চলে গেলেন আলোর ফেরিওয়ালা পলান, বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার একুশে পদক বিজেতা পলান চৌধুরী । ৯৮ বছর বয়সে রাজশাহী জেলার বাউসুয়া গ্রামে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন তিনি । বইয়ের প্রতি একজন লোকের প্রেম কতটা প্রগার হতে পারে, জ্ঞানের প্রসার তথা জ্ঞানের আলোক ছড়ানোর প্রতি কোনও ব্যক্তি নিজেকে কতটা উতসর্গ করতে পারে তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, বাংলাদেশের পলান । তাইতো তার মৃত্যুতে তীব্র শোক ব্যক্ত করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের বড় ক্ষতি হল ।ক্ষতি হল পড়ুয়াদের, ক্ষতি হল সমগ্র শিক্ষা জগতের । এই ক্ষতি অপূরণীয় ।
পাঁচ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছিলেন, অর্থের অভাবে চতুর্থ শ্রেণীর পর লেখাপড়া বিশেষ এগোয়নি। এরপরও, জ্ঞানের আলোক ছড়ানোর প্রতি তার অদম্য স্পৃহা তাকে নিয়ে গেছে পথে । বই ভঁরা কাপড়ের ব্যাগ কাঁধে নিয়ে পায়ে হেঁটে এ –গ্রাম থেকে,সে-গ্রামে গিয়ে বই বিতরণ করেছেন । পড়া শেষে পড়ুয়ারা বই ফিরিয়ে দিলে, সেই বই সংগ্রহ করে তুলে দিয়েছেন অন্য হাতে। এভাবে শিক্ষার আলোক বিতরণের সুফলও পেয়েছেন তিনি। পথ অগুনতি লোকের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা পাওয়া ছাড়াও দেশ তাকে সম্মানিত করেছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদক দিয়ে ।
শুধু পড়ানোতেই নয়, বই পড়তেও প্রচন্ড ভালোবাসতেন পলান, কোন বই কিনলে প্রথমে নিজে পড়তেন,তারপর তুলে দিতেন অন্যের হাতে তাই অন্যদের জ্ঞানের আলোকে আলোকিত করতে গিয়ে, নিজের মধ্যেও জ্ঞানের তীব্র আলোক প্রজ্বলিত করতে পেড়েছিলেন তিনি। তার একটি বিখ্যাত উক্তি থেকে একথা বোঝা যায় । ২০১৬ সালে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, শুধু বই পড়লে চলবে না ।শিক্ষাকে ব্যবহার করতে হবে সমাজের উন্নতির কাজে । সততা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার কাজে । তাছাড়া সমাজকে একসুত্রে বাধার কাজেও আত্মনিয়োগ করতে হবে ।