ওপার বাংলা

Bangladeshএ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে Dengue

ঢাকা: বাংলাদেশে Bangladesh এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু dengue জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ডেঙ্গু Dengue পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। ডেঙ্গুর dengue প্রকোপে মহামারির কারণে ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু dengue রোগীর সংখ্যা।

কোন হাসপাতালে রোগী রাখার ঠাঁই নেই। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। মঙ্গলবার সর্বোচ্চ ৯০০ ডেঙ্গু dengue রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার রেকর্ড গড়েছে। এ সংখ্যা চলতি বছরে এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ।

এ নিয়ে সারা বাংলাদেশে হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু dengue রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২২৭ জনে। একই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনজন।

অথচ ডেঙ্গু নিয়ে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়েনি। হাসপাতালগুলোতে আসা রোগীরা অধিকাংশই দেরিতে আসছেন। এ অবস্থায় শঙ্কিত চিকিৎসকরাও। নগরবাসীকে একটু দায়িত্বশীল হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত ১৭ অক্টোবর দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৮৫৭ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

ওই দিন দুজনের মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯০০ জন।

তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৫২৮ ও ঢাকার বাইরে ৩৭২ জন। নতুন করে আক্রান্ত ৯০০ জনসহ বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি থাকা ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২২৭ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সর্বমোট ২৬ হাজার ৯৩৮ জন। এরমধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২৩ হাজার ৬১২ জন।

একই সময়ে মারা গেছেন ৯৯ জন। চলতি বছরের ২১ জুন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রথম মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা যায়নি। তবে ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। তার মধ্যে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পর যাদের হেমোরেজিক বা শক সিনড্রোম দেখা যাচ্ছে না বা যারা খুব দুর্বল হয়ে পড়ছেন না, তারা পরীক্ষাও করাতে যাচ্ছেন না। ফলে অনেক রোগী থেকে যাচ্ছেন শনাক্তের বাইরে।

এছাড়া এখানে শুধু হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দেখানো হয়। কিন্তু কতজন পরীক্ষা করে পজিটিভ হয়েছেন, অর্থাৎ ডেঙ্গু রোগীর প্রকৃত সংখ্যা জানানো হচ্ছে না।

খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু রোগ হচ্ছে। ঘরে-বাইরে পানি জমলেই এই মশা ডিম পাড়ে।

সেখানে হাজার হাজার মশা জন্মায়। তাই এই রোগ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় ঘরে-বাইরে কোথাও যেন পানি না জমে। ঘরে ও ঘরের আশপাশের পানি সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। পানি জমলেই মশা জন্মাবে।

এছাড়া মশার কামড় থেকে সুরক্ষিত থাকতে হবে। দিনে-রাতে যখনই ঘুমাবেন, তখনই মশারি টানাতে হবে। ছোট শিশুকে ফুল শার্ট-প্যান্ট পরাতে হবে। কোথাও যেন মশার লার্ভা জন্মাতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সমন্বিতভাবে মশক নিধন করতে হবে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, এডিস মশার লার্ভা নিধনে সিটি করপোরেশনকে আরও সক্রিয় হতে হবে। মশা নিধন না করা গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। আর মশা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে ডেঙ্গু রোগী বাড়বেই।

এখন প্রত্যেক জেলায় ডেঙ্গুরোগী পাওয়া যাচ্ছে। হাসপাতালে তিন হাজারের বেশি রোগী ভর্তি আছে। আমরা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু রোগীর সংখ্যা না কমলে মৃত্যুর সংখ্যা কমানো কঠিন। তাই মানুষকে সচেতন হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। প্রায় সব জেলার হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে অনেক। এই সময়ে এত ডেঙ্গু রোগী অনাকাক্সিক্ষত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সেবার কাজ করছে।

কিন্তু মশা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে রোগী বাড়বেই। বাসাবাড়িতে মানুষকে সচেতন হতে হবে। আর সিটি কর্পোরেশনকে মশা নিধনে জোড়ালোভাবে কাজ করতে হবে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেছেন, দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।

রাজধানীর কোনো হাসপাতালে শয্যা ফাঁকা নেই। প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী আসছে। তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোতে সিট না থাকলেও রোগীরা আসছে। আমরা তো তাদের ফেরত পাঠাতে পারি না।

মেঝেতে হলেও তাদের জায়গা দিচ্ছি এবং চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। তবে ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর ছেড়ে যাওয়ার পরই বিপদ শুরু হয়। তখনই প্লাটিলেট নামা শুরু করে। ওই সময়টাতে রোগীরাও বুঝতে পারে না।

তারা মনে করে সুস্থ হয়ে গেছে, এমনকি বিছানা থেকেও উঠে যায়। এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ডেঙ্গু রোগীর ব্লিডিং (রক্তপাত) শুরু হয়ে গেলে তখন ডাক্তারও কিছু করতে পারে না। ১০-১২ হাজারে প্লাটিলেট চলে এলে দাঁতের গোড়াসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্লিডিং শুরু হয়।

সুতরাং আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। সাধারণ মানুষ যদি সচেতন না হয় তাহলে আমরা অভিযান পরিচালনা করেও কিছু করতে পারব না। মশারির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আশপাশের জায়গাগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে।

ডাবের জল ডেঙ্গুতে খুবই জরুরি। কিন্তু ডাবের খোসা আমাদের জন্য সর্বনাশের কারণ, এটাও মাথায় রাখতে হবে।

হাবিবুর রহমান

Recent Posts

বাংলাদেশে হিটস্ট্রোকে উপজেলা মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান প্রার্থীসহ  ৪ মৃত্যু, স্থগিত নির্বাচন

ঢাকা: বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। ইতিমধ্যে অতি গরমের ফলে হিটস্ট্রোকে ৩৭ জন মারা গিয়েছেন।…

6 days ago

বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহে রেললাইন বেঁকে ট্রেন চলাচল বিঘ্ন

ঢাকা: বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহে রেললাইন বেঁকে ট্রেন চলাচল বিঘ্ন ঘটছে। যাকে রেলের ভাষায় বলা হয়…

7 days ago

সাপ্তাহিক রাশিফল

মেষ রাশির জাতক জাতিকাদের জন্য সপ্তাহটি ভালোই হতে চলেছে। অর্থ উপার্জন হবে। সমাজে সম্মান বাড়বে।…

1 week ago

বাংলাদেশে তাপদাহে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুনঈশ্বরদীতে রেললাইনের পাত বেঁকে গেছে

ঢাকা: বাংলাদেশে চলতি বছর সীমাহীন তাপদাহে মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশে সরবোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে…

1 week ago

আপনার আজকের দিনটি

সিংহ: আজকের দিনটি আপনার জন্য নতুন কিছু শেখার দিন হবে। ভাগ্যের দিক থেকে দিনটি ভালোই।…

1 week ago

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

ঢাকা: বাংলাদেশে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আবুল কালাম (২৫)…

1 week ago