পৃথিবীর হকি খেলোয়াড়দের সর্বকালের সেরাদের একজন, যাঁর স্পর্শে হকিস্টিক হয়ে যেত জাদুকরের লাঠি, মাঠে মাঠে এদিক-ওদিক ছুটে যেত সেই জাদুকাঠি। সেই হকি জাদুকর ধ্যানচাঁদের ১১৫তম জন্মদিন পালন করা হচ্ছে আজ সারা দেশে।
ধ্যান চাঁদ ১৯০৫ সালের ২৯ আগস্ট ভারতের এলাহাবাদে জন্মগ্রহণ করেন, তাঁর বাবা সোমেস্বর দত্তও ছিলেন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর হকি খেলোয়াড়। জাদুশিল্পী ধ্যানচাঁদের জন্মদিনে সারা দেশে পালন করা হয় রাষ্ট্রীয় ক্রীড়া দিবস।
পশ্চিমবঙ্গসহ ত্রিপুরা, বরাক উপত্যকা এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অসমে জাকজমকভাবে পালন করা হচ্ছে জাতীয় ক্রীড়া দিবস। খেলাধুলার সঙ্গে বরাবরই বাংলার আত্মিক যোগ।
আজ ক্রীড়া ক্ষেত্রে কৃতিত্ব প্রদর্শন করা খেলোয়াড়দের রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সর্বোচ্চ ক্রীড়া সম্মান অর্জুন পুরস্কার, দ্রোণাচার্য, রাজীব গান্ধী এবং ধ্যানচাঁদ পুরস্কার প্রদান করবেন।
ফুটবলে মারাদোনা, ক্রিকেটে শচীন তেণ্ডুলকার, বেডমিন্টনে সাইনা নেহওয়াল তেমনি হকিতে ধ্যানচাঁদ।
আমস্টারডাম অলিম্পিকে ১৪টি গোল করে ভারতকে সোনা এনে দেন ধ্যানচাঁদ৷ অলিম্পিকে সেটাই ছিল ভারতের প্রথম স্বর্ণপদক৷
১৯৫৬ সালে ‘পদ্মভূষণ’ পুরস্কারপ্রাপ্ত ধ্যানচাঁদকে নিয়ে বেশ মজার কিছু ঘটনা রয়েছে। একবার হলেণ্ডে অনুষ্ঠিত একটি ম্যাচে তাঁর হকি স্টিকে চুম্বক লাগিয়ে রাখার অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছিল। এই সন্দেহে তাঁর হকি স্টিকটি ভেঙে ফেলারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল!
আসলে ক্ষণজন্মা একেই বলে! তাঁরা যে কাজই করেন, তা সে যত কঠিন কাজই হোক না কেন, লোহার সঙ্গে চুম্বক যেমন লেগে থাকে, তেমন ভাবেই অধ্যাবসায়সহকারে তাঁরাও কাজের সঙ্গে লেগে থাকেন।
একদিকে প্রতিভা, অপরদিকে পরিশ্রম, ধৈর্য তাঁদের পৌঁছে দেয় তাঁদের ধ্যানের চাঁদে।
প্রসঙ্গত, ধ্যানচাঁদের নাম নিয়েই রয়েছে বেশ একটি মজার ঘটনা।
ধ্যানচাঁদের নাম কিন্তু আদৌ ধ্যানচাঁদ নয়। আসলে তাঁর নাম ধ্যান সিং। কিন্তু তিনি এতটাই নিজের খেলাটার জন্য সাধনা করতেন যে, চাঁদের আলোয় রাতের বেলায়ও তিনি সমানে প্র্যাকটিস করে যেতেন। সেইজন্যই চাঁদ মিলিয়ে তাঁর সতীর্থরা ধ্যানের সঙ্গে চাঁদ জুড়ে দেন। আর ধ্যানচাঁদ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন ধ্যানচাঁদ নামেই!