বাংলাদেশের ফেনির সোনাগাজি ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে মারার মামলায় প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলাসহ ১৬ জনের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত।
আজ, ২৪ অক্টোবর সকাল ১১.১৫ নাগাদ ফেনি জজ কোর্টের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এ রায় ঘোষণা করেছেন।
চার্জশিটে উল্লেখিত আসামিরা হচ্ছেন- এস এম সিরাজ উদ দৌলা (৫৭), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ কাউন্সিলর (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে চম্পা/শম্পা (১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২), মোহাম্মদ শামীম (২০), রুহুল আমিন (৫৫) এবং মহিউদ্দিন শাকিল (২০)।
বৃহস্পতিবার রায়দানের পর নুসরাতের বাবা এ কে এম মুসা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন যদিও অতি শীঘ্রই রায় কার্যকর করার জন্যে দাবি জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, এ মুহূর্তে তাঁর পরিবারও অসুরক্ষিত বলে ভাবছেন তিনি। ফলে পরিবারের জন্যে সুরক্ষার দাবিও জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, নুসরাত হত্যার মর্মান্তিক, পৈশাচিক ঘটনাটি আলোড়ন ফেলে দিয়েছে চারদিকে।
গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে তার মায়ের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে।
পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসায় পরীক্ষা দিতে গেলে নুসরাতকে মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এ অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হলেও বাঁচানো যায়নি।
১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ২৮ মে ১৬ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এর দুদিন পর অর্থাৎ ৩০ মে নুসরত হত্যা মামলা স্থানান্তরিত হয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে।
আজ, বৃহস্পতিবার সেই মামলার রায় দিয়েছে আদালত।
আদালতের রায়ে একদিকে খুশি,অন্যদিকে চোখে জল মানুষের। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জনসাধারণের আহ্বান, ‘অপরাধ ও অপরাধীর বিরুদ্ধে প্রশাসন এভাবে সজাগ হলে হ্রাস পাবে দুষ্কর্ম। সরকার যেন এভাবেই সজাগ থাকে।’