বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিষ্ফোরণে কেপে উঠল দক্ষিণ হাইলাকান্দির অসম মিজোরাম সীমান্তের কচুরতল এলাকা। শুক্রবার সকালে উত্তেজিত জনতা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদে নেমে পড়েন। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ সুপার মহনীষ মিশ্রকে নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন হাইলাকান্দির ডিসি কৃর্তী জলি।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত দুই ঘটিকার সময় মসজিদের ভিতর শক্তিশালী বিষ্ফোরণের বিকট শব্দে কেপে উঠে গোটা এলাকা। বিষ্ফোরণের তুড়ে মসজিদের পরিকাঠামো একেবারে তছনছ হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে জমায়েত হন স্থানীয় জনতা। সকাল থেকেই জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রাখেন জনতা।
পরিস্থিতির খোজ নিতে স্থানীয় বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্কর বেলা দুটা নাগাদ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান রাখেন বিধায়ক সুজাম। এদিকে হাইলাকান্দির জেলাশাসক কৃর্তী জলি ও পুলিশ সুপার মহনীষ মিশ্র ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ছুটে যান মিজোরামের ভৈরবীতে।
ভৈরবীর ডাক বাংলায় কলাশিবের এসপি ও ডিসির সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে ডিসি কৃর্তী জলি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান মিজোরাম প্রশাসনের কাছে। মিজোরাম প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে ফিরে এসে স্থানীয় জনগণকে আশ্বস্ত করে ডিসি বলেন, এখন থেকে ২৪ ঘণ্টা পুলিশি পাহারায় থাকবে গোটা কচুরতল এলাকা। যাতে দুষ্কৃতিকারিরা কোনও ধরনের অপকর্ম সংগঠিত করতে না পারে। পুলিশ সুপার মহনীষ মিশ্রও একই প্রতিশ্রুতি দেন। তাছাড়াও তিনি শান্তি সম্প্রীতি অক্ষুণ্ণ রাখার আহ্বান জানান।
এর আগেও কিছু দুষ্কৃতিরা ভাইছড়ার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছিল। ডিসি এসপির কাছে এই দুষ্কৃতিদের একের পর এক ঘটনার কথা তুলে ধরেন স্থানীয় জনগণ। তাছাড়া তারা ভাইছড়ার বেটেলিয়ন ক্যাম্পটি কচুরতলের স্থানান্তরিত করার দাবি জানান।
স্থানীয় জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জেলাশাসক বলেন, বিষয়টি তিনি রাজ্যের স্বরাষ্ট্র বিভাগ ও মুখ্যমন্ত্রীর নজরে তুলে ধরবেন।
এদিকে বিকেল ৩ টা নাগাদ মিজোরাম পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। কলাশিবের এসপি ভেনলালফাকা রালতে ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টের বোমা বিশেষজ্ঞ আধিকারিকদের নিয়ে তদন্তে নামেন। পুলিশ সুপার কাটলিছড়ার বিধায়ক সুজাম উদ্দিন লস্কর কে আশ্বস্ত করে বলেন, মিজোরাম প্রশাসন সব ধরনের সহযোগিতা চালিয়ে যাবে। যাতে সীমান্তে শান্তি বিঘ্নিত না হয়।
মসজিদ পুনরায় নির্মাণের জন্য বিধায়ক সুজাম উদ্দিন ৫০ হাজার টাকা দান করার কথা ঘোষণা করেন। তাছাড়া বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী মসজিদ নির্মাণের জন্য আর্থিক সাহায্যের করবেন বলে সভায় জানান।
এদিকে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দি লস্কর, ঘাড়মুড়া জামিরা জেলাপরিষদ সদস্য ছালেহ আহমদ মজুমদার, বলদাবলদি জিপির এপি সদস্যার প্রতিনিধি আহমেদ হুসেন সহ অনেক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ পরিস্থিতি শান করতে দিনভর কচুরতলের অবস্থান করেন। বিকাল ৩টায় জাতীয় সড়ক অবরোধ মুক্ত হয়।