কথায় আছে, ইতিহাসকে পাথেয় করে জীবনে এগিয়ে যেতে হয়। জীবনের প্রত্যেকটি পদক্ষেপে একটি ইতিহাস আবশ্যক। ইতিহাস না জানলে আমাদের জীবনের গন্তব্য সঠিক হতে পারে না।
কিন্তু সেই ইতিহাসই যদি সংরক্ষণের অবহেলার শিকার হয়ে দাঁড়ায়। তাহলে নবপ্রজন্মের জন্য থাকবে কী?
হ্যাঁ, এমনই প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে এখন।
আগামী ১১ জৈষ্ঠ্য অর্থাৎ ২৬ মে বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মদিন। কবির জন্মদিন পালন করতে ইতিমধ্যে এপার-ওপার বাংলায় বেশ প্রস্তুতি চলছে।
কবি নজরুলের জন্ম এপার বাংলার কলকাতার চুরুলিয়ায় হলেও ওপার বাংলার সঙ্গে এক গভীর সম্পর্ক ছিল। তিনি ১৯২১ সালের এপ্রিল থেকে ১৯২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ দফায় ১১ মাস কুমিল্লায় ছিলেন। এই সময়ে তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন। এখানকার বিভিন্ন বাড়িতে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে আড্ডা দিতেন। সংগীতচর্চা ও কবিতা আবৃত্তি করতেন। গান ও কবিতা লিখতেন। তিনি বিয়েও করেন কুমিল্লায়।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম কুমিল্লা শহরের ঝাউতলা, ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শাখার পূর্ব-দক্ষিণ কোণে, নজরুল অ্যাভিনিউ, ফরিদা বিদ্যায়তন, দারোগাবাড়ি, ঝানু মিয়ার বাড়ি, শচীন দেব বর্মণের বাড়ি, বসন্ত স্মৃতি পাঠাগার, প্রমীলার বাড়ি ও কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দৌলতপুরে বসে সংগীত চর্চা করেছেন। কাব্য রচনা করেছেন।
কবির স্মৃতি রক্ষার জন্য ১৯৮৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের নজরুল স্মৃতিরক্ষা পরিষদের উদ্যোগে তাঁর স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লার এসব স্থানে স্মৃতিফলক বসানো হয়।
কিন্তু কবির সেই স্মৃতিফলকগুলো আজ মুছে গেছে। কয়েকটি ভেঙে গেছে। আবার কয়েকটি সংরক্ষিত আছে। তবে বেশির ভাগই অযত্ন-অবহেলায় রয়েছে। ২০১৭ সালে নজরুল অ্যাভিনিউ এলাকার একটি ফলক ট্রাক চাপা দিয়ে ভেঙে ফেলে।
কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিন পালনে ব্যাপক প্রস্তুতি নিলেও আদৌ কী অযত্নের শিকার সেই স্মৃতিবিজড়িত ফলকগুলো সংরক্ষণের জন্য এগিয়ে আসবে কেউ? প্রশ্ন অনেকেরই!