গুয়াহাটি: আসামের রাজনীতি একেবারে ভিন্ন। এখানে যত সমস্যা বাঙালিদের নিয়ে, তথা হিন্দু বাঙালিদের নিয়ে। এই নিয়ে তো আসামে কম ঘটনা হলো না। ফলে এককথায় বললে আসামে হিন্দু বাঙালিরা নির্যাতিতই। আর হিন্দু বাঙালিদের ব্যবহার করা হয় শুধু ভোট ব্যাংক হিসেবে।
এন আর সি যখন হলো তখন নথি যোগাড় করতে না পেরে ভয়ে আতঙ্কে কত মানুষ আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নিয়েছে। এইরকম আতঙ্ক ঢোকানো হয়েছিল! অথচ ভোটের সময় কথা! আবার দেখা গেছে, কারো নথি হয়তো আছেই, তবুও এন আর সি তালিকায় তাদের নাম আসেনি। হয়তো বাবা মায়ের নাম আসছে, সন্তানের নাম আসেনি! এইরকম অনেক গণ্ডোগোল হয়েছে।
ভারতের জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) থেকে পাঁচ লাখ বাঙালি হিন্দুর নাম কাটা গেছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। একটি সাক্ষাৎকারে আসামের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন যে শুধু পাঁচ লাখ বাঙালি হিন্দু নন, এনআরসি থেকে কাটা গেছে দু’লাখ আসামিয়া এবং ১.৫ লাখ গোর্খার নামও। আর তাদের মধ্যে মাত্র তিন থেকে ছয় লাখ মানুষ নতুন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের মাধ্যমে ১.৫ কোটি মানুষ ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করবেন বলে যে তত্ত্ব ছড়িয়েছে, সেটা ভুল।
আগামী ১৯ এপ্রিলের আগে পুরো বিষয়টা আরো পরিষ্কার হয়ে যাবে।
হিমন্ত দাবি করেছেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের (বৈধভাবে শরণার্থী হিসেবে আসামে আশ্রয় নেয়ার ডেডলাইন) পরও বাংলাদেশ থেকে অনেক পরিবার আসামে ঢুকে এসেছিল। এদের বেশিভাগ পরিবারই বাঙালি হিন্দু ছিল। কোনো-কোনো পরিবার আবার বাংলাদেশে ফিরেও গেছে।
তিনি বলেন, ‘ওইসময় অনেক পরিবারকেই রেশন কার্ড দেয়নি কর্তৃপক্ষ। ওদের কাছে স্রেফ একটিই নথি ছিল- সীমান্ত কর্তৃপক্ষের তরফে জারি করা রেজিস্ট্রেশন কার্ড। কিন্তু এনআরসির আপডেট করার প্রক্রিয়ায় ওই কার্ডকে ছাড়পত্র দেননি প্রতীক হাজেলা (এনআরসির সাবেক রাজ্য সমন্বয়কারী)। সেজন্যই এত নাম বাদ পড়েছে।’