নয়াদিল্লি: তসলিমা নাসরিন দুই বাংলায় ব্রাত্য কিন্তু পাশ্চাত্য দেশগুলোতে তাঁর সমাদর আছে। এবং সে কথা তিনি নিজেই বলেন।
বাংলাদেশের নির্বাসিত কবি ও লেখক তসলিমা নাসরিন গত ১৫ জুলাই নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলায় গিয়েছিলেন। সেদিন ছিল মেলার দ্বিতীয় দিন। বইমেলায় অংশ নেন তসলিমা।
তসলিমা নাসরিনকে কাছে পেয়ে সবাই ভীষণ আনন্দিত এবং তাঁর সঙ্গে ছবি তুলতে এবং কথা বলতে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে যায়। লেখক হাসিমুখে সবার সঙ্গে ছবি তোলেন। ইন্টারভিউ দেন।
মুক্তধারা ফাউন্ডেশন আয়োজিত চার দিনব্যাপী এ বইমেলার পর্দা নামল (১৭ জুলাই)।
বইমেলায় গিয়ে তসলিমা নাসরিন বলেন, আমি ঢাকা ও কলকাতার বইমেলায় যেতে পারি না ৩০ বছর ধরে। অথচ আমি বাংলায় লিখি। কিন্তু আমার বইমেলায় যাওয়ার অধিকার নেই। তবে অন্যান্য ভাষাভাষির বইমেলায় আমি যাই। অনেক সময় উদ্বোধনও করেছি। নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলায় এসে খুব ভালো লাগছে। পুরোনো প্রকাশকদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। অনেক নতুন বই দেখছি।
তিনি বলেন, এই যে বলা হয় আমাকে মেরে ফেলবে, আমার বিরুদ্ধে প্রচুর মানুষ- কই, আমি তো এখানে এসে দেখলাম কত মানুষ এলো, কত মানুষ আমাকে ভালোবাসে, কত মেয়ে এসে বললো তারা আমার বই পড়ে, আমাকে ভালোবাসে- এ বিষয়গুলোই সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে।
তসলিমা ফেসবুকেও লিখেছেন: “নিউইয়র্কে বাংলা বইয়ের মেলা হচ্ছে। আমি আমন্ত্রিত নই। তবু প্রাণের টানে একবার মেলাটি দেখতে গেলাম। যেহেতু শুনেছি নিউইয়র্ক আর বাংলাদেশে কোনও ফারাক নেই, মৌলবাদের চাষ দুই অঞ্চলেই মহাসমারোহে চলছে, তাই আশঙ্কা খানিকটা ছিল।
রুশদির ওপর হামলা তো এই নিউইয়র্কেই হয়েছে। যারা ধর্মের নামে খুন খারাবি করতে দ্বিধা করে না, তাদের সংখ্যাটা ঠিক কত আমার জানা নেই। কিন্তু খুন করতে তো মিছিলের দরকার হয় না, একটি ধর্মান্ধই ব্যাপারটি ঘটিয়ে ফেলতে পারে। বইয়ের স্টলগুলো ঘুরে দেখতে দেখতে আশঙ্কা উবে যায়।
যেন স্বজন বেষ্টিত আমি। অনেকেই শুভেচ্ছা জানাতে এলেন। অনেকেই বললেন, আমার লেখা তাদের শক্তি জোগায়, আমার লেখা তাদের জীবন বদলে দিয়েছে। হিজাব আর বোরখা পরা কয়েকজন মেয়েও আমার জন্য তাঁদের ভালবাসার কথা জানিয়ে গেলেন”।