ঢাকা: বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে দেশের দক্ষিণ জনপদ জেলা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্বাধীন দেশে ১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ ছিল বঙ্গবন্ধুর ৫৩তম জন্মদিন। স্বাধীন বাংলাদেশে তাঁর প্রথম জন্মদিন। এদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ সফরে আসেন।
বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বেগম মুজিব। ইন্দিরা গান্ধী তাঁর প্রথম বাংলাদেশ সফরের জন্য দারুণ একটি দিন বেছে নিয়েছিলেন। সেদিন শ্রীমতী গান্ধী ৫৫ কোটি ভারতবাসীর পক্ষ থেকে ফলমূল ও মিষ্টান্ন উপহার দিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের আয়োজনকে দিয়েছিলেন ভিন্নমাত্রা।
ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন বাংলাদেশের উষ্ণ হৃদয় বন্ধু, স্বজন, বাঙালির কাছের মানুষ। যেমন ভৌগোলিক দিক থেকে তেমনি আত্মিক দিক থেকেও। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি ক্ষমতাসীন ছিলেন।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর এ দেশের প্রথম রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে এসেছিলেন ঢাকায়। বক্তব্য রেখেছিলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, যেখানে আত্মসমর্পণ করেছিল পাকিস্তানের ৯২ লাখ হানাদার বাহিনী।
১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় ইন্দিরা গান্ধীকে বহনকারী ভারতীয় বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজ ‘রাজহংস’ ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানটির গায়ে ভারতের তেরঙ্গার পাশে ছিল বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা।
রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তারা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল এ সময় সশস্ত্র সালাম জানায়। এরপর বঙ্গবন্ধু এবং ১৫ আগস্ট নিহত তার পরিবারের সদস্যদের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
শাসকদল আওয়ামি লিগ সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আবারও বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন সরকারপ্রধান। এরপর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সের ১ নম্বর গেটে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত শিশু দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেন শেখ হাসিনা।
এর আগে সকাল ৭টায় ঢাকার ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্গে ছিলেন ছোটবোন শেখ রেহানা। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা গার্ড অব অনার প্রদান করে।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে কোরআন তেলাওয়াত এবং দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে দেশের অব্যাহত শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করা হয়। এরপর আওয়ামি লিগ সভাপতি হিসেবে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে দ্বিতীয়বার শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা।