ওপার বাংলা

Myanmarর গোলার শব্দে কাঁপছে Bangladesh র সীমান্ত Tumbru- Ukhiya

ঢাকা: মিয়ানমারের (myanmar) গোলার শব্দে কাঁপছে বাংলাদেশের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি তুমব্রু (tumbru) ও কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্ত। আর্টিলারি ও মর্টারশেলের মতো ভারি অস্ত্রের গোলার শব্দে কেঁপে উঠছে সীমান্ত।

থেমে থেমে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে তুমব্রু ও উখিয়া (tumbru- ukhiya) সীমান্ত এলাকায়। বর্তমানে সীমান্তে বসবাসকারীরা আতঙ্কে রয়েছেন। মিয়ানমার (myanmar) সীমান্তে চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ঢাকায় কর্মরত বিদেশি দূতদের অবহিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সীমান্ত এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (bgb) ও গোয়েন্দাসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা সর্তক অবস্থায় রয়েছে।

অপরিচিত কাউকে উখিয়া (ukhiya) ও তুমব্রুসহ (tumbru) আশপাশের এলাকায় যেতে দেওয়া হচ্ছে না, তল্লাশি করা হচ্ছে স্থানীয়দের বহনকরা গাড়িগুলো। জানা গেছে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রুর (tumbru) ও কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের আঞ্জুমান সীমান্তে মর্টারশের মতো ভারি অস্ত্রের গেলার বিকট শব্দে কাঁপছে সীমান্ত।

মিয়ানমার (myanmar) থেকে ছোড়া গুলি ও মর্টারের গোলার আতঙ্কে ব্যাহত হচ্ছে সীমান্তের মানুষের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড। মঙ্গলবার সকাল ৭টার পর মর্টার শেলের মতো ভারী অস্ত্রের গোলার শব্দে কেঁপে ওঠে তুমব্রু (tumbru) ও উখিয়া (ukhiya) সীমান্ত এলাকা।

থেমে থেমে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইনে থেমে থেমে চলছে গোলাগুলি। ছোড়া হচ্ছে আর্টিলারি, মর্টারের গোলা। গোলার বিকট শব্দে কাঁপছে এপারের তুমব্রু ও আঞ্জুমান সীমান্ত এলাকার ঘরবাড়ি ও ভূখণ্ড। থেমে থেমে ছোড়া মর্টার শেল।

গোলার বিকট শব্দে ঘরবাড়ি কাঁপতে থাকে। আধা ঘণ্টা বিরতি পর আবার শুরু হয় গোলাগুলি। গোলা আতঙ্কে ভুগছেন গ্রামের মানুষ। দুই মাস ধরে চলা মিয়ানমারের গোলাগুলিতে এলাকার হাজারো মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপর্যস্ত। সীমান্ত এলাকার চাষাবাদ প্রায় বন্ধ।

ওই এলাকার ৩০০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্তক আবস্থানে সীমান্তের উপর নজরদারি বাড়িয়েছে। কাঁটাতারের বেড়ার ওপাড়ে রাখাইন রাজ্যের তুমব্রুরাইট পাহাড়ে শক্ত অবস্থানে রয়েছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্যরা।

একাধিক সীমান্তচৌকি বাঙ্কার তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষে। সেখান থেকে পূর্বদিকে তাক ছোঁড়া হচ্ছে একের পর এক মর্টারশেল। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ছয়টা। পাহাড়ের ফাঁক গলে আলো পড়তে শুরু করে সীমান্তঘেষা জমিতে।

কৃষক হামিদ হোসাইন তার ধানক্ষেতে নিড়ানি দেওয়া শুরু করেছেন মাত্র। ঠিক তখনই মর্টার শেলের বিকট শব্দে কেঁপে উঠে পুরো তুমব্রু সীমান্ত এলাকা। এভাবেই নাইংক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্ত জুড়ে থেমে থেমে পুরোদিন ছোড়া হয় মর্টার শেল ও আর্টিলারি গোলা।

অপরদিকে, নতুন করে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের আঞ্জুমান সীমান্তে সকাল থেকেই আর্টিলারি ও মর্টারশেলের গোলা ছোড়ার বিকট শব্দে কাঁপছে এপাড়ের পালংখালী এলাকা। সীমান্ত স্থানীয় লোকজন জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে এক মাসের বেশি সময় ধরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘আরাকান আর্মি’র লড়াই চলছে।

ওয়ালিডং ও খ্য মং সেক পাহাড়ে আরাকান আর্মির স্থাপনা ধ্বংস করতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা মর্টার শেল নিক্ষেপ করছেন। ফলে সীমান্তে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। এ ঘটনায় সীমান্তের তিনশত পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কথা রয়েছে।

পালংখালী আঞ্জুমান সীমান্তের বাসিন্দা খালেদা বেগম বলেন, এত দিন পত্রিকায় ও টেলিভিশনে শুনেছি সীমান্তে গোলাগুলি চলছে। মঙ্গলবার সকালে আমাদের আঞ্জুমান সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এই মুহূর্তে আমাদের এলাকার মানুষের মধ্যে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। তবে এ বিষয়ে বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজীব জানান, মঙ্গলবার সকালে উখিয়া সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়ার কথা স্থানীয়রা অবহিত করেছে। এখানে সীমান্তের ৩’শ মিটারের ভেতরে প্রায় ১’শ পরিবার রয়েছে। আমরা তাদের খোঁজ খবর রাখছি। পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গফুর চৌধুরী জানান, বান্দরবানের তুমব্রুর পর এবার আঞ্জুমান পাড়ার সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে তারা যাতে ভয়ে না থাকেন, সেজন্য বোঝানো হচ্ছে। বিষয়টি সীমান্ত বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, মঙ্গলবার সকালে উখিয়া সীমান্তে গোলাগুলি শব্দ পাওয়ার বিষয়টি স্থানীয়রা অবহিত করেছেন।

এখানে সীমান্তের ৩০০ মিটারের ভেতরে প্রায় ১০০ পরিবার রয়েছে। আমরা তাদের খোঁজ-খবর রাখছি। পরিস্থিতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এদিকে সকাল ৮টা থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে আবারও গোলাগুলি চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

এই সীমান্ত এলাকায় প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরেই গোলাগুলি চলছে। এর ফলে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দার চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন। এ ঘটনায় সীমান্তের ৩০০ পরিবারকে অন্যত্রে সরিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছে জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেল ও গোলার আঘাতে শূন্যরেখার একজন রোহিঙ্গা নিহতসহ ছয় জন আহত হয়েছেন।

এর আগে মর্টারশেল ও গোলার ঘটনায় ঢাকাস্থ মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চার বার তলব করা হয় এবং এসব ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এরপরও গোলাগুলি বন্ধ হয়নি। ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, মঙ্গলবারও সীমান্তে গোলাগুলি শব্দ পাওয়া গেছে।

মাঝে মধ্যে মার্টারশেলের শব্দ এপারের স্থলভূমি কেঁপে ওঠে। মনে হচ্ছে মর্টারশেল এখানে পড়ছে। এমন অবস্থায় সীমান্তের বসবাসকারীরা ভয়ভীতির মধ্য রয়েছেন। অপরদিকে, গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে মিশনপ্রধানদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মো. খোরশেদ আলম।

এর আগে সোমবার আসিয়ান দেশগুলোকে ব্রিফ করেছিলেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব। মঙ্গলবারের ব্রিফিংয়ে খোরশেদ আলম বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি ৫ বছর হয়ে গেছে। এ সময় একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমার ফেরত নেয়নি। আমরা ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করছি। কিন্তু আমরা এমন কিছু করিনি যে, মিয়ানমারের গোলা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়বে এবং নিরাপত্তা ব্যাহত করবে। তিনি বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি এ অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে ফেলবে।

কাজেই মিয়ানমার সরকার এবং সেনাবাহিনীকে বিষয়টি বুঝতে হবে। বাংলাদেশের ধৈর্যে এবং মিয়ানমাররে উসকানিতে পা না দেওয়ার জন্য বিদেশি প্রতিনিধিরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, তাদের রাজধানীতে বিষয়গুলো জানাবেন, যাতে করে ভবিষ্যতে কোনও কিছু করণীয় থাকে এবং জাতিসংঘে কিছু করণীয় থাকে।

সে ব্যাপারে আমাদের সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন তারা বলে জানান ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব। খোরশেদ আলম বলেন, আমরা তাদের বলেছি যে, আমরা সাহায্য চাই— যাতে করে মিয়ানমার এ অঞ্চলে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ভবিষ্যতে ফায়দা লুটতে না পারে। আমাদেরকে এই সংঘাতে জড়ানোর যে প্রচেষ্টা— সেটিতে বাংলাদেশ জড়াবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সব স্তরেই মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, যাতে করে মিয়ানমার বুঝতে পারে-একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তাদের জন্যও বিপজ্জনক।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল এসে পড়ে সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ডে। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড কোনারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সেটি বিস্ফোরণে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত মো. ইকবাল (১৭) নামে এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে আরও পাঁচ জন।

এর আগে শুক্রবার বিকালে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে আহত হন উইনু থোয়াইং তঞ্চঙ্গ্যা (২২) নামে এক তরুণ।

হাবিবুর রহমান

Recent Posts

বাংলাদেশে হিটস্ট্রোকে উপজেলা মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান প্রার্থীসহ  ৪ মৃত্যু, স্থগিত নির্বাচন

ঢাকা: বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। ইতিমধ্যে অতি গরমের ফলে হিটস্ট্রোকে ৩৭ জন মারা গিয়েছেন।…

4 days ago

বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহে রেললাইন বেঁকে ট্রেন চলাচল বিঘ্ন

ঢাকা: বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহে রেললাইন বেঁকে ট্রেন চলাচল বিঘ্ন ঘটছে। যাকে রেলের ভাষায় বলা হয়…

5 days ago

সাপ্তাহিক রাশিফল

মেষ রাশির জাতক জাতিকাদের জন্য সপ্তাহটি ভালোই হতে চলেছে। অর্থ উপার্জন হবে। সমাজে সম্মান বাড়বে।…

5 days ago

বাংলাদেশে তাপদাহে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুনঈশ্বরদীতে রেললাইনের পাত বেঁকে গেছে

ঢাকা: বাংলাদেশে চলতি বছর সীমাহীন তাপদাহে মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশে সরবোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে…

6 days ago

আপনার আজকের দিনটি

সিংহ: আজকের দিনটি আপনার জন্য নতুন কিছু শেখার দিন হবে। ভাগ্যের দিক থেকে দিনটি ভালোই।…

6 days ago

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

ঢাকা: বাংলাদেশে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আবুল কালাম (২৫)…

7 days ago