বাংলাদেশ নেশার ঘাঁটি হয়ে উঠেছে। যুব প্রজন্ম তীব্রভাবে আসক্ত হয়ে পড়ছে ড্রাগস, ইয়াবায়। নেশা যখন চাগাড় দিয়ে ওঠে তখন সে হয়ে ওঠে দানব। ভুলে যায় মা-বাবা-স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে!
রবিবার বগুড়ার ধুনট উপজেলায় এমনি নৃশংস হত্যাকণ্ড সংঘটিত হয়। নেশা করার টাকা না পেয়ে মাকে খুন করল আরেক পরশুরাম। নাম সোহানুর রহমান খোকন (২৯)।
পুত্রের হাতে হত্যার শিকার হওয়া সেই অভাগিনী মায়ের নাম খুকি বেগম (৬৫) ।
রবিবার সন্ধ্যা ৭ টায় নেশাখোর পুত্র মায়ের কাছ থেকে টাকা চেয়েও পায় না। ফলে হাত-পা বেঁধে শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় সে।
নিহত খুকি এবং আব্দুস ছামাদের ২ পুত্র, ৩ কন্যা। মাতৃহত্যাকারী খোকন ছিল ৫ ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট।
২০১৮ সালে মাদকদ্রব্য সেবনের দায়ে গ্রেপ্তারও হয় খোকন। কিন্তু জেল থেকে ছাড়া পেয়েই আরো মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এমনকি মা-বাবাকে ভয় দেখিয়ে টাকা হাতানোর জন্যে নিজের সঙ্গে রাখত বিভিন্ন দেশি অস্ত্র। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য আইনে দুটো মামলা রয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন খুনি খোকনের নেশা দ্রব্য বাবদ মা-বাবার থেকে চাহিদা ছিল ২-৫ হাজার টাকা! না দিলেই মা-বাবার ওপর অক্তহ্য নির্যাতন চালাত সে। এতদিন তাই করে আসছিল।
রবিবারও মায়ের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা দাবি করে কু-পুত্র। মা এই মোটা অংকের টাকা দিতে অপারগ হওয়ায় মাকে পুড়িয়ে মেরে ফেলল ছেলে!
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, নেশার টাকা না পেয়ে মাকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে সোহানুর রহমান খোকন। নিহত খুকি বেগমের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সোমবার সকালে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি অব্যাহত।
বলা বাহুল্য, র্যাবের জালে প্রায়ই ধরা পড়ছে নেশাকারবারিরা। তবে কেন এখনো দেশে এমন জঘন্য হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়ে চলেছে।
স্থানীয় জনগণের আর্জি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি, “কঠোর আইনি ব্যবস্থা চালু করে বন্ধ করুন এসব দুষ্কার্য। নতুবা সমাজ, দেশ অন্ধকারে তলিয়ে যাবে। সমাজের চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই বিষবাষ্প।”