শিলচর: অসমের (Assam) শিলচর (shilchar) পুরপ্রশাসনের পক্ষ থেকে পৌরকর পুনর্নির্ধারণের উদ্দেশ্যে সম্প্রতি নাগরিকদের ‘ সেল্ফ এ্যসেসমেন্ট ফর্ম ‘ বিতরণ করা হয়েছে। এই ফর্মে জায়গা এবং বাসস্থানের সরকারি মুল্যমান যেভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে তাতে নাগরিকদের পুরকর একধাপে দশগুণ অবধি বর্ধিত হতে পারে।
স্বভাবতই এই নিয়ে নাগরিকরা প্রতিবাদমুখী হয়েছেন এবং এই বিষয় নিয়ে সরকার প্রশাসনের সাথে আলোচনার জন্য ‘ নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চ’ নামে একটি যৌথমঞ্চ গঠিত হয়েছে।
কিন্তু গতকাল শিলচরের (shilchar) নতুন জেলাশাসক রোহন কুমার ঝা এই মঞ্চের প্রতিনিধিদের সাথে যেভাবে দুর্বিনীত আচরণ করেছেন এবং বাকবিতন্ডায় জড়িয়েছেন তা নিয়ে এবার তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করল বরাক ডেমোক্রেটিক যুব ফ্রন্ট (barak democratic Yuva front)।
এক প্রেস বার্তায় যুব ফ্রন্টের মুখ্য আহ্বায়ক দেবায়ন দেব বলেন যে সরকার বা প্রশাসনের কোন সিদ্ধান্ত যদি নাগরিকরা তাঁদের স্বার্থের প্রতিপন্থী বলে মনে করেন তবে তাঁদের প্রতিবাদ করা এবং সরকারকে তাঁদের অভিযোগ জানানোর একশ শতাংশ অধিকার রয়েছে এবং এই অধিকার সংবিধানসম্মত।
সাধারণত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা জনগন ও সরকারের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করেন এবং তাদের মাধ্যমে নাগরিকদের অভাব অভিযোগ সরকারের কানে পৌঁছে দেওয়া হয়।
কিন্তু এক্ষেত্রে যেহেতু নির্বাচিত পুরবোর্ড নেই এবং পুর প্রশাসন কোনধরনের আলোচনা ছাড়া এইধরনের অস্বাভাবিক করবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নাগরিকদের উপর চাপিয়ে দিতে চাইছেন ফলে নাগরিকদের তাঁদের অভিযোগ জেলাশাসকের মাধ্যমে সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়া ছাড়া এক্ষেত্রে আর কোন বিকল্প নেই।
কিন্তু জেলাশাসক যেভাবে এই বিষয়ে নাগরিক মঞ্চের প্রতিনিধিদের সাথে দেখা করতে অনাগ্রহ দেখিয়েছেন এবং তাদের স্মারক পত্র উপরমহলে পাঠাবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন তাঁতে পরিস্কার যে তিনি নাগরিক দের সমস্যা থেকে অনেক বেশী সরকারি সিদ্ধান্তের প্রয়োগ নিয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ।
স্মারকলিপি উপরমহলে পাঠাতে অস্বীকৃতি সংবিধান বিরোধী কাজ এবং তিনি জেলাশাসকের পদের অমর্যাদা করছেন। দেবায়ন বলেন যে এর আগেও শিলচরে (shilchar) বহু জেলাশাসক এসেছেন এবং অগুন্তি সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মারক পত্র দেওয়া হয়েছে।
কাউকেই এমন দুর্ব্যাবহার করতে দেখা যায় নি। তাই বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। যুব ফ্রন্টের আহ্বায়ক আরো বলেন যে শোনা যাচ্ছে হাইলাকান্দিতেও (hilakandi) এই পদে থাকাকালীন তিনি নাগরিকদের সাথে দুর্ব্যাবহার করেছেন।
একজন অবাঙালি হিসেবে তার এইসব আচরণের পেছনে প্রচ্ছন্ন বাঙালি বিদ্বেষও কাজ করছে কিনা সেটাও ভেবে দেখার বিষয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। যুবফ্রন্টের আরেক আহ্বায়ক বাহার আহমেদ চৌধুরী বলেন যে গত দু’দিন ধরে পুর প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইক যোগে প্রচার করা হচ্ছে যে প্রস্তাবিত শেষ তারিখ অর্থাৎ ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেল্ফ এ্যসেসমেন্ট ফর্ম জমা না দিলে নাগরিকদের জরিমানা ধার্য করা হবে ,যা ফর্মে কোথাও লেখা ছিল না।
তাই এসব থেকে মনে হচ্ছে যে প্রশাসন যেনতেন প্রকারে তাদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করতে চাইছে। তিনি বলেন যে শিলচরের (shilchar) নাগরিকদের এবার সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা সরকারের এসব ‘তালিবানি’ আচার আচরণ মেনে নেবেন কিনা।
বাহার বলেন এই শহরের একটি নাগরিক ঐতিহ্য রয়েছে। শিলচরের (shilchar) নাগরিকরা যেমন ভদ্র ,সংস্কৃতি মনস্ক তেমনি তাঁরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠতেও জানেন। এবার সরকার তথা প্রশাসনকে সেটা বুঝিয়ে দেবার সময় এসেছে। তাই তিনি শহরবাসী সবাইকে কোন অবস্থায় ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই ফর্ম জমা না দেবার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন যে প্রয়োজনে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব। তবে তাঁর আগে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই তুঘলকি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদের শপথ নিতে হবে। বিডিওয়াইএফ এর মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক রিপন দাস।