ঢাকা: বাংলাদেশে (Bangladesh) নিজের মাকে পাঁচ টুকরা করে হত্যা মামলায় ছেলেকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ছেলের পাশাপাশি ওই হত্যায় অংশ নেওয়া সাত আসামিকেও মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত আসামিরা হলঃ নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির (২৯), নিরব (২৬), নুর ইসলাম (৩২), কালাম (৩০), সুমন (৩৩), হামিদ (২৮) ও ইসমাইল (৩০)। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালেতে উপস্থিত ছিল।
রায়ে দণ্ডিত আসামিদের প্রত্যেকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। মামলার বিবরণে বলা হয়-২০২০ সালের ৭ অক্টোবর দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা নোয়াখালির সুবর্ণচর উপজেলার জাহাজমারা গ্রামের একটি ধানখেত থেকে গৃহবধূ নুর জাহানের (৫৮) মাথাসহ দুই টুকরা শরীর উদ্ধার করে পুলিশ।
পরদিন একই খেত থেকে মরদেহের আরও তিন টুকরা শরীর উদ্ধার করা হয়। এ কাণ্ড প্রথমে নিহত মহিলার ছেলে হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।
তদন্তে এক পর্যায়ে সন্দেহভাজন হিসেবে মো. নীরব ও কসাই নুর ইসলাম নামের দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যা মামলার বাদী নিজেই জড়িত বলে তথ্য বেরিয়ে আসে।
এরপর পুলিশ হুমায়ুনকে প্রধান আসামি করে অন্য একটি মামলা করে। মামলা উল্লেখ করা হয়, নিহত নুর জাহানের প্রথম সংসারের ছেলে বেলাল হোসেন ঘটনার বছর খানেক আগে মারা যান।
তার রেখে যাওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে দ্বিতীয় সংসারের ছেলে হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে মায়ের বনিবনা হচ্ছিল না। এর জেরেই মাকে হত্যার পরিকল্পনা করে হুমায়ুন। আর সেই হত্যাকাণ্ডে বন্ধু, প্রতিবেশী ও স্বজনের সহায়তা নেয় হুমায়ুন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ৬ অক্টোবর রাতে ওই নারীকে প্রথমে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে লাশ পাঁচ টুকরা করে প্রতিবেশী পাওনাদারদের ধানখেতে রেখে আসা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মাংস কাটার ধারালো অস্ত্র, বঁটি, একটি কোদাল ও নারীর পরনে থাকা শাড়ি উদ্ধার করে পুলিশ।
এ মামলায় অভিযুক্ত পাঁচ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এছাড়া মোট ২৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রায় ঘোষণা করেন বিচারক।