শিলচর: বিংশ শতাব্দীতে এসেও নাগরিক জীবনের ন্যুনতম চাহিদা থেকে বঞ্চিত ধলাই সমষ্টির জীবনগ্রাম জিপির বাসিন্দারা। স্থানীয় নবগঠিত নাগরিক মঞ্চের আহ্বানে আহুত এক সভায় উপস্থিত হয়ে আজ এই ব্যাপারে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি নিলেন barak democratic front র কর্মকর্তারা।
এই জিপির রাস্তা নির্মাণে এমজিএনরেগা প্রকল্পের অধীনে একটি কাজ শুরু হলেও অর্ধপথে তা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। ফলে যোগাযোগের কোন ব্যবস্থা নেই।
মাটির রাস্তা বর্ষার মৌসুমে চলাচলের সম্পুর্ন অনুপযোগী হয়ে থাকে। একই ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজও স্থানীয় প্রশাসন ও বিধায়কের অবহেলায় মাঝপথে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। স্থানীয় যে স্কুল ছিল তাও বন্ধ।
স্কুলের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্র ছাত্রীদের প্রতি দুর্ব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে ।বর্তমানে দুরবর্তী একটি স্কুলের সাথে এটির সংযুক্তিকরণ করে দেওয়া হয়েছে, যেখানে যাওয়া স্থানীয় ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব।
কারণ একে রাস্তার দুরবস্থা অন্যদিকে দুর্গম এবং জনমানবহীন এলাকা পেরিয়ে পৌঁছতে হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ক্ষেত্রেও ব্যাপক নয়ছয় চলছে। যাদের দরকার তাদের বাদ দিয়ে শাসকদলের ঘনিষ্ঠ বিত্তবানদের জন্য এসব বরাদ্দ হচ্ছে।
এবং কেউ এসবের প্রতিবাদ করলে শাসকদলের পক্ষ থেকে পুলিশি হস্তক্ষেপের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আজ bdf কর্মকর্তাদের সমীপে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন জিপির বাসিন্দারা।
এদিনের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে bdf মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে বলেন যে সামগ্রিক এই পরিস্থিতি নিতান্তই দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বলেন যে দল দুর্নীতির ব্যাপারে ‘ জিরো টলারেন্স’ এর ব্যাপক প্রতিশ্রুতি ও প্রচার করে বাস্তবে তা যে কতটা অন্তঃসারশূন্য এই জিপির অবস্থা থেকে তা সহজেই অনুমেয়।
তিনি বলেন যে এই সমষ্টির বিধায়ক অনেকদিন ধরে এই অঞ্চলের সাথে সম্পর্কিত। তাই এসব যে তার অজ্ঞাতসারে হচ্ছে তা মোটেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। যেহেতু এখানকার স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে ব্লক প্রর্যায় এবং জিপি সভাপতি সবাই বিজেপি দলের তাই এইসব দুর্ণীতি ও অবহেলার জন্য নিঃসন্দেহে শাসকদল দায়ী।
এবং একই সাথে যাদের এসব নিয়ে প্রতিবাদী হবার দায়িত্ব সেই কংগ্রেস দলের স্থানীয় নেতারাও নিজেদের উপার্জন এবং স্বার্থ রক্ষার্থে শুধু নীরবই নন , গোপনে শাসক দলের তাবেদারী করে চলেছেন। হৃষীকেশ বলেন bdf এসব কোন অবস্থায় মেনে নেবেনা।
তিনি বলেন যে আজ জীবনগ্রাম দিয়েই বরাকের (Barak) গ্রামীন মানুষের জীবন মরণের সমস্যা নিয়ে বিডিএফ এর আন্দোলনের সূচনা হল। এবার থেকে বরাকের প্রত্যেকটি জিপিতে গিয়ে স্থানীয়দের সমস্যা নিয়ে সোচ্চার হবে bdf।
প্রত্যেক জিপির বাসিন্দাদের এই ব্যাপারে বিডিএফ কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করার আবেদন জানান তিনি। বিডিএফ যুবফ্রন্টের মূখ্য আহ্বায়ক কল্পার্ণব গুপ্ত এদিন বলেন যে মহাত্মা গান্ধী গ্রাম স্বরাজের স্বপ্ন দেখতেন, মনে করতেন দেশের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য প্রতিটি গ্রাম স্বনির্ভর হয়ে উঠা জরুরী।
সেই উদ্দেশ্যেই পঞ্চায়েতরাজের সূচনা হয়েছিল। কিন্তু অবাধ দুর্ণীতির ফলে সেই উদ্দেশ্য অঙ্কুরেই বিনষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন ২০২২ সাল শেষের পথে অথচ এই জিপিতে এখনো যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, শিক্ষা ইত্যাদি ন্যুনতম পরিকাঠামোই অধরা , এর চেয়ে দুর্ভাগ্যের আর কি হতে পারে !
তিনি বলেন তাঁরা চান সরকার তথা স্থানীয় প্রসাশন অবিলম্বে স্থানীয়দের সাথে কথা বলুক এবং সমস্যার সমাধানকল্পে অবিলম্বে বিহীত ব্যাবস্থা নিক। অন্যথা নাগরিক মঞ্চের সহযোগে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। তিনি আরো বলেন যে কোন ধরনের পুলিশি হুমকি দিয়ে লাভ হবেনা কারণ এসবে ভয় পায়না বিডিএফ।
তিনি গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে একজোট হবার জন্য এদিন নাগরিক মঞ্চের প্রতিনিধি সহ অংশগ্রহনকারী সমস্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। বিডিএফ এর পক্ষ এক প্রেস বার্তায় থেকে এই খবর জানিয়েছেন যুবফ্রন্ট আহ্বায়ক দেবায়ন দেব।