বুধবার সকালে প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে অনুমোদন দিয়ে দিল মন্ত্রীসভা। আগামি সপ্তাহেই এই বিল সংসদে উঠবে।
মঙ্গলবার রাজনাথ সিং জানিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এই বিলকে। জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ তকমা প্রত্যাহার সংক্রান্ত ৩৭০ ধারা বিলোপের মতোই সমান গুরুত্বপূর্ণ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল।
এদিন সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ মন্ত্রীসভার বৈঠক বসে।
সভার বৈঠকে খসড়া পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
নাগরিকত্ব সংশোধন বিল সংক্ষেপে ক্যাব ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদে উঠতে পারে ৪ ডিসেম্বর, এমনই জোর কথা ছিল।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান প্রভৃতি মুসলিম প্রধান দেশ থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে আসা অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য এই আইনটি সংশোধন করার প্রস্তাব করেছে সরকার।
হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, জৈন, পারসি ও শিখ শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পূর্বেই খুঁজে খুঁজে তাড়ানো হবে দেশের অনুপ্রবেশকারীদের। প্রত্যেক অনুপ্রবেশকারীকে বহিষ্কার করা হবে।
এতে জড়িত রয়েছে রাজনৈতিক দিক। কোন সন্দেহ নেই।
গত ৩১ শে আগস্ট চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি তালিকা প্রকাশিত হলে দেখা গেছে অসমের জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) সম্পূর্ণ খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৮ জনের নাম।
তালিকা থেকে বাদ গেছে অসংখ্য হিন্দুর নাম।
এমন পরিস্থিতিতে ভোট ব্যাংকে টান পড়ার আশংকায় ভুগছেন অসমের মন্ত্রীমহোদয়রা। এদিকে পশ্চিমবঙ্গেও বিধানসভা উপনির্বাচনে মোট ৩ টি আসনে গো হারা হেরেছে বিজেপি। অবিশ্বাস্যভাবে তৃণমূলের এই জয়ের কারণ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি টার্গেট করেন এনআরসি’কে।
তিনি বারবার জানাচ্ছেন, এই বেআইনী এনআরসি অসমসহ কোন রাজ্য মেনে নেবে না।
তৃণমূল সুপ্রিমোর পাশাপাশি খোদ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যে এনআরসি হলে তিনি স্বয়ং তাঁর মুখ্যমন্ত্রীত্বের পদ হারিয়ে ফেলবেন। কারণ তিনি জানালেন,
“আমার আত্মীয়, আমার বাবা বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন। তিনি তার নাগরিকত্ব কার্ড পেয়েছেন… তার পর, আমি ত্রিপুরায় জন্মগ্রহণ করি। সুতরাং, এনআরসির জন্যে যদি কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হয় তবে আমি প্রথমে আমার মুখ্যমন্ত্রী পদ হারাব। আমি কি এতই বোকা যে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারটি হারাতে আমি রাজ্যে এনআরসি বাস্তবায়ন করব?”
কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ঘনিষ্ঠরা জানাচ্ছেন, মাত্র তো সিনেমার অর্ধেক হয়েছে। বিরতির পর বাকি কাহিনি জানতে পারবে তৃণমূল। নাগরিকত্ব সংশোধন বিল সংসদে পাশ হলেই অসম হোক বা বাংলা—সব বিভ্রান্তি কেটে যাবে।