ঢাকা: বাংলাদেশে ট্রেন ও সড়ক দুঘর্টনায় ৮ জন নিহত হয়েছে। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার পদুয়া নয়ারহাট এলাকায় সড়ক দুঘর্টনায় ৩ জন ও ময়মনসিংহের মুক্তি অটোরিকশা চাপায় মা-মেয়েসহ ৩ জন নিহত।
এছাড়াও জামালপুরের মেলান্দহে রেললাইনে বসে মোবাইল ফোনে ফ্রি-ফায়ার গেম খেলার সময় ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে দুই বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার পদুয়া নয়ারহাট এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন-পদুয়া নয়ারহাট এলাকার জালাল আহমেদের ছেলে আবছার (৪০), চুনতি এলাকার আবদুল বারেকের ছেলে মো. জোবায়ের (২৫) ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানা এলাকার মো. বাবুলের ছেলে জাহেদ (২৭)।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের নয়ারহাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন লোহাগাড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, পদুয়া নয়াহাট এলাকায় বিপরীতমুখী ট্রাকের সঙ্গে একটি মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়।
মোটরসাইকেলটিতে থাকা তিন আরোহী ঘটনাস্থলে মারা যান। আমরা মরদেহ উদ্ধার করে থানায় হস্তান্তর করেছি।
অপরদিকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে চাপা দিয়ে উল্টে গিয়ে ডোবায় পড়লো বেপরোয়া গতির একটি ট্রাক। এতে মা-মেয়েসহ অটোরিকশার তিন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন।
সেইসঙ্গে অটোরিকশাচালকসহ চার জন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার বিকাল ৩টার দিকে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ভাবকির মোড়ের চেরুমন্ডল এলাকায় নির্মাণাধীন সেতুর কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন মুক্তাগাছা উপজেলার বিনোদবাড়ি মোনকোন গ্রামের মাওলানা নজরুল ইসলামের স্ত্রী হাসিনা বেগম (৪০), তার তিন বছরের শিশুকন্যা আদিবা আক্তার, অন্যজন গোড়শাইল গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মৃণাল চন্দ্র দাস।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিকাল ৩টার দিকে মুক্তাগাছা থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা একটি ট্রাক ভাবকির মোড়ের চেরুমন্ডল এলাকায় নির্মাণাধীন সেতুর পাশে মুক্তাগাছাগামী অটোরিকশাকে চাপা দিয়ে উল্টে গিয়ে ডোবায় পড়ে।
এতে অটোরিকশায় থাকা মা-মেয়ে ও শিক্ষক ঘটনাস্থলেই নিহত হন। সেইসঙ্গে অটোরিকশাচালকসহ গুরুতর আহত চার জনকে মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
মুক্তাগাছা থানার ওসি মো. ফারুক আহমদ বলেন, তিন জনের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাদের স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও অটোরিকশা জব্দ করেছে পুলিশ।
এছাড়া জামালপুরের মেলান্দহে রেললাইনে বসে মোবাইল ফোনে ফ্রি-ফায়ার গেম খেলার সময় ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে প্রাণ গেলো দুই বন্ধুর। নিহত শাকিল (১৯) জেলার মেলান্দহ উপজেলার দুরমুঠ ইউনিয়নের রুখনাই গ্রামের শাহাবুদ্দিন মাক্কুর ছেলে। সে ইসলামপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে।
অপর নিহত মজিবর রহমান (১৮) একই এলাকার শহিদুর রহমানের ছেলে। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ রেলপথে মেলান্দহের দুরমুঠের বটতলা বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার দুরমুঠ ইউনিয়নের বটতলা বাজার এলাকায় রেললাইনে বসে ওই দুই বন্ধু মোবাইল ফোনে ফ্রি-ফায়ার গেম খেলছিল।
এ সময় জামালপুর থেকে দেওয়ানগঞ্জগামী কমিউটার ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলে ওই দুই যুবকের মৃত্যু হয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, রেললাইনে বসে কানে হেডফোন লাগিয়ে মোবাইলে গেম খেলার কারণে তারা ট্রেনের শব্দ শুনতে পারেনি বলে জানান ওসি। জামালপুর রেলওয়ে থানার ওসি গুলজার হোসেন জানান, মৃতদেহ উদ্ধার করার জন্য ঘটনাস্থলে রেলওয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পর অপমৃত্যুর মামলা করা হবে।