কলকাতা: টাঙ্গাইল শাড়ির জি আই ট্যাগ নিয়ে কয়দিন টানাটানি চলল। অবশেষে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী তাঁতের শাড়িকে (টাঙ্গাইল শাড়ি) ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ শিল্প মন্ত্রণালয়।
বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল বাসার মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
উল্লেখযোগ্য যে, গত ২ জানুয়ারি বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়িকে নিজেদের ‘জিআই পণ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ভারত।
এই নিয়ে তসলিমা নাসরিন ও মুখ খুলেছিলেন।
লেখেন, “শাড়ি পরা তো প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে দু’দেশেই, তাহলে শাড়ির মালিকানা নিয়ে কী লাভ কার? আমি খুব চাই মেয়েরা শাড়ি পরুক, ভালবেসে পরুক। টাঙ্গাইল শাড়ি দু’দেশেই পাওয়া যায়। একই কোয়ালিটির, একই স্টাইলের। স্বত্ব নিয়ে যখন লড়াই চলছে, অনেকে হয়তো নামটা প্রথম জানবে শাড়ির।
শাড়ি কেমন দেখতে চাইবে, পরতে কেমন তাও জানতে চাইবে। এভাবে আগ্রহ বাড়ুক। টাঙ্গাইল নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই। টাঙ্গাইলকে কেউ ধরে বেঁধে কোথাও নিয়ে যায়নি।
টাঙ্গাইল শাড়ি টাঙ্গাইলেরই থাকবে। ভারত সেই স্বত্ব ভুল করে পেলে ভারতকে তা ফিরিয়ে দিতে হবে। তবে এটাও ঠিক, কাঁটাতার পেরিয়ে টাঙ্গাইলের যে তাঁতিরা এপারে অর্থাৎ ভারতে আসতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁরাও বুকের ভেতর তাঁদের জন্মের ভূমি টাঙ্গাইলকে লালন করেন, তাঁদেরও স্বত্ব পাওয়ার অধিকার আছে। সেক্ষেত্রে অন্য কোনও নামে টাঙ্গাইল শাড়ির স্বত্ব তাঁরা পেতে পারেন, যেমন আদি টাঙ্গাইল শাড়ি বা নিউ টাঙ্গাইল শাড়ি বা বসাক টাঙ্গাইল শাড়ি ।
এই নামের মধ্যে রয়ে যাবে দেশ ভাগের আর সাম্প্রদায়িকতার ইতিহাস। বাংলাদেশের কিন্তু টাঙ্গাইল শাড়ির স্বত্ব আমার আমার বলে চেঁচালে চলবে না, টাঙ্গাইলে যে তাঁতিরা শাড়ি বানাচ্ছেন, তাঁরা যেন টাঙ্গাইলে নিরাপদে বাস করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করতে হবে। যে বসাকরা টাঙ্গাইল শাড়ি তৈরি করছেন, তাঁরা যেন তল্পি তল্পা গুটিয়ে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য না হন। যেন সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ঘটনা আর না ঘটে”।