বাংলাদেশের রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ ও কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা বিস্তার লাভ করতে পারে।
তবে আগামী রবিবার থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। শুক্রবার আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, রাত ও দিনের তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসায় ঢাকায় একটু বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। তবে ঢাকায় শৈত্য প্রবাহের কোন প্রভাব নেই। মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে ঢাকার বাইরে। আজ চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
এবার শীত যেন পঞ্জিকা ধরেই নেমে আসছে।
তবে পৌষের শুরুতেই যে শীত জেঁকে বসবে, সেই পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অফিস। শীতের তীব্রতা বাড়ায় জনজীবনে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া গরিব মানুষের দুর্ভোগ-দুর্দশা বেড়ে গেছে। ঠাণ্ডাজনিত ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর-সর্দি-কাশি ইত্যাদি রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের দুর্ভোগ বেশি বেড়েছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের ভর্তির হার বেড়েছে।
শীতের সঙ্গে আছে হিমালয় থেকে আসা ঠাণ্ডা বায়ুর প্রবাহ। আছে ঘন কুয়াশাও। কুয়াশার প্রকোপ বাড়ায় বিভিন্ন স্থানে সূর্য দেখা যায়নি। ঢাকা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইলসহ আশপাশ এলাকায় বৃহস্পতিবার সারা দিন সূর্যের মুখ দেখা যায়নি।
বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইতে শুরু হয়। সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ে। আর ভোর থেকে চারপাশ ঘন কুয়াশায় ঢেকে যায়। ঘন কুয়াশায় আলোর স্বল্পতা সৃষ্টি হওয়ায় সারা দেশে নৌপথ ও সড়কপথে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চালানো হচ্ছে। রাস্তাঘাট ও হাটবাজারে মানুষের চলাচল কমে গেছে।
হঠাৎ শীতের কারণে ঢাকাসহ সারা দেশে গরম কাপড়ের বিক্রি বেড়েছে। এদিকে পর্যাপ্ত গরম কাপড় না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেক দরিদ্র মানুষ। আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার শীতের তীব্রতা বেড়েছে। একদিনে তাপমাত্রার রেকর্ড নিম্নমুখী প্রায় তিন ডিগ্রি।
বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা, যশোর, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে। শীতের এ তীব্রতা শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রাজেশ মজুমদার বলেন, শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ে। সাধারণত শিশুরা এতে বেশি আক্রান্ত হয়। তাই শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে।
বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ছয় মাসের কম বয়সী শিশুদের মায়ের বুকের দুধ ছাড়া অন্যকিছু খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
তাদের প্রতিদিন গোসল করানোরও দরকার নেই। শিশুদের মাথায় তেল দেয়া যাবে না। শরীরে অলিভ অয়েল মাখা ভালো। সব সময় গরম কাপড় পরাতে হবে। ঠাণ্ডা লাগলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বয়স্কদের ক্ষেত্রেও একই ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।