“বহু দিন ধ’রে বহু ক্রোশ দূরে
বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে
দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা,
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শিষের উপরে
একটি শিশিরবিন্দু।”
শুনতে খুব মন্দ লাগলেও এটিই হয়েছে বাংলাদেশের সোনাজয়ী আর্চার রোমান সানার ক্ষেত্রে। এশিয়া কাপ র্যাঙ্কিং টুর্নামেন্টে ব্যক্তিগত রিকার্ভ ইভেন্টে বাংলাদেশকে সোনা এনে দিয়েছেন রোমান সানা।
এত বড় সাফল্য দেশকে এনে দেওয়ার পরও দেশের মানুষের পক্ষ থেকে কোন শুভেচ্ছা পাননি বলে খুবই দুঃখ পেয়েছেন সানা।
ফিলিপাইন্সের ক্লার্ক সিটিতে অনুষ্ঠিত এই লড়াইয়ে রোমানের প্রতিপক্ষ ছিলেন চীনা শি ঝেনকি। শি-কে ৭-৩ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছেন সানা।
ব্যক্তিগত ইভেন্টে সোনা জয়ের পর একইদিনে দলগত ইভেন্টেও রোমানের নেতৃত্বেই রুপা জয় করেছে বাংলাদেশ।
প্রথম আলোকে সরাসরি সে বুক ভাঙা কষ্টের কথা স্বীকার করেছেন তিনি। জানিয়েছেন দেশের মানুষ ফুটবল কিংবা ক্রিকেট ছাড়া অন্যান্য খেলাকে কখনো মর্যাদা দেয়না।
রোমান বলেন ‘আমার বাংলাদেশে আমার তো কোনো দামই নেই। কতগুলো দেশের কতজন খেলোয়াড়কে পেছনে ফেলে একটি পুরস্কার জিততে হয়, তা আমাদের দেশের মানুষ বোঝে না। তাঁরা শুধু বোঝে ক্রিকেট। ফুটবল নিয়েও অনেকের আগ্রহ আছে। কিন্তু আমাদের মতো ছোট খেলার খেলোয়াড়দের মূল্য কারও কাছে নেই।’
আসলে বিশ্বকবির কথাই বোধহয় বাঙালিদের ক্ষেত্রে সত্যি। তারা সিন্ধু দর্শনে যায়, কিন্তু ঘরের বাইরে দু পা ফেলে ধানের শিষের উপরে লেগে থাকা সেই অপূর্ব সুন্দর শিশিরবিন্দুটি কখনোই নজর করে না। এভাবেই দেশের মানব সম্পদ যুগ যুগ ধরে অবহেলিত থেকে যায়।