ঢাকা: বাংলাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে মহান বিজয় দিবস। রক্তস্নাত পথ ধরে বাংলাদেশের জন্ম লাভের দিন ছিল ২৬ মার্চ মঙ্গলবার। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পাকিস্তানিদের অত্যাচার-নিপীড়নে সম্পর্ক ছিন্ন করে নতুন মানচিত্রে পৃথিবীর বুকে জায়গা করে নিতে স্বাধীনতা পাওয়ার দিন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস।
১৯৭১ এর ২৫ মার্চের কালোরাতের বিভীষিকার পর পূর্ব বাংলার মানুষের রক্তে যে স্বাধীনতার উন্মাদনা ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাই ছিল তার পরিণতি। আর স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা উৎসরিত জনযুদ্ধের গন্তব্য ছিল বিজয়, তাও বহু ত্যাগ ও রক্তের পথ পেরিয়ে ৯ মাস পর ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়।
পাকিস্তানি শাসকদের নিপীড়ন এবং বঞ্চনার বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানিদের প্রতিবাদের এক পর্যায়ে ১৯৭০ সালে সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয় দেশটির সরকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠনের অধিকার অর্জন করে, কিন্তু পাকিস্তানের সামরিক সরকার ক্ষমতা পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের হাতে ছেড়ে দিতে রাজি ছিল না।
১৯৭১ সালের ৩ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের অধিবেশনের তারিখ নির্ধারিত হয়। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ কোনো কারণ ছাড়াই ৩ তারিখের নির্ধারিত অধিবেশন বাতিল করেন ইয়াহিয়া। এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়লো। ২ মার্চ থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন শেখ মুজিবুর রহমান।
এরপর ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু, পাকিস্তানিদের কাছ থেকে পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্তি যে সময়ের ব্যাপার মাত্র তা সেদিনই বোঝা গিয়েছিল।
ক্ষমতা হস্তান্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের মধ্যে কয়েক দফা আলোচনা হলেও তার ফলপ্রসূ হয়নি। এরই মধ্যে প্রতিদিন পাকিস্তানি বিমান সৈন্য ও রসদ নিয়ে করাচী-কলম্বো-ঢাকা আসতে থাকে। কয়েকটি জাহাজ অস্ত্রশস্ত্র বোঝাই হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করে ওই সময়।
শেষে সুপরিকল্পিতভাবে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ মধ্যরাতে গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। স্বাধীনতা পিপাসু মানুষকে স্তব্ধ করে দিতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে নিরস্ত্র হাজার হাজার মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং শেষ শত্রু বিদায় না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন ২৫ মার্চ এবারই প্রথম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সেই বর্বরোচিত হামলার বিয়োগান্তক ঘটনার স্মরণে ‘জাতীয় গণহত্যা দিবস’ পালন করেছে জাতি। গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা চলমান রয়েছে বলে সোমবার জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
স্বাধীনতা পেলেও দেশে এখনও আসেনি কাঙ্খিত অর্থনৈতিক মুক্তি। স্বাধীনতার দিনে স্মৃতি সৌধে দাঁড়িয়ে মানুষ অনেক ত্যাগে পাওয়া স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার প্রত্যয়ে শাণিত হচ্ছে আবার।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সফররত ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক মঙ্গলবার সকালে ঢাকার উপকণ্ঠে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।৫৪ তম ‘স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪’ উদযাপনের অংশ হিসেবে, রাষ্ট্রপতি প্রথমে ৫টা ৫৭ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী এবং ভুটানের রাজা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ৫৪ তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আমন্ত্রণে ভুটানের রাজা এখন চার দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন।
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভুটানই প্রথম বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। দীর্ঘ ১১ বছর পর ওয়াংচুক তাঁর পত্মীসহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছেন। এর আগে ২০১৩ সালে রাজাও রাণী বাংলাদেশ সফর করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং ভুটানের রাজা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল এই সময় রাষ্ট্রীয় সালাম জানায় এবং বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। রাষ্ট্র প্রধান, সরকার প্রধান এবং ভুটানের রাজাও স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে রাখা দর্শনার্থী বইতে স্বাক্ষর করেন।
পরে দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তাঁর দলের পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
এই সময় জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা, কূটনীতিক, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি এবং পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার ও প্রধান বিচারপতিও মহান জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
ঢাকা: বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। ইতিমধ্যে অতি গরমের ফলে হিটস্ট্রোকে ৩৭ জন মারা গিয়েছেন।…
ঢাকা: বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহে রেললাইন বেঁকে ট্রেন চলাচল বিঘ্ন ঘটছে। যাকে রেলের ভাষায় বলা হয়…
মেষ রাশির জাতক জাতিকাদের জন্য সপ্তাহটি ভালোই হতে চলেছে। অর্থ উপার্জন হবে। সমাজে সম্মান বাড়বে।…
ঢাকা: বাংলাদেশে চলতি বছর সীমাহীন তাপদাহে মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশে সরবোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে…
সিংহ: আজকের দিনটি আপনার জন্য নতুন কিছু শেখার দিন হবে। ভাগ্যের দিক থেকে দিনটি ভালোই।…
ঢাকা: বাংলাদেশে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আবুল কালাম (২৫)…