ত্রিপুরা

উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদের বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে জানালেন Tripuraর মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা: উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদের দুইদিন ব্যাপী ৭০তম প্ল্যানারী মিটিং গত ৮ এবং ৯ অক্টোবর। আলোচনার বিষয়বস্তু সংবাদ মাধ্যমের সামনে উপস্থাপিত করলেন ত্রিপুরার tripura মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা মানিক সাহা।

অসমের গৌহাটি gueahati থেকে আগরতলা agartala ফিরে এসে তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে এই বিষয়ে কথা বলেন। তিনি জানান, গৌহাটিস্থিত আসাম assam অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কলেজে অনুষ্ঠিত হয়।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তথা উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদের চেয়ারম্যান অমিত শাহ এই প্ল্যানারী মিটিং এর পৌরহিত্য করেন। কেন্দ্রীয় উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডিসহ পর্ষদের অন্যান্য সদস্যরাও এই বৈঠকে অংশ নেন।

এছাড়াও এই বৈঠকে উত্তর পূর্বাঞ্চল রাজ্যগুলির রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীগণ উপস্থিত ছিলেন। প্ল্যানারীর প্রথম দিনের বৈঠকে ডোনার মন্ত্রকের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিব, উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদের সচিব, বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিবগণ এবং কেন্দ্রীয় রাজ্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক ও দপ্তরের আধিকারিকগণ অংশ নেন ।

এছাড়াও উত্তর পূর্বাঞ্চল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় যেমন, SDG District indicator Framework for North East, উত্তর পূর্বাঞ্চলে পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা, বেসরকারী ক্ষেত্রে বিনিয়োগ, 5G পরিষেবা, ডিজিটাল স্কুল চালু, এন্টারপ্রেনারশীপের উন্নয়ন ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়সমূহ কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের অধিকারিকদের কাছে উপস্থাপন করা হয়।

বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে tripura রাজ্যের  মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা রাজ্যের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অগ্রাধিকারের বিষয়গুলি সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের সামগ্রিক বকেয়া বিষয়গুলির দ্রুত সমাধানের জন্য উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদ এবং ভারত সরকারের গোচরে আনতে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ডোনার মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও পর্ষদের অন্যান্য সদস্যদের কাছে তুলে ধরেন ।

Tripura মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা বৈঠকে আলোচনাকালে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব নেয়ার পর দিল্লীর কেন্দ্রীয় সরকারকে উত্তর পূর্বাঞ্চলের দোরগোড়ায় নিয়ে এসেছেন ।

উত্তর পূর্বাঞ্চলের শান্তি রক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে গত ৮ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর দ্ব্যর্থহীন প্রতিশ্রুতির ফলে এই অঞ্চলের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যসমূহের মধ্যে সব কা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস এবং সবকা প্রয়াস সদর্থক আকার নিচ্ছে।

আলোচনার মূখ্য বিষয়সমূহের কিছু হলো, রাজ্যের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নতি রাজ্য সরকারের মূল অগ্রাধিকারের বিষয়। গত সাড়ে চার বছর ধরে রাজ্য সরকার বেশ কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে, যার ফলে রাজ্যের আর্থ সামাজিক অবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।

বর্তমানে রাজ্যে প্রতিবছর ৫ লক্ষ দেশীয় ও বিদেশী পর্যটক ভ্রমণ করছেন। ত্রিপুরা tripura ট্যুরিজম পলিসি-২০২০-২৫ রাজ্যে চালু হয়েছে। Tripura রাজ্য সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে পর্যটকদের আন্তর্জাতিক মানের পরিকাঠামো ও পরিষেবা প্রদান করা।

এই লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের সদর্থক সহায়তা আমাদের এই প্রয়াসকে উজ্জীবিত করবে। প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনার অধীনে দেশের প্রতিটি রাজ্যে একটি এইমস্ স্থাপনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার পরিকল্পনা নিয়েছে। রাজ্য সরকারের ভিশন ডকুমেন্টের এটি একটি অন্যতম অ্যাজেন্ডা ।

