চট্টগ্রাম: বন্দরনগরী চট্টগ্রামে গত ২৩ এপ্রিল থেকেই ঐতিহাসিক লালদীঘি পাড় ও এর আশপাশের প্রায় দেড় বর্গকিলোমিটার জুড়ে নানা ধরনের গৃহস্থালি পণ্যের পসরার দোকান বসেছে।
১৯০৯ সালে নগরীর বদরপাতি এলাকার সওদাগর আবদু জব্বার তরুনদেরকে একত্রিত করে শরীর গঠনের জন্য এই কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। তবে তৎকালীন বৃটিশ আমলে তিনি মূলত বৃটিশদের শোষনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যই তরুনদের জন্য এ কুস্তি বা চট্টগ্রামের ভাষায় এ বলীখেলার আয়োজন করেছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
সেই থেকে আবদুল জব্বারের নামেই এই কুস্তি বা বলী খেলা চলতে থাকে। প্রতি বাংলা বছরের ১২ বৈশাখ এই বলী খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
মঙ্গলবার ( ২৫ এপ্রিল) বেলা ৪ টার পরে এই বলী খেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম।
এদিকে বৈশাখী মেলা (সোমবার) থেকে শুরু হলেও ঐতিহাসিক জব্বারের বলি খেলা হয় মঙ্গলবার বিকেলে। এ বছর খেলার ১১৪তম আসর বসছে। বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী, ১২ বৈশাখ নগরীর লালদিঘী মাঠে প্রতিবছর এই বলি খেলা হয়। বলিখেলা উপলক্ষে বসে বৈশাখী মেলা।
সম্ভবত এমন বর্ণিল- উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অন্য কোন নগরীতে এমন মেলা হয়না।
আনুষ্ঠানিকভাবে এই বৈশাখী মেলা চলবে ২৬ এপ্রিল গভীর রাত পর্যন্ত। তবে নানা ধরনের পণ্য নিয়ে দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা দোকানীরা তাদের পন্য নিয়ে আরো দু’একদিন লালদীঘি চত্বরের আশপাশে থেকে যান ফুটপাতে।
এবারের ঈদে এই জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা এক বাড়তি আনন্দ হিসেবেই দেখছেন নগরবাসী ও চট্টগ্রামের লোকজন। বুধবার বিকেলে (২৬ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হচ্ছে চাটগাঁইয়া ঈদ উৎসব। আব্দুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও বৈশাখী মেলা এবার ১১৪তম আসর।
করোনার কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে ঐতিহাসিক জব্বারের বলী খেলা ও মেলা বন্ধ ছিল। লালদীঘি মাঠ সংস্কারের কারণে ২০২২ সালে বলীখেলা হয়েছিল রাস্তার ওপর মঞ্চ তৈরি করে। তবে এবার লালদিঘী মাঠের মধ্যেই মঞ্চ তৈরী করে খেলা হচ্ছে। এই বলী খেলায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা, তিন পার্বত্য জেলাসহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে নানা বয়সী বলীরা অংশ নিচ্ছেন।
ঈদের ছুটির মধ্যেই মেলা উপলক্ষে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ,নরসিংদী, খুলনা, চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছেন তাদের পণ্য নিয়ে। উঠে যাওয়া রঙ আবারও নতুন করে লাগাচ্ছেন মাটির সামগ্রীতে। নগরে ফিরতে শুরু করা মানুষের অংশগ্রহণে জমজমাট হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গন।
চট্টগ্রামের লোকজন এই বলীখেলার মেলা থেকে ঘরে ব্যবহারের জন্য নানা ধরনের জিনিষ সংগ্রহ কওে থাকেন। তাদের অপেক্ষা থাকে কবে আসবে জব্বারের বলী খেলা। মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে দেখা গেছে- মাটির তৈজসপত্র, ঝাড়ু, হাতপাখা, শীতলপাটি, দা-খুন্তি প্লাস্টিকের সামগ্রী-ফুল, মন্ডা-মিঠাই, গৃহসজ্জার সামগ্রী, গাছের চারা, তামা-কাঁসা-পিতলের সামগ্রী, কাঠের আসবাবপত্র, বেতের আসবাব, বাদ্যযন্ত্র, দোলনা, মাছ ধরার জাল, মোড়া, পিঁড়ি, জলচৌকিসহ কী নেই এই মেলায়।
