ঢাকা: বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজাকে ঘিরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে মৃৎ শিল্পীরা। উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি।
দুর্গোৎসবের প্রধান অনুষঙ্গ হলো দেবী দুর্গার প্রতিমা। পূজা শুরুর আগেই মা দুর্গাকে তুলতে হবে মণ্ডপে। ইতোমধ্যে প্রতিমার কাঠামোর মাটির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এরপর শুরু হবে রং ও সাজসজ্জার কাজ। শারদীয় দুর্গোৎসবে বাংলাদেশে ৩২ হাজার ৪০৭টি পূজামণ্ডপ হবে।
গত বছর পূজামণ্ডপ ছিল ৩২ হাজার ১৬৮টি।প্রতি বছরের ন্যায় এবারও পুরান ঢাকার অলিতে গলিতে পরম যত্নে অস্থায়ী পূজা মন্ডপে সাজানো হচ্ছে। বিশেষ করে শাঁখারী বাজার, লক্ষ্মী বাজার, শ্যামবাজার, তাতি বাজার, কলতা বাজার, মুরগিটোলা, ডালপট্টির মত ছোট বড় সব মহল্লায় পূজা মণ্ডপ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে।
গলিতে কয়েক মিটার পর পর এসব পূজা মণ্ডপ স্থাপনের কাজ চলছে। পূজা মণ্ডবের জন্য তৈরী হচ্ছে প্রতিমা। ফলে প্রতিমা তৈরির কারিগরদের বেড়েছে ব্যস্ততা। অনেক কারিগর রাত দিন কাজ করছেন। তাদের দম ফেলার সময় নেই। এছাড়াও ছোট-বড় বিভিন্ন মণ্ডপে শুরু হয়েছে মঞ্চ, প্যান্ডেল, তোরণ ও প্রতিমা নির্মাণের কাজ।
বর্তমানে বাংলাদেশে দুর্গাপূজাকে ঘিরে চলছে সাজ সাজ রব।তবে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে দুর্গোৎসবে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রতিবছরের মতো এবারও আনসার থাকবে। এ ছাড়া যেখানে পূজা হবে, সেখানে প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক থাকবে।
নিরাপত্তা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকেরা মিলে নিরাপত্তার বিষয়ে কাজ করবে। জরুরি সেবা ৯৯৯ কর্তৃপক্ষকেও বিশেষভাবে কাজ করবে। পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা ও ইন্টারনেট প্রটোকল ক্যামেরা যুক্ত থাকবে।
ক্যামেরাগুলো সংশ্লিষ্ট থানার সঙ্গে সংযোগ থাকবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় কোস্টগার্ড ও সীমান্ত এলাকা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের নজরদারিতে থাকবে, যাতে কোনো ঘটনা ঘটলেই তাৎক্ষণিকভাবে যেতে পারে।
আর পুলিশ সদর দপ্তর মহানগর পুলিশ, জেলা ও উপজেলায় পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থাকবে।সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যাতে গুজব ছড়াতে না পারে, সে জন্য বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে।
ঢাকার শাঁখারিবাজার প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের পূজামণ্ডপের প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী বলাই পাল।
তিনি বলেন, ‘এখনই বছরের সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত সময় পার করছি। পূজার আর মাত্র ১৬ দিন বাকি। তাই দম ফেলার সময়ও নেই। এর মধ্যেই দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরির সব কাজ শেষ করতে হবে।’
কাজ শেষে বিশ্রামের ফাঁকে প্রতিমা শিল্পী পল্টন পাল বলেন, ‘যত কষ্টই করি না কেন, যখন দেবীকে তার স্বরূপে মণ্ডপে বসানো হবে তখন সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে। আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে যখন আমাদের তৈরি প্রতিমাকে সবাই পূজা করে। তখন নিজেকে আমার সফল, সার্থক মনে হয়।’