প্রকাশ্য দিবালোকে রাজপথে কুপিয়ে হত্যার অপরাধে আসামের হাইলাকান্দি জেলাতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলেন এক ব্যক্তি। বুধবার হাইলাকান্দির জেলা ও দায়রা জজ এই গুরুত্বপূর্ণ রায় দান করেন। এই হত্যাকাণ্ড মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে দুইজনের নাম থাকলেও চূড়ান্ত রায়দানে একজনকে বেকসুর খালাস করে ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত সাহাব উদ্দিন লস্কর কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন বিচারপতি দেবাশিষ ভট্টাচার্য্য।
প্রাপ্ত তথ্য মতে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি সকাল দশটা নাগাদ হাইলাকান্দি শহরতলির লক্ষীরবন্দ বাইপাস ১৫৪ নম্বর জাতীয় সড়কে প্রকাশ্য দিবালোকে রাজপথে খুন হয়েছিলেন রিকশাচালক আব্দুল জলিল লস্কর। হাইলাকান্দি জেলার বড়জুরাই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জলিলের পুত্র আমরুল ইসলাম লস্কর এবিষয়ে নিজ সৎ-মা রুসনা বেগম লস্কর ও স্থানীয় এক যুবক সাহাব উদ্দিন-কে অভিযুক্ত করে হাইলাকান্দি সদর থানায় এক মামলা দাখিল করেন। এই মামলায় আমরুল ইসলাম নিজ সৎমা রুসনা বেগমের সঙ্গে সাহাব উদ্দিনের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন। এই কারনে পিতা আব্দুল জলিল এবং উনার দ্বিতীয় স্ত্রী রুসনা বেগমের মধ্যে সম্পর্ক ভাল ছিলনা। আর তাই সাহাব উদ্দিনের সঙ্গে মিলে প্রকাশ্যে আক্রমন করে দা দিয়ে আক্রমন করে হত্যা করার অভিযোগ উত্থাপন করেন। পুলিশ মামলাটি ৩০২/৩৪ আইপিসি ধারায় ৫২/১৬ নম্বরে নথিভুক্ত করে তদন্তে নেমে ঘটনার পরদিন অর্থাৎ ২০১৬ সালের ২৮ জানুয়ারি অভিযুক্ত দুইজনকে গ্রেফতার করে । এবং পরে তাদের হাজির করে হাইলাকান্দি সিজেএম আদালতে । সেখানে জি আর ২০৬ /১৬ নম্বরে একটি মামলা নথিভুক্ত করে অভিযুক্ত দুইজনকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্য ন্যায় দণ্ডাদীশ। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ৭ জুলাই মামলাটি কমিট হয়ে আসে জেলা ও দায়রা বিচারপতির আদালতে । সেখানে ৬৫/১৭ নম্বরে মামলাটি নথিভুক্ত হয়ে আইপিসি ৩০২ ধারায় শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া । মামলায় ১৩ জন ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় । এবং দীর্ঘ ট্রায়ালের পর মামলার চূড়ান্ত রায়দান ঘোষনা করা হয় বুধবার । এতে সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে অভিযুক্ত রুসনা বেগমকে বেকসুর খালাস করে দেওয়া হলে ও হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত সাহাব উদ্দিন লস্করকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড সহ নগদ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে অতিরিক্ত আর ও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের কঠোর সাজা ঘোষনা করেন হাইলাকান্দির জেলা ও দায়রা বিচারপতি দেবাশিষ ভট্টাচার্য । মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী ছিলেন উজ্জ্বল কুমার দাস ও আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন জামাল আহমদ লস্কর।