‘আমি বাংলায় কথা বলতে পারি। হাঁটতেও পারি। আমার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে মানুষের উপকার করতে চাই’। না এটি কোন ভিনদেশির উক্তি নয়। এই বক্তব্য স্বয়ং রোবট লি’র।
বাংলাদেশের পাঁচ শিক্ষার্থী দীর্ঘ তিন বছরের প্রচেষ্টায় আবিষ্কার করলেন হিউম্যানোয়েড রোবট। যে কিনা বাংলায় শুধু কথাই নয়, কবিতা আবৃত্তিও করতে পারে, চোখের পলক ফেলে, করমর্দন করে, এমনকি মুক্তি যুদ্ধবিষয়ক প্রশ্নেরও উত্তর করতে পারে ‘লি’।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে ওঠে ‘লি’। এর নেতৃত্বে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নওশাদ সজীব। দলের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের মেহেদী হাসান, ইলেক্ট্রিকেল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাইফুল ইসলাম, মেকানিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সামিউল ইসলাম এবং জিনিয়া সুলতানা। এছাড়া তাঁদের সকল সময়ই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ফ্রাইডে ল্যাবের প্রধান উপদেষ্টা জনপ্রিয় কল্পবিজ্ঞান লেখক অধ্যাপক ড৹ মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
বাংলা বর্ণ মালা থেকে হারিয়ে যাওয়া ‘৯’ এর মতো দেখতে স্বরবর্ণ ‘লি’কে বাঁচিয়ে রাখতেই রোবটের এই নামকরণ করা হয়েছে। ৩০ কেজি ওজনের লি’র উচ্চতা ৪ ফুট ১ ইঞ্চি। লি’কে তৈরি করতে মোট ব্যয় হয়েছে ১০ লাখ টাকা।
মেহেদী হাসান, যিনি লি’র নকশা তৈরি করেছেন, তিনি জানিয়েছেন, লি’কে তৈরি করার জন্যে ব্যবহার করে হয়েছে অ্যালুমিনিয়াম। তিনি আরো জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আই সি টি ভবনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে লি’কে বানানো হয়েছে।
লি’র উদ্ভাবক নওশাদ সজীব বলেছেন, লি–কে প্রশ্ন করা হলে প্রথমে গুগল এপি আইয়ের সাহায্যে গুগল ভয়েস রিকগনাইজেশন দিয়ে সেই প্রশ্নটিকে টেক্সটে রুপান্তরিত করে নেওয়া হয়। এরপর আর্টিফিশিয়েল ইন্টেলিজেন্স প্রোগ্রাম মডিউল টেক্সটির অর্থ বুঝে নিয়ে উত্তর তৈরি করে। টেক্ট টু স্পিচের মাধ্যমে ‘লি’ উত্তর দেয়।
লি’কে কথা বলানোর কাজটি সম্পন্ন করেছেন পাঁচ সদস্য দলের একমাত্র নারী সদস্য জিনিয়া সুলতানা।