এক বাস্তব কাহিনি। শুনলে হয়তো কোনও সিনেমার গল্প মনে হবে কিন্তু এই কাহিনি সিনেমার চিত্রনাট্যকে হার মানায়।
নিজের বিধবা বউমাকে মেয়ের স্নেহে পাত্রস্থ করলেন এক শ্বশুর। ঠাকুর- দেবতাকে স্বাক্ষী রেখে গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে বৌমার বিয়ে দিলো শ্বশুর মশাই।
সোমবার রাতে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়ার ভবতারিণীর মন্দিরে এমনই এক চিত্র ধরা পড়ল।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা ব্লকে বাড়জিশুয়া গ্রামের বাসিন্দা মুকুন্দ মাইতির ছেলে অমিত মাইতি আচমকাই মারা যান। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে মহীশূর থেকে হাওড়া এক্সপ্রেসে কাজ সেরে বাড়ী ফেরার পথে ভুবনেশ্বরে অসুস্থতার কারণে ট্রেনেই মৃত্যু হয় তাঁর।
তারপর প্রায় সাত মাস নিজের মেয়ের মতোই মুকুন্দ মাইতি বউমাকে বাড়িতে রেখেছিলেন।
অবশেষে নিজ উদ্যোগে পাঁশকুড়ার ভবতারিনী মন্দিরে পাঁশকুড়া ব্লকের শ্যামসুন্দরপুর পাটনা এলাকার বাসিন্দা স্বপন মাইতির সঙ্গে তার বউমার বিয়ে দিলেন মুকুন্দ মাইতি। পাশাপাশি ঘটা করে বৌভাতও হল মন্দিরে।
চারিদিকে আলোর রোশনাইয়ে চোখের জলে বউমাকে বিদায় দিলেন মুকুন্দবাবু। যদিও বউমা উমা মাইতি বলেন, “তিনি আমার শ্বশুর মশাই নয়, স্বয়ং আমার বাবা। নিজের মেয়ের ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন। এই দিনের কথা আমি কখনোই ভুলবো না। এক সময় যখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল নিজের মেয়ের মতন আমায় আগলে রেখেছিলেন, সাহস জুগিয়েছিলেন, প্রেরণা জাগিয়েছিলেন এই মানুষটা”।
শ্বশুর মশাই নন, বাবার হাত ধরে নতুন চলার পথে আরেক নতুন সঙ্গী খুঁজে পেলেন উমা। মুকুন্দবাবুর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।