বুধবার ‘সেবা’ ঘোষিত হাইস্কুল শিক্ষান্ত পরীক্ষা্র ফলাফলে উচ্চ অসমের বাংলা সরকারি বিদ্যালয় চমকপ্রদ ফল করে।
তিনসুকিয়া জেলার বেঙ্গলি গার্লস হাইয়ার সেকেন্ডারি স্কুলের মোট তিনজন ছাত্রী স্টার মার্ক লাভ করে। উত্তীর্ণের হার গত বছরের অনুপাতে যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষার মানদণ্ডে এগিয়ে চলেছে বাঙালি ছাত্র–ছাত্রীরা। উল্লেখ্য, সারা অসমে এ বছর পাশের হার ৬০ .২৩ শতাংশ। রাজ্যে করিমগঞ্জ পাব্লিক হাই স্কুলে বাংলায় সর্বোচ্চ নং উঠেছে ৯৭ ।
২০১৯ সালে তিনসুকিয়া বেঙ্গলি গার্লস হাইয়ার সেকেন্ডারি স্কুলের উত্তীর্ণের হার একটুর জন্যে ১০০% হয়নি। শুধু তাই নয়, ছাত্রীরা বাংলা মাধ্যমের হয়েও অসমিয়া ভাষাকে ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে বাছাই করে নিচ্ছে এবং সফলতাও অর্জন করছে। বিদ্যালয়ে এবছর দুজন ছাত্রী ঐচ্ছিক অসমিয়া বিষয়ে লেটার নং লাভ করে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়।
বিদ্যালয়ে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ ছাত্রীর সংখ্যা মোট ১৮ জন। তাঁদের মধ্যে রয়েছে মেধাবী তিয়াশা ঘোষ (লেটার ইংলিশ, গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান) , বর্ণালী দেবনাথ (সমাজ বিজ্ঞান, ঐচ্ছিক অসমিয়া) , শতরূপা পাল (অংক, সমাজ বিজ্ঞান,ঐচ্ছিক হিন্দি), ডোনা ভট্টাচার্য (অংক,ঐচ্ছিক হিন্দি) , এস্মিতা দাস (গণিত), মিষ্টু সিংহ, স্নেহা রায়, বিনীতা দেব (গণিত) সুস্নেহা সাহা (ঐচ্ছিক হিন্দি,), নিকিতা পাল (ঐচ্ছিক অসমিয়া) ,মামণি দাস, প্রিয়া কর (ঐচ্ছিক হিন্দি), সোনালি চক্রবর্তী (ইংলিশ, গণিত, ঐচ্ছিক হিন্দি,), স্মৃতি মজুমদার, মৌমিতা মল্লিক, মনিষা দত্ত পুরকায়স্থ, মুন্নি ভৌমিক।
অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করতে সমর্থ হয় মোট ২০ জন ছাত্রী।
তাদের মধ্যে রিয়া দাস, নয়না চৌধুরি, সৃষ্টি দত্ত, রিয়া দে, দিয়া শিল, জয়া মণ্ডল, স্নেহা দাস, অর্পিতা পাল, দিয়া পাল, প্রিয়াংকা দাস, নবনীতা সাহা, নিকিতা সরকার, মধুমিতা ধর, অনুশ্রী রায় (ঐচ্ছিক হিন্দি), সাইপ্রিয়া মজুমদার, উর্বশী দেব, স্মিতি সেনগুপ্ত, প্রিয়ংকা হালদার, সঞ্চয়িতা পাল, শিবানী দাস।
তৃতীয় স্থান লাভ করে ৬ জন। যথাক্রমে সংগীতা মিত্র, ঋত্বিকা বৈদ্য, জয়শ্রী দাস, সুপ্রীয়া সরকার, নেহা দে, রিমা দত্ত।
স্টার মার্ক লাভ করে তিয়াশা ঘোষ, শতরূপা পাল এবং ডোনা ভট্টাচার্য।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রেশ্মী দত্ত রায় দাস এন ই নাও সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের পড়াশুনার মান যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। গতবছর হাইস্কুল শিক্ষান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণের হার ছিল ৭৯ শতাংশ । তা বৃদ্ধি পেয়ে এ বছর হয়েছে ৯৫. ৬৫ শতাংশ’। বিদ্যালয় ছাত্রীদের নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী প্রধান শিক্ষিকা সকল ছাত্রীর উজ্জ্বল -গৌরবময় ভবিষ্যৎ কামনা করেছেন।
এছাড়া তিনসুকিয়া জেলার রেলওয়ে হাই স্কুলে ২০১৯ সালে সর্বমোট উত্তীর্ণের হার ৭৫.৩৮ শতাংশ। প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ ছাত্র–ছাত্রীর সংখ্যা ১৩ জন, দ্বিতীয় বিভাগে ১২ জন এবং তৃতীয় বিভাগে ২৪ জন । ৩৪ জন পড়ুয়ার রয়েছে লেটার নং, ৭ জনের স্টার নং।
উল্লেখ্য, অসমের তিনসুকিয়া জেলায় সরকারি বিদ্যালয়ে বাংলা মাধ্যমে পড়াশুনা করা ছাত্র–ছাত্রীরা ক্রমে ক্রমে বহুদূর এগিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে। ভবিষ্যতে বিশ্বের দ্বার উন্মুক্ত করবে তারাই।
অন্যদিকে স্থান তো দূরেরই কথা, এমনকি পাশের হারেও রাজ্যের গড়কে ছুঁতে পারেনি বরাক উপত্যকার জেলা। কাছাড় জেলায় উত্তীর্ণের হার ৫০ .২৯ শতাংশ, করিমগঞ্জ ৪৬ .৭৩ শতাংশ এবং হাইলাকান্দি গোটা রাজ্যে সর্বনিম্ন ৩৯. ০১ শতাংশ।
তবে কাছাড় জেলার কিছু কিছু বিদ্যালয় ভালই ফল করেছে। এর মধ্যে অন্যতম শিলচর কলেজিয়েট বিদ্যালয়। মেধা তালিকাতেও ঢুকে পড়েছিল এই বিদ্যালয়। মাত্র ৮ নম্বরের জন্যে ছিটকে গিয়েছে কলেজিয়েট বিদ্যালয়ের ছাত্রী অদ্রিজা নন্দী।
অদ্রিজা অংক, প্রাগ্রসর অংক এবং বিজ্ঞানে লাভ করেছে ১০০ নং । সমাজ বিজ্ঞানে ৯৯ এবং ইংরেজি ও হিন্দীতে নম্বর কমে যাওয়ায় স্থান দখল করতে পারেনি।