যৌন নিগ্রহকাণ্ডে প্রধান বিচারপতিকে ক্লিনচিট দেওয়ায় এ বার গর্জে উঠল সুপ্রিম কোর্ট চত্বর।
মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন একদল আইনজীবী। এতে, সামিল হন বহু মহিলা সমাজকর্মীও।
দিল্লি পুলিশ বিক্ষোভ থামাতে গেলে পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নেয়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় বিক্ষোভকারীদের। তার জেরে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে বিক্ষোভের সময় ঘটনাস্থলে হাজির কয়েকজন সাংবাদিককেও।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকালে বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় দিল্লি পুলিশের একটি দল। বিক্ষোভকারীদের সরাতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একরকম জোর করেই বিক্ষোভকারীদের ভ্যানে তুলতে শুরু করে পুলিশ। সেখান থেকে মন্দির মার্গ থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। সেখানেই আটক করে রাখা হয়।
তবে দিল্লি পুলিশের জনসংযোগ আধিকারিক মধুর বর্মার দাবি, সুপ্রিম কোর্ট চত্বরের মতো সংবেদনশীল জায়গাগুলিতে সারা বছর ১৪৪ ধারা জারি থাকে। তা লঙ্ঘন করেই এ দিন সেখানে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তা সত্ত্বেও শুরুতে তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি। বরং যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ সরিয়ে নিয়ে যেতে আর্জি জানিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি বিক্ষোভকারীরা। তাই তাঁদের আটক করা হয়। বিক্ষোভের পর আদালত চত্বরে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সোমবার, মুখ্য বিচারপতি রঞ্জন গগৈর বিরুদ্ধে উত্থাপিত যৌন নির্যাতনের অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। বিচারপতি এসএ বোবদে নেতৃত্বাধীন তিন সদস্য বিচারপতির ইনহাউস কমিটি এ কথা জানান। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতি ইস্যু করা হয়েছে। ইনহাউস কমিটির অন্য দুই সদস্য বিচারপতি হলেন, ইন্দিরা ব্যানার্জি ও ইন্দু মালহোত্রা।
গগৈকে ক্লিনচিট দেওয়ার পরই বিক্ষোভ শুরু হয় আদালতের বাইরে।
ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া উইমেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যানি রাজা সংবাদ মাধ্যমকে জানান, যে পদ্ধতিতে সুপ্রিম কোর্টের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি প্রধান বিচারপতিকে ক্লিনচিট দিয়েছে, তাতেই আপত্তি তাঁদের। অভিযোগকারিণী তথা সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন ওই মহিলা কর্মী প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন, তার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১৯ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের ২২ জন বিচারপতিকে হলফনামা দিয়ে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ জানান সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন মহিলা কর্মী।
ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা নেই বলে এর আগে তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন অভিযোগকারিণী। গগৈ ক্লিনচিট পাওয়ার তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে বিরাট অন্যায় হল। বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা হারানোর মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছি আমি”। তবে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবেন বলেও জানান তিনি।