ঢাকা: ক্রমান্বয়ে ভারতের (India) বৃহৎ রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ (bangladesh)। বাংলাদেশের (bangladesh) রেলমন্ত্রক নূরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে সম্প্রতি তার কার্যালয়ে দেখা করেন ঢাকায় (dhaka) নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী ;(Indian High Commissioner in Dhaka Vikram Doraiswamy).
সেখানে ভারতের পক্ষ থেকে ঢাকা থেকে দর্শনা হয়ে কলকাতা পর্যন্ত আরেকটি ট্রেন চালু করার প্রস্তাব দেন ভারতীয় হাইকমিশনার। বাংলাদেশ (bangladesh) প্রস্তাবটিকে ইতিবাচক হিসেবেই নিয়েছে।
এছাড়াও গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে (bangladesh) দুইটি রেল লাইন নির্মাণে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের খুলনা-দর্শনা জংশন সেকশনের মধ্যে ডাবল লাইন রেল ট্র্যাক নির্মাণ এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের পার্বতীপুর- কাউনিয়া সেকশনে মিটারগেজ লাইনকে ডুয়েল গেজ লাইনে রূপান্তর-প্রকল্পের কনসাল্টেন্সি সার্ভিসের জন্য চুক্তি সই অনুষ্ঠিত হয়।
উভয় প্রকল্পই ভারত (india) সরকারের দ্বিতীয় লাইন অব ক্রেডিটের অধীনে বাংলাদেশ (Bangladesh) সরকারকে দেওয়া দুই বিলিয়ন ডলার রেয়াতি ঋণের সহায়তায় সূচিত হতে যাচ্ছে। ভারত সরকারের লাইন অব ক্রেডিট পোর্টফোলিওর প্রায় এক-চতুর্থাংশ নিয়ে বাংলাদেশ (Bangladesh) বর্তমানে ভারতের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার।
প্রায় ৫৩ বছর বন্ধ থাকার পর ২০০৮ সালের এপ্রিলে ঢাকা-কলকাতার মধ্যে মৈত্রী এক্সপ্রেস চালুর মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের বিচ্ছিন্ন রেল সংযোগ চালু করে বাংলাদেশ ও ভারত।
এরপর এ পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশের (india-bangladesh) মধ্যে খুলনা-কলকাতা রুটে মিতালী এক্সপ্রেস ও ঢাকা-জলপাইগুড়ি রুটে বন্ধন এক্সপ্রেস চালু হয়েছে যাত্রীবাহী আরো দুটি ট্রেন। ভারতের প্রস্তাব অনুযায়ী ঢাকা-দর্শনা-কলকাতা রুটে আরেকটি ট্রেন চালু হলে বাংলাদেশ-ভারতের (Bangladesh-india) মধ্যে চলাচলকারী যাত্রীবাহী ট্রেনের সংখ্যা দাঁড়াবে চারটিতে।
দ্বিপক্ষীয় কানেক্টিভিটি শক্তিশালী করতে সড়কের পাশাপাশি এখন রেলপথেও জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত। এজন্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের ভিত্তিতে আন্তঃসীমান্ত রেল সংযোগ শক্তিশালী করার পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশের (India-bangladesh) মধ্যে চলাচলকারী ট্রেনের সংখ্যা আরো বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছেন দুই দেশের রেল খাতের নীতিনির্ধারকরা।
দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশ ভারতের বৃহদায়তনের রেল নেটওয়ার্কে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টতাও এখন দিনে দিনে বাড়ছে।
বন্ধ হয়ে যাওয়ার সময় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রেল চলাচল চালু ছিল ৮টি রুটে। এর মধ্যে ৫টি এখন দুই দেশের মধ্যকার রেল নেটওয়ার্ককে সচল রেখেছে।
এগুলো হলো বেনাপোল-পেট্রাপোল, দর্শনা-গেদে, রোহনপুর-সিংহাবাদ, বিরল-রাধিকাপুর। বন্ধ থাকা তিনটি রুটও ক্রমান্বয়ে চালু করা হবে। এর মধ্যে আখাউড়া থেকে ভারতের ত্রিপুরার আগরতলা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ এখন চলমান রয়েছে। শিগগিরই এ কাজ শেষ হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
রেলমন্ত্রক নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, পার্বতীপুর-কাউনিয়া ডুয়াল গেজ নির্মিত হলে ভবিষ্যতে আমরা ভারত ছাড়াও নেপাল, ভুটানের সঙ্গে কানেক্টিভিটি বাড়াতে সক্ষম হব এবং এর ফলে আমাদের যাত্রীসহ মালামাল পরিবহনের সুযোগ বাড়বে।
আমাদের দেশের রেল ব্যবস্থা ব্রড গেজ ও মিটার গেজ দিয়ে দুই অঞ্চলে বিভক্ত। আমরা পর্যায়ক্রমে সব রেল ব্যবস্থাকে ব্রড গেজে রূপান্তর করছি। ভারতের সব রেললাইন ব্রড গেজে।
আমরাও দেশের রেল ব্যবস্থাকে এক রকম ব্রড গেজে রূপান্তর করছি। এছাড়া রেললাইন সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে যে প্রকল্প নেয়া হচ্ছে, সবগুলোকেই আমরা ব্রড গেজ আকারে করছি।
তিনি আরো বলেন, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে যে আটটি ইন্টারসেকশন বন্ধ হয়েছিল, এরই মধ্যে তার পাঁচটি চালু হয়েছে। বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে চালু হবে। ভারত-বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক উত্তরোত্তর বাড়ছে।