ওপার বাংলা

Bangladesh-এ তুমব্রু সীমান্তে আতঙ্কে বাসিন্দারা

ঢাকা: বাংলাদেশে (bangladesh) বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে বসবাসকারীরা রয়েছেন আতঙ্কে। গত কয়েক দিন ধরে মিয়ানমার (myanmar) থেকে গোলা ও মর্টার শেল বাংলাদেশ (bangladesh) সীমান্তে এসে পড়ছে।

সীমান্তের ওপার থেকে থেমে থেমে আসছে গোলাগুলির শব্দ। বিস্ফোরণে ঘটছে হতাহতের ঘটনাও। সোমবার আবারও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। মর্টার সেলের মতো ভারী অস্ত্রের গোলার শব্দ ভেসে আসছে।

থেমে থেমে গোলাবর্ষণ অব্যাহত থাকায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তা হুমকিতে পড়েছে সীমান্তের বাসিন্দারা।

এরই মধ্যে প্রশাসন সীমান্তবর্তী এলাকার ৩০০ পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা ও বিজিবি টহল জোরদার করা হয়েছে। বাংলাদেশ (bangladesh) বার বার কড়া প্রতিবাদ সত্ত্বেও থামছে না মিয়ানমারের উসকানিমূলক তৎপরতা।

জানা গেছে, বাংলাদেশ (bangladesh) সীমান্তে মিয়ানমার (myanmar) বাহিনীর ছোড়া গোলা ও মর্টার শেল এসে পড়ছে সীমান্ত এলাকায়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিজিবি টহল জোরদার করেছে সীমান্ত এলাকায়। তবে এরপরও আতঙ্ক কাটছে না বান্দরবানের (bandarban) তুমব্রু সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারীদের মাঝে।

মিয়ানমারের (myanmar) সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির ঘটনায় অনিরাপদ হয়ে উঠছে বান্দরবান (bandarban) নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তবর্তী ঘুমধুম ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম। সীমান্তের ওপার থেকে থেমে থেমে আসছে গোলাগুলির শব্দ। বিস্ফোরণে ঘটছে হতাহতের ঘটনাও।

মিয়ানমার বাহিনীর ছোড়া মর্টার শেল, গুলি বাংলাদেশের সীমানায় এসে পড়ায় স্থানীয়রা আতঙ্কে রয়েছেন। নিরাপদ আশ্রয়ে এলাকা ছেড়েছেন অনেক পরিবার। যারাও থাকছেন ভয়ে বাড়ির বাহিরে যাচ্ছে না। সীমান্ত এলাকার লোকজন ঠিকমতো কাজকর্মও করতে পারছে না।

তবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত অঞ্চলে অস্থিরতার জন্য মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারকে দায়ী করে বিবৃতি দিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী সামরিক গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। মিয়ানমার ভিত্তিক গণমাধ্যম ও রাখাইন ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে আরাকান আর্মির মূল রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড লিগ অফ আরাকান এর প্রকাশ করা বার্মিজ ভাষায় লেখা একটি বিবৃতি প্রচার করা হয়েছে।

গত রোববার মায়ানমারের ওয়েস্টার্ন নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আরাকান আর্মির ঐ বিবৃতিতে বাংলাদেশের বান্দরবানের মর্টারশেলে বিস্ফোরণে নিহত রোহিঙ্গা ইকবালের মৃত্যুতে সমবেদনা জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে এই ঘটনার জন্য মিয়ানমারের সামরিক সরকার নিয়ন্ত্রিত বর্ডার গার্ড পুলিশকে দায়ী করে প্রতিবাদ জানিয়েছে আরাকান আর্মি।

সমগ্র মিয়ানমারে সামারিক জান্তা সরকার দমন নিপীড়ন চালাচ্ছে দাবি করে আরাকান আর্মি জানায় জান্তার এমন আচরণের কারণে দেশটির সীমান্ত অঞ্চলের মানুষের চরম সংকটের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা রোহিঙ্গা অধিকার কর্মী মোহাম্মদ হাবিব বলেন, অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য জান্তা ও আরাকান আর্মি দায়ী। রোহিঙ্গার মৃত্যুতে আরাকান আর্মির দুঃখ প্রকাশ নাটক ছাড়া কিছুই না।

এদিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ লড়াইয়ের কারণে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে গতকাল সকালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবরীজি, পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলামসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এ সময় কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছিল। নিরাপত্তার কারণে এই স্কুলেই পরীক্ষা দিচ্ছে বান্দরবানের ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থীরা।

কেন্দ্রটি পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবরীজি বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রটি ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে কেন্দ্রটি উখিয়ার কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ কেন্দ্রে সব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা দিচ্ছে। একই সঙ্গে সীমান্তের কাছের ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকার ৩০০ পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে প্রশাসন। এর আগে রোববার সকালে সীমান্তের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়িতে উপজেলা পরিষদে প্রশাসনের এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস বলেন, স্থানীয়দের সরিয়ে নেওয়াসহ বৈঠকে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়গুলো জানানো হবে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, ওই বৈঠকে ৩০০ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রশাসন বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে আমাদের জানিয়েছে।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা দিতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। শুক্রবার এপারে মর্টার শেল এসে হতাহতের পর একটু উদ্বেগ থাকলেও পুলিশের পক্ষে প্রশাসনের নিদের্শনা মতে কাজ করার প্রস্তুতি রয়েছে।

অপরদিকে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্তে মিয়ানমারের গোলাগুলির বিষয়ে দেশের সংশ্লিষ্ট সব এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে সরকার। পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ডকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।

এ মুহূর্তে সীমান্তে সেনা মোতায়েন নিয়ে কিছু ভাবছে না সরকার। গত রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব এবং দেশের এজেন্সিগুলোকে নিয়ে বৈঠকের পর বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব তথ্য জানান ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, রোববার একটি উচ্চ পর্যায়ের মিটিং করা হয়েছে।

বাংলাদেশের যত এজেন্সি আছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমরা বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে বলে দিয়েছি, বর্ডারে সজাগ থাকতে। রি-এনফোর্সমেন্ট যেখানে যতটুকু লাগে, করবে। সাগর দিয়ে বা অন্য জায়গা দিয়ে কোনো রোহিঙ্গা যাতে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখার অনুরোধ করেছি। সাংবাদিকরা ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিবের কাছে জানতে চান সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার সীমান্তে সেনা মোতায়েনের কথা ভাবছে কি না। জবাবে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে সরকার ভাবছে না।

তবে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পাহাড় থেকে ছোড়া একটি মর্টার শেল এসে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় পড়ে এক রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু-সহ কয়েকজন রোহিঙ্গার আহত হওয়ার ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এসময় কুটনৈতিক প্রতিবাদপত্রও হস্তান্তর করা হয় রাষ্ট্রদূতের কাছে। গত রোবববার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মো-কে সহ দুজন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব উইংয়ের মহাপরিচালক মো. নাজমুল হুদা রাষ্ট্রদূতকে তলব করেন। দুপুর ১২টা ১০ মিনিটের দিকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ত্যাগ করেন।

তার আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছালে ১৫ থেকে ১৭ মিনিট অপেক্ষা করিয়ে রাষ্ট্রদূতসহ দুজনকে মহাপরিচালক মো. নাজমুল হুদার দপ্তরে ডেকে নেওয়া হয়। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গোলাগুলি চলে।

ওই ঘটনায় রাখাইন রাজ্যের পাহাড় থেকে ছোড়া একটি মর্টার শেল এসে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় পড়ে এক রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু হয়। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। এছাড়া ওই ঘটনায় এক শিশুসহ পাঁচ রোহিঙ্গা আহত হয়েছেন।

তারা এখন হাসপাতালে চিকৎসাধীন রয়েছেন। বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারের বিমান প্রবেশ, বাংলাদেশ সীমান্তের তুমব্রু এলাকায় মিয়ানমার ভূখণ্ডে থেকে ছোড়া একটি গুলি এসে পড়া, মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়া এবং মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা একটি মর্টারশেল বাংলাদেশ সীমান্তে পড়ার ঘটনায় প্রায় মাসখানেকের কম সময়ের মধ্যে ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ৪ বার ডেকে কড়া প্রতিবাদ করেছে ঢাকা।

