হাড়গিলা সংরক্ষণ করতে গিয়ে বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন প্রতিমা দেবী বর্মন। বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির এই পাখিটি সংরক্ষণের সূত্র ধরে বিশ্বের মানচিত্রে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে কামরূপ জেলার দদরা ও পচরিয়ার নাম । এভাবে বিখ্যাত হয়ে ওঠার পিছনে রয়েছে হাড়গিলা সংরক্ষণে প্রতিমা দেবী, পচরিয়া ও দদরাবাসীর অক্লান্ত প্রচেষ্টা । তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এখানে লক্ষণীয় ভাবে বেড়েছে হাড়গিলার সংখ্যা । বিশ্বের প্রায় বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির এই পাখিটির সুরক্ষা ও বৃদ্ধির ক্ষেত্রে উল্লেখ্যযোগ্য সম্মান জানানো হয়েছে প্রতিমা দেবীকে, তাকে হুইটলে পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে, যে পুরস্কার গ্রিন অস্কার নামেও বিখ্যাত। তাছাড়া আরবিএস আর্থ হিরো পুরস্কার দিয়েও তাকে সম্মানিত করা হয়েছে । তবে হাড়গিলা সংরক্ষণ করতে গিয়ে কম কাঠ- খড় পোড়াতে হয়নি প্রতিমা দেবীকে, ২০০৮ সালে হাড়গিলা নিয়ে গবেষণার স্বার্থে কামরূপ জেলার দদরা ও পচরিয়া অঞ্চলে গেলে তাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হতো, গঞ্জনাও কম হয়নি তাকে নিয়ে । তাচ্ছিল্য করে তাকে বলা হতো ‘হাড়গিলার মা’। এই ধরনের পরিস্থিতিতেও হতদ্যোম না হয়ে নিজ লক্ষ্যে এগিয়ে গিয়েছেন তিনি । বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির এই পাখিটি সংরক্ষণ কতটা জরুরী ধীরে ধীরে তিনি এই অঞ্চলের লোকদের সেকথা বোঝাতে সমর্থ হন । আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে । এরপর তিনি স্থানীয় লোকদের নিয়ে গঠন করেন হাড়গিলা আর্মি । হাড়গিলা সংরক্ষণের কাজে হাত লাগান স্থানীয় পুরুষ ও মহিলারা । বাড়ির যেসব গাছে হাড়গিলা বাসা বাধে সেসব গাছের নীচে নেট বেধে দেওয়া হয়, যাতে গাছ থেকে হাড়গিলার বাচ্চা মাটিতে না পড়তে পারে । তাছাড়া হাড়গিলার জন্য খাদ্যের ব্যবস্থাও করা হয়। যার সুফলও মিলতে থাকে ধীরে ধী্রে এখানে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে আরম্ভ করে হাড়গিলার সংখ্যা । হাড়গিলা সংরক্ষণে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য প্রতিমা দেবীকে স্বীকৃতি জানাতে থাকে আন্তর্জ্জাতিক বিভিন্ন মঞ্চ । উল্লেখ্য,বর্তমানে বিশ্বে হাড়গিলার সংখ্যা ১৮০০, যার মধ্যে অসমে হাড়গিলার সংখ্যা ৮০০ ।