ঢাকা: বাংলাদেশে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে Rohingya camp বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা Rohingya গোষ্ঠী। দিনের আলো নিভে গেলেই তারা প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘুরছে ক্যাম্পে। ক্যাম্পের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করছে রোহিঙ্গা Rohingya সন্ত্রাসীরা।
প্রত্যাবাসন নিয়ে সোচ্চার মুহিবুল্লাহর রোহিঙ্গাদের Rohingya ওপর প্রভাব বাড়তে থাকায় তিনি খুন হয়েছেন এ অস্ত্রধারীদের হাতেই। সহযোগিতা না করায় ও তাদের বিষয়ে তথ্য দেওয়ায় ব্রাশফায়ারের শিকার হয়ে মাদরাসায় নিহত হয়েছেন ৬ জন।
প্রতিনিয়তই ধর্ষণ, খুন, অপরহণ, নারী পাচার ও মাদক ব্যবসা করছে এইসব Rohingya সন্ত্রাসীরা। দিনের পর দিন অত্যাচার-নির্যাতন চালানো হচ্ছে সাধারণ রোহিঙ্গাদের ওপর।
ভয়ে সাধারণ Rohingyaরা জানাতে পারছেন না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নির্যাতন ও বলপ্রয়োগে বাস্তচ্যুত Rohingya দের মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গারা খুনাখুনিতে লিপ্ত হচ্ছে।
বর্তমানে Rohingya আশ্রয় শিবিরগুলো অস্থির হয়ে উঠছে। জানা গেছে, কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সৈয়দ হোসেন (২৩) নামে এক রোহিঙ্গাকে গলা কেটে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উখিয়ার ক্যাম্প ১৯ এ ঘটনা ঘটে। সৈয়দ হোসেন ক্যাম্প-১৯, ব্লক-এ/১০ এর মৃত জমিল হোসেন ছেলে। ৮ এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার (অপস অ্যান্ড মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ক্যাম্প-১৯, ব্লক-এ/১০ এর একটি দোকানের সামনে পাঁচ থেকে ছয়জনের একটি দুষ্কৃতিকারী দল সৈয়দ হোসেনের ওপর আকস্মিকভাবে হামলা করে।
দুষ্কৃতিকারীরা ধারালো ছুরি দিয়ে তার গলা কেটে ও গুলি করে মারাত্মক জখম করে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তিনি আরও জানান, কতিপয় দুষ্কৃতিকারীরা এর আগে তার বাবা জমিল হোসেনকে খুন করে।
খুনের মামলার আসামিদের গ্রেফতারের জন্য সৈয়দ হোসেন তৎপর ছিলেন। এর জের ধরে আক্রোশে দুষ্কৃতিকারীরা তাকেও খুন করছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ফারুক আহমেদ জানান, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
এছাড়া পুলিশ টহল জোরদারসহ খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। নির্যাতনের মুখে প্রাণভয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়।
এর আগে থেকে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাসহ মোট রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়ায় ১১ লাখের বেশি। পাঁচ বছরে ক্যাম্পে ১ লাখের বেশি শিশু জন্ম নিয়েছে। রোহিঙ্গারা মাদক ব্যবসা, অপহরণ ও ছিনতাইসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে কক্সবাজারের প্রায় আট হাজার একরের বেশি বনভূমি ধ্বংস হয়েছে। পরিবেশেরও বিপর্যয় ঘটেছে। রোহিঙ্গা নেতা হামিদ হোসেন বলেন, দীর্ঘ সময় প্রত্যাবাসন না হওয়ার কারণে অনেক রোহিঙ্গা ভুলতে বসেছে তাদের একটি দেশ আছে।
মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে বলে তার বিশ্বাস হয় না। তিনি বলেন, ক্যাম্পে এখন যে খুনাখুনিসহ বিশৃঙ্খলা ঘটছে, এর পেছনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মদদ রয়েছে। ইয়াবা ব্যবসায়ী রোহিঙ্গারা প্রায় সবাই মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সোর্স হিসাবে কাজ করছে।
রোহিঙ্গা অধ্যুষিত উখিয়া পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শুধু আমার এলাকায় ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বাস। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গারা দল বেঁধে বাড়ি ঘেরাও করে স্থানীয়দের তুলে নিয়ে মারধর করছে।
অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করছে। তাদের কারণে স্থানীয়রা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আগের চেয়ে হাজার গুণ বেশি ইয়াবার বিস্তার ঘটেছে। রোহিঙ্গাদের কারণে শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার পাশাপাশি স্থানীয়রা কর্ম হারিয়ে বেকার হয়ে পড়ছে।
কক্সবাজার পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম জানান, ২০১৭ থেকে ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত ৯৯টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। খুনাখুনি, অপহরণ, ধর্ষণ, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, মানব পাচার, অগ্নিসংযোগসহ ১৪ ধরনের অপরাধের সঙ্গে রোহিঙ্গা জড়িয়ে পড়েছে।
এসব কারণে ১ হাজার ৯০৮টি মামলা হয়েছে। অবশ্য বিভিন্ন সংস্থা ও স্থানীয় তথ্যমতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১২০টির বেশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষক সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের কিছু নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে উসকে দিয়ে ও সহযোগিতা করে ক্যাম্পে খুনাখুনি করাচ্ছে।
কারণ তারা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসী। আবার রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়রা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে এবং মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে।