ঢাকা: আজ মহান এক দিন। একুশে ফেব্রুয়ারির দিন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। যাঁদের তাজা রক্তের বিনিময়ে বাঙালির ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, সেই সকল শহীদের প্রতি কৃতজ্ঞচিত্তে শ্রদ্ধাবনত জাতি।
অমর একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বাসস এই বিষয়ে জানিয়েছে, ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টা বাজার ৬ মিনিট আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে পৌঁছান। কিছুক্ষণ পর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছান।
অমর একুশের ঐতিহাসিক অমর গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি… আমি কি ভুলিতে পারি’ গানটি বাজানোর সময় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদির দিকে এগিয়ে যান।
রাষ্ট্রপতি প্রথমে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। রাষ্ট্রপতির পরপরই প্রধানমন্ত্রী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।একুশের ভাষাশহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুসময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তাঁরা।
তবে ভাষাকে ভালোবাসতে হবে আন্তরিকভাবে। লোকদেখানো ভালোবাসা নয়। বাংলা ভাষা রক্ষায় আমাদের সকলের এগিয়ে আসতে হবে।
ত্যাগ ছাড়া; আত্মবলিদান ছাড়া স্বাধীনতা আসে না।শহীদের আত্মত্যাগ, রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের প্রিয় মাতৃভাষা ‘বাংলা’।
১৯৫২-এর ভাষা শহীদদের পবিত্র রক্তস্রোতের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের গৌরবগাঁথা।’৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারিতে বাংলার ছাত্রসমাজ আত্মদান দিয়ে মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল।
লাল তাজা রক্তে রাঙা অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি রক্তের প্লাবনের মধ্য দিয়ে আজ সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস গৌরবময় আসনে আসীন।
শুধু বাঙালি নয়, বিশ্বের প্রতিটি জাতির মাতৃভাষার মর্যাদা, স্বাধিকার, স্বাধীনতা আর মানুষের মতো বাঁচার দাবির সংগ্রামের দুর্জয় অনুপ্রেরণা সৃষ্টির চির অনির্বাণ শিখার দীপ্তিতে দিগন্ত উদ্ভাসিত করেছে পবিত্র ২১শে ফেব্রুয়ারি।
‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ বাঙালিকে শিখিয়েছে আত্মত্যাগের মন্ত্র, বাঙালিকে করেছে মহীয়ান। মহান ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই এসেছে স্বাধীনতার চেতনা।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি।
মায়ের ভাষাকে রক্ষা করার জন্যে রাজপথে আন্দোলন হয়।
পাকিস্তানি সরকারি বাহিনীর গুলিতে নিজের তাজা প্রাণ বলিদান দেয় বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা।
সালাম-বরকত-রফিক-শফিক-জব্বার আরও কত নাম না-জানা শহীদের আত্মত্যাগে আমরা ফিরে পেয়েছি আমাদের প্রাণের বাংলা ভাষা।
জাতিসংঘের স্বীকৃতির ফলে একুশে ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে সারা বিশ্বে।