Tripura বাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নকে পূর্ণতা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। টি-বোর্ড, কফি বোর্ড, রাবার বোর্ড এবং স্পাইসেস বোর্ডের মতো আগরতলাকে সদর দপ্তর করে রাজ্যে আগর উড বোর্ড গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে বিবেচনা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ জানিয়েছেন।

সম্প্রতি চা ই-মার্কেট প্লেস-এর মাধ্যমে টি-বোর্ড অব ইন্ডিয়ার সহায়তায় বিক্রির প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে এবং এই ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করা হয়। প্রাকৃতিক রাবার উৎপাদনের ক্ষেত্রে ত্রিপুরা tripura হচ্ছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎপাদক রাজ্য ।

রাজ্যের রাবার উৎপাদকদের বিশেষ ইনসেনটিভ প্রদান এবং আধুনিক স্মোক হাউস নির্মানের জন্য রাবার বোর্ডকে অনুরোধ করা যেতে পারে।

বাংলাদেশে রাবারজাত সামগ্রী রপ্তানীর ক্ষেত্রে বন্দরের বিভিন্ন বিধি-নিষেধগুলি তুলে নেওয়া প্রয়োজন বলে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

সম্প্রতি বাংলাদেশের মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর দিল্লী সফরকালে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় ত্রিপুরার tripura মধ্য দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিষয়টিকে গুরুত দিয়ে আলোকপাত করা হয়েছিল। উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সীমানায় একটি প্রধান ল্যান্ড পোর্ট স্থাপনের বিষয়টি ভারতের দিক থেকে পুনরায় তুলে ধরা হয়েছে ।

চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে ত্রিপুরাকে যুক্ত করার লক্ষ্যে ফেনী নদীর উপর নির্মিত মৈত্রী সেতুকে কার্যকরভাবে চালু করতে সমস্ত সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে উল্লেখ করেন।

ত্রিপুরার দক্ষিণ জেলার মূহুরীঘাট এবং মনুঘাটে ইন্টিগ্রটেড ডেভেলাপমেন্ট কমপ্লেক্স নির্মানে নো অবজেকশন প্রদানের জন্য বাংলাদেশকে সরকারকে অনুরোধ করার বিষয়টিও আলোচনায় উত্থাপিত হয়।

একেবারে শেষ গন্তব্য পর্যন্ত সমস্ত পণ্য সামগ্রী পরিবহন করার অনুমতি প্রদানের বিষয়টি ভারত এবং বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের একটি দীর্ঘদিনের দাবী। তাই এই বিষয়টি বিবেচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে উল্লেখ করেন। আগরতলায় নেতাজী সুভাষ আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জিমনাসিয়াম হলটিকে ন্যাশনাল জিমন্যাস্টিকস একাডেমী হিসাবে ঘোষণার জন্য রাজ্য সরকারের প্রস্তাবটি কেন্দ্রীয় সরকারের বিবেচনার জন্য উত্থাপিত করা হয়েছে।

অলিম্পিক মানের সুইমিং পুল সহ পরিকাঠামোগত অপ্রতুলতার কারণে জাতীয় ক্ষেত্রে রাজ্য তেমন স্বীকৃতি অর্জন করতে পারছে না । জাতীয় মানের একটি সুইমিং পুল নির্মানে অর্থ প্রদানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠানোর বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী আলোচনায় তুলে ধরেন।

রাজ্য সরকার বাংলাদেশের চট্টগ্রাম এবং আগরতলার মধ্যে বিমান পরিষেবা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এইজন্য প্রতিবছর রাজ্য সরকার Viable Gap Funding হিসাবে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ভার বহন করবে । দ্রুত বিমান পরিষেবা চালুর বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের হস্তক্ষেপ নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে অনুরোধ জানিয়েছেন।

