কলকাতা: আমাদের সমাজে সবসময় নারীদের নীচু চোখে দেখা হয়। এখনো পুরুষতান্ত্রিক লোকজন মহিলাদের পায়ের নিচেই রাখতে চায়। যেন তারা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে। তবে ব্যতিক্রম তো আছেই। যদিও ব্যতিক্রম কখনো উদাহরণ নয়।
যাই হোক, এই সমাজ নারীর সতীচ্ছদ, হাইমেন নিয়ে বেশ তৎপর। তারা মনে করে, প্রথম রাতের মিলনে রক্তপাত না হলে সেই মেয়ে বুঝি চরিত্রহীন, ভার্জিন নয়। বিষয়টা একেবারেই মুর্খদের আসলে।
কারণ হাইমেন বা সতীপর্দার সাথে একটি মেয়ের চরিত্রের কোনো সম্পর্ক নেই। আর মেয়েদের বেলাতেই বারবার এসব প্রসঙ্গ ওঠাও মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।
যাই হোক, ভার্জিনিটি এমনিই ভেঙে যায় – এর সাথে চরিত্রের কোনো সম্পর্ক নেই। ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
কারো কারো গোটা জীবন চলে যায় যৌন মিলন ছাড়া, তাঁরাও মানুষ! সবার মানসিক অবস্থা তো সমান নয়, তাই নিজের অজ্ঞতা, মাপকাঠি দিয়ে অন্যকে বিচার করা ঠিক না।
আসি ভার্জিনিটির কথায়:
একটি হাইমেনের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি একটি মেয়ের কুমারীত্বের অবস্থার সাথে কোন সম্পর্ক নেই।
এটি একটি পুরানো ধারণা যখন মেয়েদেরকে আশ্রয় দেওয়া হত এবং অপেক্ষা করা হত যতক্ষণ না তারা “স্বামীদের” কাছে যাচ্ছে।
ক্লাইম্বিং, সাইকেল চালানো, নাচ করা এসবে হাইমেন ছিঁড়ে যায় অটো। আর আজকাল সব মেয়েই ভারী কাজ করে, সাইকেল চালায়, বা আরো অনেক কিছু করে। এটাই স্বাভাবিক।
এমনও অনেক নারী আছেন যাদের হাইমেন থাকেই না, এটা প্রাকৃতিকভাবেই থাকে না। কারো হাইমেন অনেক পুরু, কারো বা খুব পাতলা।
হাইমেন বা সতীচ্ছদ নামের পর্দা যে কোন ভারী কাজ করলেও আপনা থেকেই ছিঁড়ে যেতে বা উধাও হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যাদের হাইমেন প্রাকৃতিক ভাবেই পাতলা বা ছোট বা দুটোই, তাদের দৈহিক বৃদ্ধি ঘটার সঙ্গে সঙ্গে হাইমেনেরও অপসারিত হবার প্রবণতা বেড়ে যায়।
যার হাইমেন একবার নিজে থেকেই ছিঁড়ে গেছে বা অপসারিত হয়েছে তার প্রথম বারের মিলনে কখনই রক্তপাত হবে না। তাই কুসংস্কার মনে রেখে কেউ যদি ভাবে স্ত্রী চরিত্রহীন, সেটা মুর্খামি ছাড়া কিছু না। এসব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
আজকাল ডিজিটাল যুগ, কেউ যদি বলে ‘জানি না’ তাহলে সেটাও মুর্খামি। কারণ আপনার আঙুলের ডগায় গোটা পৃথিবীর তথ্য। এক সার্চেই সব চলে আসে। তাই সত্য জানুন, সত্য জানান।