রাজ্যে নাগিরকপঞ্জী থেকে বাদ পড়তে চলেছে প্রায় ১০-১২ লক্ষ্য লোকের নাম ,নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৬ রাজ্যসভায় গৃহিত হলে এই লোকেরা হাফ ছেড়ে বাঁচতেন ।অন্তত নিশ্চিত আশ্রয়ে মাথা গুজে নিদ্রা যেতে পারতেন । রক্ষা পেতেন অযথা হেনস্থার হাত থেকে । খানাপারায় দলীয় গণসমাবেশে যোগ দিয়ে ।
রাজ্যে বসবাসকারী নাগরিকত্ব সমস্যা জর্জ্জর লক্ষ লক্ষ হিন্দু বাঙ্গালিদের নাগরিকত্ব সমস্যা সমাধানের বিষয়টিতে জল ঢেলে দিলেন কংগ্রেস দলের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধী । নাগরিকপঞ্জী থেকে কোনো ভারতীয় লোকের নাম বাদ পড়বে না বলে তিনি হুঙ্কার দিলেও, নাগরিকপঞ্জী থেকে প্রকৃত ভারতীয় লোকের নাম বাদ পড়লে কীভাবে সেসব নাম সন্নিবিষ্ট করবেন সেকথা উল্লেখ করেননি । একই সংগে দ্ব্যার্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেস দল বাধা দেওয়ায়, রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব বিল উত্থাপন করার সাহস গোটাতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার ।
আসলে কংগ্রেস দলের আজকের সভা ছিলো নির্বাচনি স্টান্সে ভরা । এই সভায় একদিকে অসমীয়া জাতীয়তাবাদী শিবিরকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা চালিয়েছেন তেমনি বিজেপি, আরএসএস ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্যে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিনাযুদ্ধে বিজেপিকে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দিতেও প্রস্তুত নন তিনি । তাই সভায় বারবার বলেছেন ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে নয়াদিল্লি দখল করবে কংগ্রেস । তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে রাজস্থান,মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিসগড়ে কংগ্রেসের জয় দেখিয়ে দিয়েছে বিজেপি,আরএসএসের সঙ্গে কীভাবে লড়াই করতে হয় কংগ্রেস কর্মীরা তা জানে, এই একই ফর্মুলায় লোকসভা নির্বাচনেও জয় আসবে। তাছাড়া আজকেরসভায় প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেস দলের অন্যতম ক্রাউড ক্যাচার ।
বিজেপি, আরএসএসের বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, সারা দেশে সাম্প্রদায়িক তথা বিভাজনের রাজনীতি করছে এই দুটি দল ও সংগঠন । যার ফলে সারা দেশে বিভাজনকারী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে । রাজ্যে রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে অশান্তি, এক্ষেত্রে অসম ও অরুণাচলের কথা উল্লেখ করেন রাহুল । এমনকি দিল্লি বা বাংগালুরুতে উত্তর পূওর্বাঞ্চলের লোকদের ওপর বিভিন্ন সময়ে হওয়া হামলার পিছনেও বিজেপি ও আরএসএসের হাত দেখছেন তিনি, সভায় অকপটে সেকথা উল্লেখ করলেন তিনি ।
আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তার মূল অভিযোগ, প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন না তিনি, তাছাড়া যা কিছু করেন সবই করেন কর্পোরেট গোষ্ঠীর স্বার্থে, তার সময়ে কোটিপতি ব্যবসায়ীরা যে সব সুযোগ সুবিধা পেয়েছেন, সাধারন লোকেরা সেই তুলনায় কিছুই পাননি । তিনি বলেন, মোদীর সময়ে দেশের ১৫ জন কোটিপতি ব্যবসায়ীর ৩,৫০ লক্ষ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক ঋণ মুকুব করা হয়েছে অথচ কৃষকদের ব্যাঙ্ক ঋণ মুকুব করা হয়নি ।
এসব কথা জানানোর সঙ্গে সঙ্গে রাহুল দলীয় নেতা কর্মীদের সামনে একরাশ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন । তিনি বলেন, কেন্দ্রে শাসনে এলে কৃষকদের কৃষি ঋণ মুকুব করবে, দরিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারীদের জন্য মিনিমাম ইনকাম গ্যারান্টির ব্যবস্থা করবেন ।
অসমের ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে রাজ্যের স্পেশাল স্ট্যাটাস ফিরিয়ে দিবেন, অসমকে টেকনিক্যাল এডুকেশনের হাব বানাবেন, আবার খোলা হবে নগাও ও কাছার কাগজ কল । তাছাড়া উত্তর পূর্বাঞ্চলের উদ্যোগিক উন্নয়নের লক্ষে ফের লাগু করবেন নর্থ ইষ্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল পলিসি ।
উল্লেখ্য সভার শুরুতে রাজ্যে বিষাক্ত মদ খেয়ে মৃত ও অরুণাচলে সাম্প্রতিক হিংসায় মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন তিনি । সভার শেষে ধন্যবাদ জানান পাকিস্থানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে অংশ গ্রহণকারী বায়ুসেনা জওয়ানদের ।