‘বাংলা ভাষা’-র আবেগ। আসলে, একটি ভাষাই পারে একে অপরকে এক সুত্রে বেঁধে রাখতে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বরাক উপত্যকার শিলচরে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চের ব্যবস্থাপনায় ছিল প্রতিবাদী মিছিল “উনিশের পথচলা”।
তবে এবছর ছিল এক ব্যতিক্রমী আয়োজন। এই মিছিলে এবার নজর কাড়েন সিলেটের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ৪০ শিল্পী। বাংলাদেশের শিল্পীদের অংশগ্রহণ বরাকের বুকে এ যেন এক বাড়তি পাওনা। উনিশের এই মিছিলে তারা অংশ নেওয়ায় শুক্রবার বিকেলে শিলচরের রাজপথে মিলে মিশে একাকার হয় এপার-ওপার দুই বাংলা।
ভাষা শহিদকে সামনে রেখে, এদিন রাঙ্গিরখাড়ি থেকে পথচলার শুরু। শিলচর রেলস্টেশন গিয়ে শেষ হয়। সমবেত কণ্ঠে ভাষা আন্দোলনের গান ‘শোনো ডাকে ওই একাদশ শহিদেরা ভাই’ গেয়ে শুরু হয় পথচলা। মিছিলে, ভাষার আগ্রাসন থেকে এনআরসির হয়রানি, ডিটেনশন ক্যাম্প, নাগরিকত্বের সংকট থেকে কাগজ কল সমস্যা এসব কিছুর ক্ষোভ আছড়ে পড়তে দেখা যায়। কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগড়ে দেন সচেতন মহল।
উদয়ের পথে, টিম ইচ্ছেডানা, উধারবন্দ মাতৃভাষা এক্যমঞ্চ, যুবদর্পণ, ত্রিনয়নী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা, মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতি, সহ আরও বেশ কিছু সংস্থার সদস্যরা, বিভিন্ন সাহিত্য, সাংস্কৃতিক জগতের কলা-কুশলীরা হাতে হাতে মোমবাতি নিয়ে এই পথচলায় অংশগ্রহণ করেন।
এদিন সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয় অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মচারী নাজিমউদ্দিন আহমেদকে। নব্বই দশকের গোড়ায় তাঁর উদ্যোগেই রেলস্টেশন চত্ত্বরে ভাষা শহিদ দিবস পালিত হত। সম্মান জানানো হয় সিলেটের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ৪০ শিল্পীদেরও। পরে, রেলস্টেশনে গানে মেতে উঠেন শিল্পীরা।