প্রতিবারই তার হাতে নোট ভার্বাল ধরিয়ে দেওয়া হয়। গত ৯ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার ভূখণ্ডে থেকে ছোড়া একটি গুলি বাংলাদেশ সীমান্তের তুমব্রু এলাকায় এসে পড়ে। এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়ে। তার আগে ২৮ আগস্ট বিকেলের দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা একটি মর্টারশেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় ঘুমধুমের তুমব্রু এলাকায় এসে পড়ে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, মিয়ানমার বেশ কয়েকদিন ধরেই সীমান্তে লাগাতার মর্টার শেল ও গোলা ছুড়ে আসছে। বাংলাদেশের কড়া প্রতিবাদ সত্ত্বেও থামছে না এই উসকানিমূলক তৎপরতা। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। হঠাৎ করে মিয়ানমারের এমন বেপরোয়া আচরণের কারণ পর্যালোচনা করছে সরকার। সীমান্তে মিয়ানমারের তৎপরতা পরিকল্পিত উসকানি।

এর মাধ্যমে তারা পরিস্থিতি ঘোলাটে করে কোনো উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। বিশেষ করে সে দেশ থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে টানাপড়েন চলছে।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরেও অনেকটা গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভূরাজনৈতিক নানা উপাদান। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তেজনা সৃষ্টি করে তারা হয়তো প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনার দুয়ার দীর্ঘমেয়াদে বন্ধ রাখতে চায়। তারা হয়তো নিজ দেশে বিরাজমান সংকট আড়াল করার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে সৃষ্ট উত্তেজনাকে কাজে লাগাতে ইচ্ছুক।

অথবা বাংলাদেশের সঙ্গে স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো শক্তিশালী দেশের ইঙ্গিতেও এমনটি করে থাকতে পারে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, মিয়ানমার তার ঘনিষ্ঠ পরাশক্তি সম্পন্ন দেশের ইন্ধনে দিনের পর দিন বাংলাদেশ সীমান্তে উপর্যুপরী গুলি ও মর্টার শেল ছুড়ছে। তারা ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন আলোচনা ভন্ডুল করতে চায়। প্রত্যাবাসন ঠেকিয়ে তারা উল্টো আরো কিছু রোহিঙ্গাকে এদেশে পাঠানোর সুযোগ খুঁজছে। এ কাজে একাধিক বৈশ্বিক শক্তি তাদের উৎসাহ যোগাচ্ছে এবং রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করে এমন কয়েকটি এনজিও’র সমর্থনও তারা পাচ্ছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ বলেন, বাংলাদেশের সীমান্তে বার-বার গোলা নিক্ষেপের ঘটনাটিকে আন্তর্জাতিক নিয়মনীতির প্রতি মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার যে অশ্রদ্ধাশীল তার বহিঃপ্রকাশ। আন্তর্জাতিক নিয়মনীতির প্রতি মোটেও শ্রদ্ধাশীল নয় মিয়ানমারের জান্তা সরকার।

তারা কূটনৈতিক ভাষা বোঝে না, বা হয়তো বোঝার চেষ্টাও করে না। এমন পরিস্থিতিতে চলমান যে সংকট তারা তৈরি করেছে, সে বিষয়ে বাধা বা প্রতিবাদ করতে গেলে কোন ভাষায় কথা বললে মিয়ানমার শুনবে তা বুঝে সে ভাষাতেই কথা বলতে হবে। এমন ঘটনার পেছনে মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠের মতো দুটি বিষয় এখন অনুমেয়।

প্রথমত মিয়ানমারের ভেতর যে গৃহযুদ্ধ চলছে, তা চলার কারণে সে দেশের অখণ্ডতা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। অর্থাৎ দেশটি ভেঙে যাওয়ার একটি আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এখন সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে যদি বৈরী কোনো দেশের সঙ্গে সংঘাত শুরু করা যায়, তাহলে জনগণের দৃষ্টি সেদিকে দিয়ে অখণ্ডতা রক্ষার লড়াইয়ের দিকে জনমত তৈরি করতে পারে।

