আগরতলা: অসহায় জনজাতি নাবালককের জন্য সময় নেই প্রশাসনিক প্রতিনিধিদের। তাই পৌঁছায়নি কোন সহযোগিতার হাত অভাবের তারণায় চুরির পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে নাবালক।
তবে কি ধরে নেওয়া যেতে পারে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই? গত ১৭ সেপ্টেম্বর চাল কেনার জন্য টাকার অভাবের তাড়নায় মাত্র ৭০ টাকা চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পরে অমানবিকভাবে প্রচণ্ড প্রহারের শিকার হয়েছিল নাবালক।
এই ঘটনা ত্রিপুরার (tripura) খোয়াই (khowai) জেলার মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের অধীন তুইমধু এলাকায়।এক নাবালক দীর্ঘ কয়েক বছর আগে নিজের বাবা-মাকে হারিয়ে অনাথ হয়ে পড়ে।
কিন্তু বাবা-মাকে হারালেও তার মাথায় হাত রাখার মতো কোন সহৃদয় ব্যক্তি এগিয়ে আসেনি। আর তার ফলেই সে অন্ন-বস্ত্রের জন্য সমাজের সঙ্গে প্রায় প্রত্যেকদিন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে সে।
তার বাড়িতে প্রায় ৯০ বছরে বৃদ্ধা ঠাকুরমা রয়েছেন, তিনি বার্ধক্য জনিত রোগে কর্ম ক্ষমতা হারিয়ে একপ্রকার গৃহবন্দী। চোখেও দেখতে পান না ভাল করে। এর উপর আবার পরিবারের পরিত্যক্তা তার পিসির বিকলাঙ্গ শিশু কন্যা সন্তানের ভরণ পোষনের দ্বায়িত্ব তার উপর।
নাবালককেই সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। বিগত কিছুদিন ধরে কোন কাজের সন্ধান না পাওয়াতে একপ্রকার বাধ্য হয়ে খিদের জ্বালায় তেলিয়ামুড়া (tripura, teliamura) নেতাজি নগর এলাকা থেকে ৭০ টাকা চুরি করতে বাধ্য হয়েছে বলে জানায় সে, তাও আবার এক কিলো চাল কেনার জন্য।
বাধ্য হয়ে এক দোকান থেকে ৭০ টাকা চুরি করার সময় হাতেনাতে এলাকাবাসীরা ধরে। পরবর্তীতে হাত বেঁধে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে দীর্ঘক্ষন অত্যাচার করে ওই একাংশ এলাকাবাসীরা।
পরবর্তীতে ঘটনার খবর পাঠানো হয় তেলিয়ামুড়া (teliamura) থানায়, থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই নাবালককে হাতে দড়ি বাঁধা অবস্থায় থানায় নিয়ে আসে। দীর্ঘক্ষণ তার হাতে দড়ি বাঁধা অবস্থায় থাকার ফলে হাতের রক্ত সঞ্চালন একপ্রকার বন্ধ হয়ে যায়।
পরবর্তীতে তেলিয়ামুড়া (teliamura) থানার পুলিশ ওই নাবালককে তেলিয়ামুড়া (teliamura) মহকুমা হাসপাতালে এনে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে তেলিয়ামুড়া (teliamura) থানায় নিয়ে আসে। যদিও তার বিরুদ্ধে কোন মামলা করা হয়নি।
কিন্তু সহযোগিতার হাতও বাড়িয়ে দেয়নি তথাকথিত সমাজ সেবক মহলও। তুইমধু এলাকার তার বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, তার কঠিন জীবনের কথা শুনে রাজধানী আগরতলা (agartala) থেকে কয়েকজন যুবক তার পরিবারের হাতে ৬০ কেজি চাল দিয়ে আসে।
কিন্তু প্রশাসনিকভাবে কোনও সাহায্য এখনো পৌঁছায়নি এই পরিবারের হাতে। তবে জানা যায়, রেশন থেকে সামগ্রী এবং বয়স্ক ভাতাই একমাত্র রোজগারের মাধ্যম। কিন্তু বৃদ্ধা ঠাকুমা ও পিসির দিবাঙ্গ শিশু কন্যা সন্তানের চিকিৎসা যে এই সামান্য রোজগারের মাধ্যমে কোন প্রকারে সামলাতে পারছেনা নাবালক ।