চাকরি আছে,বেতন নেই। নেই সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ । একসময় বরাক উপত্যকা তথা উত্তরপূর্বাঞ্চলের সর্ববৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান পাঁচগ্রাম কাগজ কলের আলোয় আলোকিত ছিল গোটা উপত্যকা । নিযুক্ত কর্মী আধিকারিকদের জীবনযাত্রাও ছিল স্বাভাবিক । কিন্তু অজ্ঞাত কারণে মিল লকআউট হয়ে যায় গত তিন বছর ধরে। বদলে যায় সবকিছুই। এখন আর আলো নেই,বলতে গেলে অন্ধকারে নিমজ্জিত কাগজ কল। বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকেই রুজিরুটির সমস্যায় ঘরছাড়া। আর্থিক অভাব অনটন আজ নিত্যদিনের সঙ্গী ।
৪৮ মাস ধরে বেতন নেই অভিভাবকদের,ফলে বহু প্রতিশ্রুতিবান শিক্ষার্থীকে নিয়মিত পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। বঞ্চিত হতে হচ্ছে শিক্ষার অধিকার থেকে। এই পরিস্থিতিতে কাটিগড়ার এক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসে শিক্ষার অধিকারকে সুনিশ্চিত করার প্রচেষ্টা চালিয়েছে।
পাঁচগ্রাম কাগজ কলে কর্মরত কর্মী আধিকারিকদের আর্থিক দৈন্যতার জেরে হতাশাগ্রস্ত ওই সমস্ত শিক্ষার্থীদের একেবারে বিনামূল্যে গুণমান সম্পন্ন ও দক্ষ শিক্ষক মণ্ডলী দ্বারা নিয়মিত পঠন পাঠনের উদ্যোগ নিয়েছে।
রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে কাটিগড়া আইডিয়েল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির তত্বাবধানে পরিচালিত আইডিয়েল পাবলিক স্কুল কর্তৃপক্ষ এমন বার্তাই দিলেন।
আইডিয়েল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মামন আহমেদ জানান সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আইডিয়েল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির এই পদক্ষেপ । টাকার অভাবে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তাপূর্ণ হয়ে উঠুক। এটা কোনো অবস্থায় মেনে নেওয়া যায় না। ফলে সাধ্যিমতো আইডিয়েল কর্তৃপক্ষ নিঃস্বার্থভাবে দায়িত্ব নির্বাহ করতে প্রস্তুত । ভর্তি ফি,টিউশন ফি এমনকি প্রয়োজনীয় বইপত্রের যাবতীয় ব্যয় বহন করবে সোসাইটি। জানান স্কুল অধ্যক্ষ তথা সাধারণ সম্পাদক সামিম আহমেদ লস্কর । এখন পর্যন্ত ত্রিশ ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার যাবতীয় ব্যয়ভারবহন করছে সোসাইটি। এবং আগামী দিনেও টাকার অভাবে আটকা পড়া ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাবে আইডিয়েল কর্তৃপক্ষ ।
আইডিয়েল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত আইডিয়েল পাবলিক স্কুলে তারা ওই সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাঠদানের ব্যবস্থা করবে কর্তৃপক্ষ । এনিয়ে পাঁচগ্রাম কাগজ কল রিভাইভেল অ্যাকশন কমিটির কর্মকর্তা মানবেন্দ্র চক্রবর্তীর সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে বলে বলে জানিয়ে সামিম জানান পাঁচগ্রাম কাগজ কলে কর্মরত কর্মী আধিকারিকদের একখানা পরিচয়পত্র দাখিল করলেই ক্লাস নার্সারি থেকে নবমক্লাস পর্যন্ত আপাতত এবং আগামী একাদশ-দ্বাদশ পর্যন্ত সেবার পাঠ্যসুচি অনুসারে নিয়মিত পড়াশোনার ব্যবস্থা করবেন তারা । এই সুযোগ আগামী ১০ জানুয়ারী পর্যন্ত বহাল থাকবে। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ বোর্ড অব ডিরেক্টর আলহাজ জাহাঙ্গীর আলম লস্কর,মকবুল আহমেদ ও অ্যাকাডিমেক ডিরেক্টর মনজুর আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।