সূচ ফোটাতে ভয় না পেয়েছেন এমন মানুষ সংখ্যায় খুব কম।
তবে এবার আর কোন ভয় নেই। একটি সাধারণ মশার কামড় তো আমরা টেরই পাই না। একইভাবে এই সূচও শরীরে প্রবেশ করানোর সময় আপনি টের পাবেন না।
আশ্চর্যজনক মনে হলেও, মশার কাছ থেকেই প্রেরণা লাভ করে যন্ত্রণাহীন ইঞ্জেকশন সৃষ্টির কাজে অনেকটা পথ এগিয়ে গেছেন বেশ কয়েকজন বাঙালি বিজ্ঞানি।
যেমন, কানপুর আইআইটি-র কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক অনিমাংশু ঘটক ও খড়গপুর আইআইটি-র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক সুমন চক্রবর্তী।
আনন্দবাজার সূত্রে খবর, অধ্যাপক সুমন মশার থেকে প্রেরণা নিয়ে এই কাজ শুরু করেছিলেন জাপানে কানাগাওয়ার তোকাই বিশ্ববিদ্যালের অধ্যাপক কাজুওশি সুচিয়া-র সঙ্গে।
বর্তমানে সুমনবাবু নিষ্ঠার সঙ্গে খড়গপুর আইআইটি-তে যন্ত্রণাহীন সূচ তৈরির গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বাঙালি বিখ্যাত গবেষক অনিমাংশুর গবেষণার অভিনবত্ব কোথায়? কিংবা তিনি কিভাবে এই সূচ প্রয়োগ করবেন? দেখে নিনঃ
মশা যখন হুল ফোটায় তা আমাদের বুঝতে না পারার কারণকেই তিনি মূলত কাজে লাগাতে চাইছেন। অর্থাৎ, মশার হুল খুব সরু এবং একইসাথে মশা শরীরে সোজা না ঢুকিয়ে কাঁপাতে কাঁপাতে হুলটিকে আমাদের শরীরে প্রবেশ করাতে থাকে।
ঠিক এই প্রক্রিয়াকে কাজে লাগিয়ে গবেষক অনিমাংশু বাজারে পাওয়া যায় এমন কিছু ইঞ্জেকশনের নিডলের সঙ্গে এমন একটি ‘সিস্টেম’ বা ব্যবস্থা যোগ করতে চাইছেন যাতে সেই সূচটি কাঁপতে কাঁপতে শরীরে ঢুকতে পারে।
এই প্রক্রিয়ায় ইঞ্জেকশন শরীরে প্রবেশ করালে বর্তমানে যন্ত্রণাদায়ক সূচের চেয়ে বহু কম পরিমাণে বল প্রয়োগ করলেই হয়ে যাবে। আর যন্ত্রণাও কম হবে।
মশা যখন একই সঙ্গে ছ’টি হুল ফোটায় তখন একটি হুল ফোটাতে যে বল লাগে, তার মাত্র ২.৪৪৯ গুণ বলের প্রয়োজন হয়। যার অর্থ, ছ’টি হুল মশা একসঙ্গে ফোটালেও তা তিনটি হুল ফোটানোর থেকেও কম বল প্রয়োগ করেই সম্ভব হচ্ছে।