দ্বিতীয়ত. এ অঞ্চলে বা বিশ্বে কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। আর তা হয়েছে এ সরকারের ক্রমান্বয়ে উন্নয়ন ও স্বনির্ভরতা অর্জনের মধ্য দিয়ে। এখন এরকম ঘটনা মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়া গেলে আমাদের যে সক্ষমতা তৈরি হয়েছে, তা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ আরো বলেন, এ সমস্যা সমাধানে যারা উসকানি বা ইন্ধন দিয়েছে তাদের কাছেই আমরা সমাধানের খুঁজে যাচ্ছি। তবে যতদিন না তাদের কৌশলগত উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো সমাধান হবে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু কিছু দেশ আমাদের দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধানের পথে হাঁটতে বলেছে।

যদিও সে পথে হেঁটে কোনো ফল আসেনি। তাই তাদের পরামর্শ উদ্দেশ্যমূলক ছিল কিনা-এমন ধারণা তৈরি হচ্ছে। আবার পশ্চিমা দেশগুলো বলেছিল, বহুপক্ষীয়ভাবে বিষয়টিকে সমাধান করতে। যদিও এমনটি করতে হলে বিভিন্ন পরাশক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয় আছে। আমরা দ্বিপক্ষীয় না বহুপক্ষীয় কিভাবে যাব এখন সেটিও একটি প্রশ্ন।

তবে আমি মনে করি দ্বিপক্ষীয় চেষ্টা দিয়ে যেহেতু হয়নি, বহুপক্ষীয়তা দিয়ে আগামী দিনের সমাধানের পথ তৈরি করা সম্ভব হবে।নিরাপত্তা বিশ্লেষক এয়ার কমোডোর (অব.) ইশফাক ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, মিয়ানমার যা করছে বিষয়টি আমাদের জন্য দুঃসংবাদ। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের উচিত হবে ‘ফরোয়ার্ড ডিপ্লয়মেন্টের’।

এ ক্ষেত্রে আমরা সেনাবাহিনীকে সীমান্তের আরো কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারি। সশস্ত্র বাহিনীর যৌথ মহড়াও করা যেতে পারে। এতে তারা বুঝতে পারবে আমরাও প্রস্তুত আছি যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায়। জান্তা সরকারের আগ্রাসী মনোভাব উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে রোহিঙ্গা বিষয়ে আমরা কোনো সহায়তা পাইনি

হাবিবুর রহমান

Recent Posts

বাংলাদেশে হিটস্ট্রোকে উপজেলা মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান প্রার্থীসহ  ৪ মৃত্যু, স্থগিত নির্বাচন

ঢাকা: বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। ইতিমধ্যে অতি গরমের ফলে হিটস্ট্রোকে ৩৭ জন মারা গিয়েছেন।…

4 days ago

বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহে রেললাইন বেঁকে ট্রেন চলাচল বিঘ্ন

ঢাকা: বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহে রেললাইন বেঁকে ট্রেন চলাচল বিঘ্ন ঘটছে। যাকে রেলের ভাষায় বলা হয়…

5 days ago

সাপ্তাহিক রাশিফল

মেষ রাশির জাতক জাতিকাদের জন্য সপ্তাহটি ভালোই হতে চলেছে। অর্থ উপার্জন হবে। সমাজে সম্মান বাড়বে।…

5 days ago

বাংলাদেশে তাপদাহে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুনঈশ্বরদীতে রেললাইনের পাত বেঁকে গেছে

ঢাকা: বাংলাদেশে চলতি বছর সীমাহীন তাপদাহে মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশে সরবোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে…

6 days ago

আপনার আজকের দিনটি

সিংহ: আজকের দিনটি আপনার জন্য নতুন কিছু শেখার দিন হবে। ভাগ্যের দিক থেকে দিনটি ভালোই।…

6 days ago

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

ঢাকা: বাংলাদেশে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আবুল কালাম (২৫)…

7 days ago