রক্তে রাঙা ১৯ শে মে’ র লগ্ন আজ ! যে লগ্নে আমরা হারিয়েছিলাম ১১ টি তাজা প্রাণ। অসমের বরাক উপত্যকার বাংলা ভাষার আন্দোলন ছিল অসম সরকারের বিরুদ্ধে অসমিয়া ভাষাকে রাজ্যের একমাত্র দাপ্তরিক ভাষা করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ । আন্দোলন সাব্যস্ত করেন লক্ষ লক্ষ বাঙালি । ১৯৬১ সালের ১৯ মে’ ১১ জন, দশ ভাই চম্পা আর এক প্রতিবাদি পারুল বোনকে অসম প্রাদেশিক পুলিশ গুলি করে হত্যা করে।
যে ভাষা শহীদেরা আজো বাঙালির প্রাণ কাঁদায়, তাঁদের মধ্যে –
১- শহীদ কমলা ভট্টাচার্য
২- শহীদ শচীন্দ্র পাল
৩- শহীদ বীরেন্দ্র সূত্রধর
৪- শহীদ কানাইলাল নিয়োগী
৫-শহীদ চণ্ডীচরণ সূত্রধর
৬- শহীদ সত্যেন্দ্র দেব
৭-শহীদ হীতেশ বিশ্বাস
৮-শহীদ কুমুদরঞ্জন দাস
৯-শহীদ তারিণী দেবনাথ
১০-শহীদ সুনীল সরকার
১১-শহীদ সুকুমার পুরকায়স্থ
২০ মে’ শিলচরের জনগণ শহিদদের শবদেহ নিয়ে শোকমিছিল করে প্রতিবাদ সাব্যস্ত করেছিলেন।
শেষ পর্যন্ত অসম সরকার বরাক উপত্যকায় বাধ্য হয়ে বাংলাকে সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করে।
এপার–ওপার বাংলায় অবস্থান থাকলেও বাংলাই আমাদের মুখের ভাষা। বাংলায় আমরা মনের আবেগ প্রকাশ করি। এই ভাষা রক্ষার্থে বাঙালিদের তাজা শরীর থেকে ঝরেছে রক্ত। ৫২’তে ঝরেছে ঢাকার রাজপথে । অন্যদিকে ১৯৬১ সালে অসমের শিলচরে, বরাক উপত্যকায়।
‘জান দেবো তবু জবান দেব না’ বাংলাভাষার দাবিতে কাছাড়ের বাঙালির শ্লোগান ছিল এটি। একাগ্রতা বলেই বাঙালি সহস্র ঝড়– তুফান বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক শাস্তির সম্মুখীন হয়েও বেঁচে আছে মহীরুহের মত শিরদাঁড়া সোজা করে।
প্রখ্যাত কবি শক্তিপদ ব্রহ্মচারী সৃষ্ট ‘উনিশে মে ১৯৬১ শিলচর’ কবিতায় ফুটে উঠেছে এক প্রতিবাদী আগুন !
‘দশটি ভাই চম্পা আর একটি পারুল বোন
কলজে ছিঁড়ে লিখেছিল এই যে ঈশান কোণ
কোন ভাষাতে হাসে কাঁদে কান পেতে তা
শোন ।
শুনলি না ? তো এবার এসে কু–চক্রীদের ছা
তিরিশ লাখের কণ্ঠভেদী আওয়াজ শুনে যা –
বাংলা আমার মাতৃভাষা ঈশান বাংলা মা’।