অসম

ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গণহত্যাঃ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বেছে বেছে খুন নেলিতে!

৩ যুগ অর্থাৎ ৩৬ বছর পূর্বে অসমের ইতিহাসের সেই ১৮ ফেব্রুয়ারির কলংকিত অধ্যায় কোনোদিন মুছে যাবে না।

উগ্র অসমিয়া জাতীয়তাবাদের দাউদাউ আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হয়েছিল অসমের নগাঁও জেলার নেলিতে প্রায় ২ হাজার ধর্মীয় সংখ্যালঘু মানুষের দেহ!

আশির দশকে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় যখন অসমীয়া জাতীয়তাবাদীদের আন্দোলন চরমে, সেই সময়েই নেলিতে সংঘটিত হয়েছিল স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গণহত্যা। এক বেলাতেই হত্যা করা হয়েছিল তিনহাজারেরও বেশি বাঙালি মুসলমানকে।

উগ্র অসমিয়া জাতীয়তাবাদীরা মাত্র ৬ ঘন্টায় মধ্যে হত্যা করেছিল ১৮০০ রও বেশি সংখ্যালঘুকে।

এই দিন মর্মান্তিক; ক্ষমার অযোগ্য দিন।

সম্ভবত মধ্য প্রাচ্যের চরম জিঘাংসাকেও অতিক্রম করে গিয়েছিল এই নির্মম কাণ্ড।

তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে, সব রকম কাজ হয়েছে, হয়নি কেবল নিরীহ মানুষগুলোর প্রাণহানির বিচার। খুনির বিচার।

১৯৮৩ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি।

বহিরাগত খেদাও আন্দোলন বিদেশি খেদাও আন্দোলনে রূপান্তর হয়ে অসমের ১৯৭৯ সালে আসুর নেতৃত্বে সুদীর্ঘ ৬ বছর ধরে অসম আন্দোলন চলেছিল।

উগ্র অসমিয়া জাতীয়তাবাদীরা বেছে বেছে হত্যা করেছিল ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের। আবালবৃদ্ধবণিতা কেউ বাদ যায়নি সেই নির্মমতা থেকে।

১৮ই ফেব্রুয়ারি সকালে যখন অসমীয়া জাতীয়তাবাদী শক্তির সমর্থক কয়েক হাজার দুষ্কৃতিকারী বসনতোরির একের পর এক বাড়ী জ্বালিয়ে দিচ্ছিল, তখন গ্রামের পুরুষ-মহিলা- শিশুরা বৃদ্ধ মুহাম্মদ আব্দুল হকের বাড়ীর ঠিক পেছনেই চাষের ক্ষেতে জড়ো হয়েছিলেন। মি. হক বলছিলেন, “সকাল সাতটা নাগাদ বাড়ি-ঘর জ্বালানো শুরু হয়েছিল। গ্রামের দুই প্রান্ত থেকেই ঘর জ্বালাতে জ্বালাতে এগচ্ছিল ওরা। সব মানুষ আমার বাড়ির ঠিক পেছনের ক্ষেতে জমা হয়েছিল। হঠাৎ দেখলাম অনেকগুলো গাড়ি থেকে অস্ত্র হাতে লোকজন নামছে। মুখে গামছা বাঁধা। তারপরেই শুরু হয়েছিল গুলি আর তীর ছোঁড়া।“

প্রাণে বাঁচার জন্য দিকবিদিক জ্ঞানশূণ্য হয়ে দৌড়িয়েছিলেন পশ্চিমদিকের নদীর দিকে। সাঁতরে নদী পার হতে যাঁরা পেরেছিলেন, তাঁরাই এখনও জীবিত রয়েছেন সেই বিভৎসতার বর্ণনা দেওয়ার জন্য।

৬ ঘণ্টা ধরে হাজার হাজার দুগ্ধপোষ্য শিশুকে পিটিয়ে হত্যা করে।

আন্দোলনকারীরা ৩৬ বছর পূৰ্বে ১৮ ফেব্রুয়ারির দিনটিতে তখনের নগাঁও জেলা এবং বৰ্তমানের মরিগাঁও জেলার নেলির ধৰ্মীয় সংখ্যালঘু এলাকায় চালিয়েছিল এই হত্যালীলা। যে হত্যা লীলা আন্তঃরাষ্ট্ৰীয় পৰ্যায়ে অসমকে চিনিয়ে দিয়েছিল নারকীয়-জঘন্য স্থান হিসেবে।

হত্যাকাণ্ড শেষ হলো! শুরু হলো ৰাজনীতি।আসু, কংগ্ৰেস, পরে অসম গণ পরিষদ।

হত্যাকারী পাষণ্ডরা শাস্তি পাওয়া তো দূরের কথা, সরকার এবং আইনের দৃষ্টিতে কোনো হত্যাকারীই চিহ্ণিত হয়নি পর্যন্ত।

পৃথিবীর ইতিহাস থেকে এই বর্বরতা মুছবে না কোনোদিন।

 

 

এন ই নাও নিউজ

Recent Posts

বাংলাদেশে হিটস্ট্রোকে উপজেলা মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান প্রার্থীসহ  ৪ মৃত্যু, স্থগিত নির্বাচন

ঢাকা: বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। ইতিমধ্যে অতি গরমের ফলে হিটস্ট্রোকে ৩৭ জন মারা গিয়েছেন।…

3 days ago

বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহে রেললাইন বেঁকে ট্রেন চলাচল বিঘ্ন

ঢাকা: বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহে রেললাইন বেঁকে ট্রেন চলাচল বিঘ্ন ঘটছে। যাকে রেলের ভাষায় বলা হয়…

4 days ago

সাপ্তাহিক রাশিফল

মেষ রাশির জাতক জাতিকাদের জন্য সপ্তাহটি ভালোই হতে চলেছে। অর্থ উপার্জন হবে। সমাজে সম্মান বাড়বে।…

4 days ago

বাংলাদেশে তাপদাহে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুনঈশ্বরদীতে রেললাইনের পাত বেঁকে গেছে

ঢাকা: বাংলাদেশে চলতি বছর সীমাহীন তাপদাহে মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশে সরবোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে…

5 days ago

আপনার আজকের দিনটি

সিংহ: আজকের দিনটি আপনার জন্য নতুন কিছু শেখার দিন হবে। ভাগ্যের দিক থেকে দিনটি ভালোই।…

5 days ago

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

ঢাকা: বাংলাদেশে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আবুল কালাম (২৫)…

6 days ago