নয়াদিল্লি: বেদে নিহিত ছিল বিজ্ঞানের মূল কথা। এবং এর যথেষ্ট প্রমাণ আছে। আর সেখান থেকে আধুনিক বিজ্ঞানের উৎপত্তি! জানালেন ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-র চেয়ারম্যান এস সোমনাথ।
বীজগণিত, বর্গমূল, সময়ের ধারণা, স্থাপত্যের গোড়ার কথা লেখা ছিল বেদে। পশ্চিমি দুনিয়া যে আধুনিক সভ্যতার জনক বলে মনে করে নিজেকে, তা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলে সোমনাথ বলেছেন, “উন্নত বিশ্ব পরে এগুলো খুঁজে পেয়েছে মাত্র। কিন্তু তার আগে থেকেই এগুলোর অস্তিত্ব ছিল।”
মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে মহাঋষি পাণিনি সংস্কৃত এবং বৈদিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইসরো চেয়ারম্যান।
সংস্কৃত ভাষায় লেখা বেদ প্রথমে কেন নিজের প্রাপ্য স্বীকৃতি পায়নি, সে কথাও তিনি ব্যাখ্যা করেন। এবং বলেন, “সংস্কৃত ভাষার নিজস্ব কোনও লিপি ছিল না। কান দিয়ে ও হৃদয় দিয়ে বেদের শিক্ষা গ্রহণ করতেন পড়ুয়ারা। এবং অনেক পরে সংস্কৃতের জন্য দেবনগরী হরফ ব্যবহৃত হয়।”
মূলত ভাষাগত সমস্যা ছিল, আর এই সমস্যার জন্যেই বেদে উল্লিখিত বিজ্ঞানের সূত্র বিশ্বের কাছে অধরা থেকে গিয়েছিল।
উল্লেখযোগ্য যে, বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে প্রাচীনকালে সবথেকে উন্নত ছিল ভারত।
তবে ইসরো চেয়ারম্যানের এই বক্তব্যকে নস্যাৎ করলেন লেখক তসলিমা নাসরিন। তবে তিনি সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি বা চেয়ারম্যানের কথার বিরোধিতা করে প্রমাণও দেননি।
লিখেছেন, “এক জীবনে কত আর অবাক হবো! ইসরোর চেয়ারম্যান যখন বলেন ‘ বিজ্ঞান সব বেদে আছে, আরব দেশ পার হয়ে বেদের বিজ্ঞান পাশ্চাত্যে গেছে, পাশ্চাত্যের লোকেরা বলেছে তারা নাকি বিজ্ঞান আবিস্কার করেছে।’ তখন স্তব্ধ হয়ে থাকি।
কী হয়েছে বিজ্ঞান-পড়া মানুষদের আমি জানি না।
ধর্ম আর বিজ্ঞানের তফাৎ আকাশ পাতাল। ধর্মের গল্প সত্যি কি না তার জন্য প্রমাণ দেখাতে হয় না, শুধু বিশ্বাস করলেই হয়; বিজ্ঞানের গল্প যে সত্যি, তার জন্য প্রমাণ দেখাতে হয়। ধর্ম কল্পনা, বিজ্ঞান বাস্তব।
এখনকার মতো প্রাচীনকালেও মানুষ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জ্ঞানের কথা বলেছেন। গ্রীসের, মিসরের, ভারতের প্রাচীন গ্রন্থাবলীতে আমরা সেই নিদর্শন পাই, দর্শন হিসেবে তা মানা যায়, কিন্তু বিজ্ঞান হিসেবে নয়।
হনুমান আকাশে উড়েছিল,বোরাক নামের ডানাওয়ালা ঘোড়া উড়ে উড়ে সাত আসমানে চলে গেছে । সেই ওড়া কল্পনা ভিত্তিক। আজকের আকাশযান বা মহাকাশযান বিজ্ঞান ভিত্তিক।
এ দুটোর পার্থক্য বুঝতে তো ”রকেট বিজ্ঞানী” হতে হয় না, কমনসেন্স থাকলেই হয়। এখন তো দেখছি রকেট বিজ্ঞানী হলেও পার্থক্য বুঝতে অসুবিধে হয়। তাহলে সাধারণ মানুষ তাদের কমনসেন্স নিয়ে মুখ লুকোক”।