দেশে জনসংখ্যা বিস্ফোরণ এক ভয়াবহ সমস্যা । দেশের বিভিন্ন সমস্যার অন্যতম এক মূল কারণ জনসংখ্যার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি । অশিক্ষা- জর্জ্জর দরিদ্র মুসলমান সমাজে জনবিস্ফোরণ এক ভয়াবহ সমস্যা রূপে দেখা দিয়েছে । বলতে গেলে অসম সহ সারা ভারতে জনবিস্ফোরণ এক ভয়াবহ সমস্যা । এই সমস্যা কে সম্পদে পরিণত করতে, নিজের সঙ্গী-সাথী সহ দিনরাত কাজ করছেন ডক্টর ইলিয়াস আলি । এই কাজের জন্য তিনি বিভিন্ন ভাবে প্রশংসিত হয়েছেন, পেয়েছেন বহু পুরস্কার । ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী উপাধি দিয়ে সম্মানিত করেছে । স্রোতের বিরুদ্ধে যাওয়ায় তাকে অনেক সময় তীব্র বিরোধীতার মুখেও পড়তে হয়েছে। অনেক জায়গায় বহুবিবাহের কথা বললে তাকে বলা হয়েছে কোরান ও হাদীসে বহুবিবাহের অনুমতি দেওয়া হয়েছে ।
সম্প্রতি গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এই ধরণের মন্তব্যের তীব্র বিরোধীতা করেছেন ডক্টর ইলিয়াস আলি । তিনি বলেছেন, কোরান বা হাদিসে কোথাও স্বাভাবিক অবস্থায় বহুবিবাহকে উৎসাহিত করা হয়নি । ইসলামে বহুবিবাহের বিধান নেই । মুসলমান সমাজে চলা বহুবিবাহ প্রথার জন্য ইসলাম কোনো ভাবে জড়িত নয় ।
নিউরোলজিক্যাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়ার বার্ষিক অধিবেশনে এসব কথা বলেন ইলিয়াস আলি । তিনি বলেন, দেশের জনসমস্যাকে সম্পদে পরির্বতন না করা পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে হবে ।তিনি বলেন, মুসলমান সমাজের অনেক জায়গায় এখনো শিক্ষার আলোক পৌছোয়নি ।এসব জায়গায় জন্মনিয়ন্ত্রন নিয়ে ভূল ধারণা ছড়িয়ে পড়েছ, এসব জায়গায় বলা হয় জন্মনিয়ন্ত্রণ ইসলাম বিরোধী । এই লোকদের ধরণা ইসলাম বহু বিবাহের অনুমতি দিয়েছে । তিনি বলেন, কোরান ও হদিসে কোথাও স্বাভাবিক ভাবে বহু বিবাহের অনুমতি দেওয়া হয়নি । ইসলাম বহুবিবাহের অনুমতি দিয়েছে, তাই এই ধর্মে বহুবিবাহ চলছে, এই ধারণা ভূল।
তিনি বলেন, বহুবিবাহ বা বহু সন্তান জন্ম দেওয়া জন্য শুধু দরিদ্র মুসলমান পরিবারগুলিই নয়, অন্য ধর্মের দরিদ্র পরিবার গুলোও পিছিয়ে পড়ছে । শিক্ষা- দীক্ষা, স্বাস্থ্য , রোজগার সব ক্ষেত্রেই তারা বাঁধার সম্মুক্ষীণ হচ্ছে ।
তিনি বলেন দেশে জন্মনিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে অনেক কাজ করার আছে । এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জন্মনিয়ত্রণ ও বহুবিবাহ সম্পর্কে ছড়িয়ে থাকা ভুল ধারণা দূর করা ।
বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তিনি কিভাবে রাজ্যের গ্রামে –গঞ্জে ,পাহাড় –পর্বতে ঘূরে বেড়িয়ে জনবিস্ফোরণ রোধের লক্ষ্যে কাজ করছেন, সভায় সেসব কথা সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন তিনি।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার ডক্টর সাবাহ মহম্মদ তনভির মনসুর, রাজ্যের শিক্ষা উপদেষ্টা মিহিরকান্তি চৌধুরী, ডক্টর জাকির হোসেন, ডক্টর বি বৈশ্য সহ অনেকে ।