ঢাকা: সোমালিয়ায় দস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ এবং নাবিকদের যেকোনো মূল্যে সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে ফেরত আনতে ঢাকা বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে এরইমধ্যে যোগাযোগ হয়েছে। আমরা সহযোগিতা চেয়েছি। ঢাকায় সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রকে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
এর আগে ৩০ জানুয়ারি ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্যরা সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে ইরানের একটি মাছ ধরার ট্রলার ও সেখানে থাকা১৯ পাকিস্তানিকে উদ্ধার করে।
ইরানের পতাকাবাহী আল-নাইমি ও সেই ট্রলারে থাকা ১৯ পাকিস্তানিকে উদ্ধার করে ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ আইএনএস সুমিত্রা। সোমালিয়ার ১১ জন জলদস্যু ট্রলার ও সেখানে থাকা ক্রুদের জিম্মি করেছিল।
ভারতীয় নৌবাহিনী এ ঘটনার কিছু ছবি প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, ট্রলারে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে আছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ট্রলারটির ওপর উড়ছে। আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, জলদস্যুরা হাঁটু গেড়ে বসে আছে।
তাদের পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্যরা। ভারতের কেরালা রাজ্যের উপকূলীয় শহর কোচি থেকে দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে এই ঘটনা। এ ঘটনার প্রায় ৩৬ ঘণ্টা আগে ভারতের নৌবাহিনী ইরানের পতাকাবাহী আরও একটি মাছ ধরার ট্রলার ও সেখানে থাকা ১৭ ক্রুকে উদ্ধার করেছিল।
সেটিও ছিনতাই করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এর তিন দিন আগে সোমলিয়ার রাজধানী মোগাদিসু উপকূলের দেড় হাজার কিলোমিটার দূর থেকে ট্রলারটি ছিনতাই হয়েছিল। আরব সাগর ও এডেন উপসাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে নিরাপত্তা দিতে গত ২৬ ডিসেম্বর এই দুই সাগরে কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ পাঠায় ভারত।
আইএনএস সুমিত্রা সেই বহরেরই একটি জাহাজ। এডেন সাগর এবং সোমালিয়ার উপকূলে জাহাজটি টহল দিয়ে বেড়ায়।
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা বিদেশ মন্ত্রক, নৌ বাহিনীসহ সবার সঙ্গে কথা বলেছি, সহযোগিতা চেয়েছি। খালিদ মাহমুদ বলেন, আমাদের যে ২৩ জন নাবিক আছেন তাদের জীবনের নিরাপত্তার আমাদের কাছে ফাস্ট প্রায়োরিটি। তিনি বলেন, নাবিকরা নিরাপদে ও সুস্থ আছেন। তাদের হত্যার হুমকি বিষয়ে আমাদের কাছে তথ্য নেই জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেকোনো মূল্যে নাবিকদের সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে ফেরত আনতে আমরা বদ্ধ পরিকর।
প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, তাদের নিরাপদে ফেরত আনতে, যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। নাবিকদের ছাড়তে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার চেয়েছে জলদস্যুরা নাবিকদের ছাড়তে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার চেয়েছে।
এ জাহাজটি কয়লা নিয়ে মোজাম্বিক থেকে দুবাই যাচ্ছিল। পথিমধ্যে গালফ অব ইডেনে জাহাজটিতে হামলা চালিয়ে নিয়ন্ত্রণ নেয় দস্যুরা।
২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর। ইন্দোনেশিয়া থেকে সবে মাত্র যাত্রা করেছিল বাংলাদেশের এমভি জাহান মনি। যাত্রা শুরু করে জাহাজটি সিঙ্গাপুর বন্দরে যাত্রাবিরতি করে। গন্তব্যস্থল ছিল গ্রিস। ৫ ডিসেম্বর আরব সাগরে ছিনতাই হয় জাহাজটি।
প্রায় ১০০ দিন জিম্মি থাকার পর এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন এমভি জাহান মনি জাহাজটি উদ্ধার করা হয়। স্যুটকেস দুটি একশ ডলারের নোটের বান্ডিলে পূর্ণ ছিল। তাদের মুক্তিপণের জন্য ৪.৬২ মিলিয়ন ডলার এবং জ্বালানির খরচ বাবদ ১ লাখ ডলার বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল।১৩ মার্চ ভোরে প্রায় ১০০ দিন জলদস্যুদের আস্তানায় বন্দি থাকার পর জাহাজের নাবিকেরা মুক্তি পায়।