আজ, ২৪ শে নভেম্বর। মাটি ও মানুষের শিল্পী, সুরের জাদুকর, প্রখ্যাত বংশী বাদক ফোক সম্রাট বারী সিদ্দিকীর চলে যাওয়ার দিন। ২০১৭ সালের এই দিনে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি। মাটির গানের এই কিংবদন্তী গায়কী দিয়ে শ্রোতাদের নিকট পরিচিতি অর্জন করলেও তিনি মূলত একজন বাঁশীবাদক ছিলেন। গান করার আগে তিনি পেশাদার বাঁশীবাদক ছিলেন।
দেশে বিদেশে বাঁশি বাজিয়েছেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, পেয়েছেন সম্মাননা। তার বাঁশির সুরে মুগ্ধ হয়েছে দেশ-বিদেশের কত মানুষ! বারী সিদ্দিকী যখন পেশাদার বাঁশি বাদক তখন কাজের মাধ্যমে পরিচয় হয় কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সাথে। হুমায়ূন আহমেদের নাটকে, চলচ্চিত্রে বাঁশি বাজাতেন তিনি।
কিন্তু কথায় আছে না, ‘রতনে রতন চিনে’! কাজের অবসরে আপন মনে গান গাইতে থাকা বারী সিদ্দিকীকে দেখে হুমায়ূন আহমেদ ঠিকই বুঝেছিলেন, বারী সিদ্দিকীকে শুধু বাঁশির সুরে শ্রোতাদের মুগ্ধ করার দায়িত্ব পালন করতেই বিধাতা পাঠাননি, আরও একটি দায়িত্ব রয়েছে তার। আর তা হলো, কন্ঠের মায়াজালে শ্রোতাদের বন্দী করার দায়িত্বটিও বারিকে দিয়েছেন বিধাতা। আর সে দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ করার দায়িত্ব যেন বিধাতা হুমায়ুন আহমেদকেই দিয়েছিলেন।
হুমায়ূন আহমেদের জোরাজোরিতেই বারী সিদ্দিকী গান গাইতে শুরু করেন।এরপর হুমায়ুন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক করে তিনি কন্ঠশিল্পী হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।এরপরের ইতিহাস সবার জানা। সোঁয়া চান পাখি, পূবালী বাতাসে, মানুষ ধর মানুষ ভজ, আমি একটা জিন্দা লাশ এরকম অস্যাংখ গানে তিনি কন্ঠ দিয়েছেন।
১৯৬৪ সালের ১৫ নভেম্বর নেত্রকোনার এক সভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন।২০১৭ সালের ১৭ নভেম্বর রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাঁকে ঢাকায় স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বাদকের শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাঁকে যেখানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। ২৪ নভেম্বর তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।