শহরে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহের জন্য গ্যাস অথোরিটি অব ইন্ডিয়া লিমিটেড রাজ্যে মুখ্য দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের অনুমোদন ব্যতিরেকে রাজ্যে শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ সম্ভব নয় তাই শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে অতিরিক্ত গ্যাস সরবরাহের বিষয়টি বিবেচনার জন্য উত্থাপন করা হয়েছে।

বাড়িঘরে বাঁশের ব্যবহার বৃদ্ধি করার জন্য আমদানি শুল্ক কমিয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। এর ফলে ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলি উপকৃত হবে। জাতীয় ব্যাম্বু মিশনের প্রকল্পের অধীনে রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকায় রাজ্যে বাঁশ চাষের জন্য সহায়তা করা যেতে পারে ।

কুমারঘাট রেল স্টেশন পর্যন্ত পার্সেল ভ্যানের পরিষেবা সম্প্রসারণ করা হলে আগরবাতির শলাকা পরিবহণের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে । এই বিষয়টিও বিবেচনার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। রাজ্যের জনজাতিদের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ।

২৩টি জনজাতি অধ্যুসিত ব্লক এলাকায় বসবাসকারী জনজাতিদের উন্নয়ন বিশেষ করে শিক্ষা, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং মজবুত জীবন জীবিকার উন্নয়নের জন্য ভারত সরকারের অর্থ মন্ত্রকের অর্থনৈতিক বিষয়ক দপ্তর ১৩০০কোটি টাকার এক্সটারন্যাল এইডেড প্রজেক্টের একটি প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ব ব্যাঙ্কের কাছে পাঠিয়েছে ।

তাই এই বিষয়টিকে ত্বরানিত করা আবশ্যক বলে মুখ্যমন্ত্রী দাবী জানান। সুবর্ণ জয়ন্তী ত্রিপুরা নির্মাণ যোজনার অধীনে বিভিন্ন ক্যাপিটেল ইনভেস্টমেন্ট প্রকল্পে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, মহিলা স্ব-শক্তিকরণ ও পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্য সরকারের বাজেটে ১২০০ কোটি টাকা ব্যয় করার ঘোষণা করা হয়েছে।

উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদের সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষে অভিনন্দন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদ উত্তর পূর্বাঞ্চলের নীতি আয়োগ হিসাবে একটি একমুখী সমাধান কেন্দ্র হিসাবে কাজ করবে ।

তিনি উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদের মাননীয় চেয়ারম্যান তথা মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহজীকে আন্তরিক স্বাগত জানান এবং এই অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে উন্নয়নের গতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহজীর উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপের কথা ব্যক্ত করেন।

এন ই নাও নিউজ

Recent Posts

আপনার আজকের দিনটি

সিংহ: আজকের দিনটি আপনার জন্য নতুন কিছু শেখার দিন হবে। ভাগ্যের দিক থেকে দিনটি ভালোই।…

7 hours ago

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

ঢাকা: বাংলাদেশে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আবুল কালাম (২৫)…

21 hours ago

ভোট দিলেন নারায়ণ মূর্তি

কলকাতা: ভারতে ৭ দফা ভোটের আজ শুক্রবার দ্বিতীয় দফার ভোট। পশ্চিমবঙ্গ, অসম, বিহার সহ ১৩…

1 day ago

আজ সিংহের আর্থিক সফলতা কেমন?

সিংহ- দিনটি মোটামুটি কাটবে। তবে একটু সাবধান হবেন। সঙ্গীর সাথে লং ড্রাইভে যেতে পারেন। বিরোধীরা…

1 day ago

মিয়ানমারের সেনাসহ ২৮৮ জনকে ফেরত পাঠিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ

ঢাকা: মিয়ানমারে চলমান অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বর্ডার গার্ড পুলিশের সদস্যসহ ২৮৮ জনকে…

2 days ago

বাংলাদেশে টানা তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন

ঢাকা: বাংলাদেশে টানা তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।মাঝেমধ্যে গায়ে বাতাস লাগলেও তা যেন আগুনের হল্কা।…

2 days ago