নগরের অধিবাসীরা সারাবছর অপেক্ষা করে থাকেন এই মেলার জন্য। কারণ এখানেই মিলে গৃহস্থালীর সব জিনিসপত্র। ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে মেলায় মাটির তৈজসপত্র নিয়ে এসেছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী।
তারা জানান, দুইদিন আগেই মেলায় জিনিসপত্র নিয়ে চট্টগ্রামে পৌছেছেন তারা। তবে এবার ট্রাক ভাড়া বেশি দিতে হয়েছে। মেলায় মানুষ বাড়লে বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তারা। কনক দাস এসেছেন নারায়ণগঞ্জ থেকে মন্ডা-মিঠাই নিয়ে জব্বারের বলীখেলার মেলায়।
তিনি বলেন, আমাদের পরিবারের সবাই এই ব্যবসায় জড়িত। প্রতিবছর এখানে চলে আসি। বাপ-দাদারাও এসেছেন। একটা জায়গা পেয়েছি। পসরা সাজাচ্ছি। ঝাড়ু নিয়ে খাগড়াছড়ি থেকে এসেছেন সাদেকুল। তিন শ জোড়া ঝাড়ু এনেছেন তিনি। মেলায় ঝাড়ু বেশি বিক্রি হয়।
এছাড়া আছে হাতপাখার কদর। চন্দনাইশ থেকে বেত ও তালপাতার পাখা নিয়ে এসেছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী। গরমের এই সময়ে হাতপাখা অত্যন্ত জরুরী একটি জিনিষ। দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা এবারের মেলায় ভালো বিক্রি হওয়ার আশা করছেন যদি প্রাকৃতিক কোন দূর্যোগ ( ঝড়-বৃষ্টি ) না হয়।
আবদুল জব্বারের নাতি ও বৈশাখী মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শওকত আনোয়ার বাদল বললেন, ১৯৮৬ সাল থেকে বাপ-দাদার মাধ্যমে বংশ পরম্পরায় এই মেলার আয়োজন করে যাচ্ছি। চট্টগ্রাম সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীসহ পুলিশ প্রশাসন এবং অন্যরাও সার্বিক সহায়তা করছে। বলীরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দোকানিরা আসছেন মেলায়। এই বলীখেলা ও মেলা চট্টগ্রামবাসীর ঐতিহ্য। জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি চসিক ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী বলেন, এ বছর দুই শতাধিক কুস্তিগীর প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়া আজ বুধবার বিকেলে চাটগাঁইয়া উৎসবে চট্টগ্রামের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে। এ উপলক্ষে শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয়েছে। : সমরেশ বৈদ্য
ঢাকা: বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। ইতিমধ্যে অতি গরমের ফলে হিটস্ট্রোকে ৩৭ জন মারা গিয়েছেন।…
ঢাকা: বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহে রেললাইন বেঁকে ট্রেন চলাচল বিঘ্ন ঘটছে। যাকে রেলের ভাষায় বলা হয়…
মেষ রাশির জাতক জাতিকাদের জন্য সপ্তাহটি ভালোই হতে চলেছে। অর্থ উপার্জন হবে। সমাজে সম্মান বাড়বে।…
ঢাকা: বাংলাদেশে চলতি বছর সীমাহীন তাপদাহে মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশে সরবোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে…
সিংহ: আজকের দিনটি আপনার জন্য নতুন কিছু শেখার দিন হবে। ভাগ্যের দিক থেকে দিনটি ভালোই।…
ঢাকা: বাংলাদেশে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আবুল কালাম (২৫)…