গুয়াহাটিঃ উত্তরাখণ্ডে(Uttarakhand) জোশীমঠে (Joshomath) বিপজ্জনক বাড়িগুলি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। কেন্দ্ৰের প্ৰতিনিধি দল সেখানে পৌঁছে গিয়েছে। সেখানে বিল্ডিংয়ে ভাঙন এবং এলাকাগুলি পর্যবেক্ষণ করে প্ৰশাসনের তরফ থেকে মূলত ৩ টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ভাগ বা জোনগুলোর নাম দেওয়া হয়েছে- ‘ডেঞ্জার জোন’ অর্থাৎ বিপজ্জনক(Danger zone), ‘বাফার জোন’ (Buffer zone) বা অপেক্ষাকৃত কম বিপজ্জনক এবং ‘সেফ জোন’ (Safe zone) বা নিরাপদ।
বিপজ্জনক অংশে যে বাড়গুলো রয়েছে সেগুলি লাল কালি দিয়ে দাগানো হয়েছে। সেই বাড়িগুলি আগে ভেঙে ফেলা হবে। এখনও পর্যন্ত জোশীমঠে ভাঙনের ফলে মোট ৬৭৮টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে। এখনও পর্যন্ত ৮১টি পরিবারকে সেখান থেকে নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
শহরটিকে ভূমিধস ও তলিয়ে যাওয়া এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্র আম জনগণের নিরাপত্তার উপর জোর দিয়েছে এবং বিশেষজ্ঞদেরকে সংরক্ষণ ও পুনর্বাসনের (Conservation and rehabilitation) জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা তৈরি করতে বলেছে।
মনোহর বাগ(Manohar Bagh), সিংধর (Singdhar) ও মাড়োয়ারি (Marwari) এলাকাগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও (PM Narendra Modi) উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand CM) মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর ধামিকে ডেকেছেন এবং বাসিন্দাদের নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের জন্য গৃহীত সমস্ত পদক্ষেপ সহ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি Uttarakhandএর মুখ্যমন্ত্রীকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।
উত্তরাখণ্ড স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (USDMA) ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেখানে প্রধানত ভূমি ডুবে যাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে শহরে অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণকে দায়ী করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে অপর্যাপ্ত নিষ্কাশন এবং বর্জ্য জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা সমস্যাটিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। শ্রীনগর গাড়ওয়াল-ভিত্তিক হেমবতী নন্দন বহুগুনা (HNB) গাড়ওয়াল ইউনিভার্সিটির ভূতত্ত্ববিদ ইয়াসপাল সুন্দ্রিয়াল বলেছেন যে যেহেতু কোনও বর্জ্য জলের ব্যবস্থাপনা নেই, তাই বেশিরভাগ বাড়িতে ভিজে থাকা গর্তগুলি মাটিতে আলগা উপাদানগুলিকে ঠেলে দিয়েছে, যার ফলে জমি নীচে তলিয়ে যাচ্ছে।
শুধুমাত্ৰ সোমবারই নতুন করে ৬৮টি বাড়িতে ফাটল দেখা গেছে। প্ৰশাসন সূত্ৰে খবর, যে বাড়িগুলি না ভাঙলেই নয়, ক্ষতিগ্ৰস্ত, সেগুলিই প্ৰথমে ভেঙে ফেলা হবে। জোশীমঠে বর্তমানে প্ৰশাসনের ৯টি দল কাজ করছে। ৩ থেকে ৪ সদস্যবিশিষ্ট এই দলগুলি বাড়ি বাড়ি ঘুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে। চিহ্নিত করছে বিপজ্জনক বাড়িগুলিকে।
জোশীমঠের অবনমনকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ আখ্যা দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে আবেদন করা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। ইতিমধ্যে জোশীমঠকে ‘বিপর্যয়প্ৰবণ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে কোনও ধরনের নির্মাণ কাজ নিষিদ্ধ রয়েছে।