম্পূর্ণ হলে, বন্ধ থাকা ঝালকাঠি-রাজাপুর নৌপথের যোগাযোগ আবার শুরু হবে। ফলে খুব সহজে ও সুলভ খরচে জেলা সদর থেকে ব্যবসায়ীরা পণ্য পরিবহণ করতে পারবেন। পাশাপাশি কৃষকদের এক ফসলি জমিগুলো তিন ফসলি জমিতে পরিণত হবে। এর ফলে জেলেদের মাছ ধরার কাজ যেমন সোজা হবে তেমনি স্থানীয় মানুষরাও এই নদী সংস্কারের সুফল ভোগ করতে পারবেন। অপরদিকে, অবশ্যই উজ্জীবিত হয়ে থাকবে চারিদিকের প্রাকৃতিক দৃশ্যও।
উল্লেখ্য, ঝালকাঠির সুগন্ধা, বিশখালী ও গাবখান চ্যানেলের মোহনা থেকে ধানসিঁড়ি নদীর উৎপত্তি। সেখান থেকে সাড়ে ৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রাজাপুর খালে মিশেছে নদীটি। রাজাপুর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে জাঙ্গালিয়া নদী হয়ে আবার বিশখালীতে মিশেছে ধানসিঁড়ির জলপ্রবাহ।
সুদীর্ঘ বছর ধরে ধানসিঁড়ির তলদেশে পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে অস্তিত্ব সংকটে পড়ে জীবনানন্দের অতিপ্রিয় এই নদী।