আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন বাঁচাতে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগে বিশুদ্ধ রক্তের সঞ্চার ও দূষিত রক্তের মানুষদের বিতাড়িত করতে হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর শহরের পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি। এ সময় আওয়ামী লীগে বসন্তের কোকিল, অনুপ্রবেশকারী, দুর্নীতিবাজ, মাদক ব্যবসায়ী, টেন্ডারবাজ, ভূমি দখলদারদের না বলার আহ্বান জানান কাদের। স্বচ্ছ ও ত্যাগী নেতাদের দলের নেতৃত্বে আনার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, সমাজের ক্লিন ইমেজের মানুষদের জন্য আওয়ামী লীগের দরজা খোলা রয়েছে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে জাতীয় ও দলীয় পতাকা এবং পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। বেলা সাড়ে ১১টায় সভা শুরুর অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন, আশপাশের জেলা কমিটির নেতাকর্মীরা ছাড়াও সাধারণ মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে রংপুরের ঐতিহাসিক বিশাল পাবলিক লাইব্রেরির মাঠ।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ৭৫-এ একটি কুচক্রী মহল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যার মাধ্যমে দেশকে আওয়ামী লীগশূন্য করতে চেয়েছিল। কিন্তু ওই কুচক্রী মহলের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি। মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে শেখ হাসিনাকেই তিনি আবার জাতির পিতা রূপে পাঠিয়েছেন। শেখ হাসিনা আজ বিশ্বের সেরা কয়েকজন প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন। কিন্তু তাকে নিয়েও চলছে একের পর এক ষড়যন্ত্র। একাধিকবার তাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু ওই কুচক্রী মহল সফল হতে পারেনি এবং আপনারা সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো দিনও তাদের সে স্বপ্ন পূরণ হবে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যত দিন পাখির কলতন, নদীর গর্জন আর কৃষকের লাঙল থাকবে, তত দিন বঙ্গবন্ধুর নাম পৃথিবীতে থাকবে। তার নাম মুছে ফেলার সাধ্য কারও নেই। তিনি বলেন, সময়ের পরিবর্তনে আমরা অনেককেই হারিয়েছি। শত ঝড়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুর মিছিলেও আমরা এখন জনগণকে সাথে পাই। জনগণই আমাদের শক্তি। ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, একসময় এই রংপুর অন্ধকারে ঢাকা ছিল। মঙ্গা ও দুর্ভিক্ষ ছিল নিত্য সাথি। শেখ হাসিনার সরকার সেই মঙ্গা আর দুর্ভিক্ষকে এখন জাদুঘরে পাঠিয়েছে। তিনি বলেন, সড়কপথের ভোগান্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, টাঙ্গাইল পর্যন্ত ফোর লেনের কাজ শেষ হয়েছে। এখন বগুড়া থেকে রংপুর, রংপুর থেকে বুড়িমারী আর বুড়িমারী থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত আমরা ফোর লেন মহাসড়কের কাজে হাত দিয়েছি।
উত্তরাঞ্চলে কোনো বেকারত্ব থাকবে না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, প্রতিটা গ্রামকে শহরে রূপান্তর করা হবে, এটি শেখ হাসিনার অঙ্গীকার। তিনি বলেন, আমরা অন্ধকারের বৃত্তে অসমসাহসের কান্ডারি। শেখ হাসিনা রংপুরের পুত্রবধূ। তার নেতৃত্বে এবং তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার যে স্বপ্ন, তা এই রংপুরসহ সারা দেশেই বাস্তবায়িত হবেই।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডলের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহমান এমপি, রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি এমপি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মি আহমেদ, বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ আসনের এমপি আবুল কালাম আহসানুল হক ডিউক চৌধুরী, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করীম রাজু, মহানগর সভাপতি সাফিউর রহমান সফি প্রমুখ।