ডি‘সন্ত্রাসে বিধ্বস্ত অসংখ্য ভারতীয় নাগরিক। ডি‘সন্ত্রাসের কঠোর আঘাতে কত যে প্রাণহাণি ঘটেছে,তার ইয়ত্তা নেই। লক্ষণীয় বিষয়, ভারতীয় নাগরিক প্রমাণ হওয়ার পরও বহু সংখ্যক ভারতীয়দের নামের আগে ‘ডি’ জুড়ে ‘ডি’ ভোটারের তকমা সেঁটে দেওয়া হয়েছে। কিসের ভিত্তিতে? কেন বা কারা ডি’ জুড়ে দিয়েছে?
এনিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক থাকলেও আজও এর সত্যতা বেরিয়ে আসেনি যদিও ডি’ ভোটারের তকমা নামের আগে জুড়ার ফলে অলিখিতভাবে বিদেশী সাব্যস্ত করে মানষিক ও শারীরিক উৎপীড়নের শিকার হচ্ছেন অসংখ্য অসহায় মানুষ। এই অসহায়ের তালিকায় গোটা রাজ্যের সঙ্গে বরাক উপত্যকায় রয়েছে অসংখ্য নাম।
এবার করিমগঞ্জ জেলার রেল শহর বদরপুরের একটি ঘটনা সামনে এসেছে। ডি‘- অপরাধে অসংখ্য অসহায় হতদরিদ্র মানুষ ঘর করে রয়েছেন ডিটেনশন ক্যাম্পের কুঠুরিতে।তাদের কোনো খবর হয় না।কিন্তু সেনাবাহিনীর প্রাক্তন অফিসার মহম্মদ সানাউল্লাহকে যখন ভুল করে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হল, তখন দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঢেউ উঠল।কিন্তু এই ভাবে বাকি যারা বিনা দোষে দোষী হয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে জেল খাটছেন তাদের কী হবে ?
তাদের হয়ে কেই বা আইনি লড়াই লড়বে? সীমান্ত পুলিশ ও ট্রাইব্যুনালের ভুলে হাজার হাজার নিরীহ, হতদ্ররিদ্র মানুষকে বিদেশী বানানো হচ্ছে বলে সীমান্ত শহরবাসীর অভিযোগ। অভিযোগ মতে, বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও চুড়ান্ত অব্যবস্থার মধ্যে প্রায় এক মাস দশ দিন ধরে ডিটেনশন ক্যাম্পে দিন কাটাচ্ছেন বদরপুর শহরের রাধানগর এলাকার প্রয়াত বীরেন্দ্র ঘোষের পুত্র জয়দেব ঘোষ।বদরপুর শহরে সবার পরিচিত ছিলেন প্রয়াত ব্যবসায়ী বীরেন্দ্র ঘোষ।
মেইন রোডের এএসটিসি কমপ্লেক্সের দক্ষিণ পাশে তাদের বাড়ি।ভারতীয় নাগরিকত্বের বৈধ সমস্ত নথিপত্র রয়েছে তাদের।ব্যাঙ্ক একাউন্ট ভোটার আই কার্ড, ভোটার তালিকা ইত্যাদি সমস্ত নথিপত্র রয়েছে তাদের।
জানা গেছে সপ্তাহখানেক আগে এনআরসি শুনানির জন্য রামকৃষ্ণনগরে তাদের ডাকা হয়েছে।ডাকা হয়েছে জয়দেব ঘোষ ও তার পরিবারকে।স্ত্রী ভীষন অসুস্থ, স্বামী জয়দেব শিলচর ডিটেনশন ক্যাম্পে।
প্রায় এক মাস দশ দিন আগে সাধারন পোষাকে না কি বর্ডার ব্রাঞ্চের পুলিশ এসে জয়দেব ঘোষকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়।কেন ডেকে নিচ্ছে এই ব্যাপারে পরিবারের কাউকে কোন কিছু জানায়নি পুলিশ,জানালেন পরিবারের লোকজনেরা। পরে অন্যান্য সদস্যরা দৌড়ঝাঁপ করে জানতে পারেন বর্ডার পুলিশ এসে জয়দেবকে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে গেছে।এ ঘটনায় পরিবারের সবাই অসহায় হতবাক হয়ে পড়েন।
মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মত অবস্থা পরিবারের। পরিবারবর্গ তার মুক্তির জন্য দৌড়ঝাঁপ করলেও, এখনও কোনও খবর নেই। গত দুদিন ধরে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। পরিবারের অভিযোগ, জয়দেব ঘোষ শিলচর ডিটেনশন ক্যাম্পে চরম অব্যবস্থার মধ্যে দিন যাপন করছেন।
প্রয়োজনীয় ঔষধ পত্র, খাওয়ার ঘুমাবার কোন ব্যবস্থা নেই।তার পরিবার পরিজন না কি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন, খুব শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে মুক্তি পাবেন জয়দেব ঘোষ,আশাবাদী তারা ।
অন্য একটি সুত্রের খবর, দুয়েক দফা নাকি জয়দেবের কাছে কোন নোটিশ এসেছিল, কিন্তু স্ত্রীর অসুস্থতা আর নিজের আর্থিক দৈন্যদশার কারনে নোটিশের জবাব দিতে ব্যর্থ হন। এলাকাবাসীর বক্তব্য জয়দেব ভারতীয়, তাদের দাবি জয়দেবকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক।